× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ধর্ষণের বিরুদ্ধে ওদের আন্দোলন

এক্সক্লুসিভ

রাশিম মোল্লা
২৪ জানুয়ারি ২০১৯, বৃহস্পতিবার

রাজধানীর প্রেস ক্লাবে এমন দৃশ্য সচরাচর দেখা মিলে না। প্রতিদিন বিভিন্ন সংগঠন ও রাজনৈতিক দলের শত শত লোকের উপস্থিতিতে মানববন্ধন  মুখরিত হয়ে ওঠে প্রেস ক্লাব। কিন্তু মঙ্গলবার দেখা গেল ভিন্ন একটি দৃশ্য। তিন কিশোর ও এক শিশু মিলে চারজনের মানববন্ধন। তারা হলেন- মানববন্ধনের মূল উদ্যোক্তা টঙ্গী কলেজ গেটে অবস্থিত শফি উদ্দিন সরকার একাডেমী অ্যান্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র মশিউর রহমান, মোহাম্মদপুর গভ: কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র সাইদুর রহমান সিয়াম, মাইলস্টোন কলেজের ছাত্র ও বিশ্ববিদ্যাোলয় ভর্তিচ্ছু নাহিদ ভূইয়া ও ছোট শিশু সহী সিদ্দিকী। এদের মধ্যে তিনজনের হাতে আর্ট কাগজে লেখা প্ল্যাকার্ড। তবে মাঝখানে দাঁড়ানো শিশুটির হাতেও রয়েছে একটি দাবি সংবলিত প্ল্যাকার্ড। ফলে সবার নজর সহী সিদ্দিকীর দিকে।
বয়স মাত্র পাঁচ বছর। সে এই মানববন্ধনে যুক্ত হয়েছেন ভাই সিয়ামের সঙ্গে। এখনো স্কুলে ভর্তি হয় নি সহী। সহীর প্ল্যাকার্ডে লেখা ছিল ‘প্রত্যেক ধর্ষকের একমাত্র সাজা মৃত্যুদণ্ড চাই, ধর্ষণ মামলায় অভিযুক্তকে জামিন দেয়া যাবে না।’  

কথা হয় ব্যতিক্রমী এই মানববন্ধনের নেতৃত্বদানকারী মশিউর রহমানের সঙ্গে। তিনি মায়ের প্রেরণায় দেশবাসীর মধ্যে সচেতনতা বাড়ানোর জন্য ধর্ষণের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছেন। গত শনিবার সকাল ১১টায় উত্তরা হাউজ বিল্ডিংয়ের সামনে থেকে শুরু হয় তার এ আন্দোলন। সেখানে তিনি দুপুর ১টা পর্যন্ত অবস্থান করেন। অনেকেই তার এ মহৎ কাজের জন্য সাধুবাদ জানান। অনেকে আবার ফেসবুকে ছবি তুলে পোস্ট করেন। সেই পোস্ট দেখে সাইদুর রহমান সিয়াম ও নাহিদ ভূইয়া তার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার কথা জানান। যেই কথা সেই কাজ। আজ সোমবার চারজনে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সমবেত হয় ওই একই দাবিতে।

মানববন্ধনে মশিউর রহমান বলেন, চলতি মাসে ২২টি ধর্ষণের ঘটনা ঘটেছে। এখনই এর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিবাদ গড়ে তুলতে না পাড়লে সমাজে বিশৃঙ্খলা দেখা দেবে। একটি সভ্য সমাজে এভাবে ধর্ষণের সংখ্যা বাড়তে থাকলে কেউ আর ঘরের বাইরে বের হতে পারবে না। তাই আমি একাই শুরু করলাম। মনে পড়ে যায়, রবী ঠাকুরের বিখ্যাত কবিতা, ‘যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে,  তবে একলা চলো রে। একলা চলো, একলা চলো, একলা চলো রে। যদি কেউ কথা না কয়, ওরে ওরে ও অভাগা, যদি সবাই থাকে মুখ ফিরায়ে সবাই করে ভয়্ততবে পরান খুলে, ও তুই মুখ ফুটে তোর মনের কথা একলা বলো রে।’

সাইদুর রহমান সিয়ামের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, দেশের নাগরিক হিসেবে দায়িত্ব পালনের জন্য ও বন্ধুকে অনুপ্রেরণা দেয়ার জন্য তিনিও এই আন্দোলনে সমবেত হয়।

 তিনি বলেন, পত্রিকার পাতা উল্টালেই দেখা যায় ধর্ষণের সংবাদ। প্রতিদিন এই সংবাদ শুনতে ভালো লাগে না। আত্মীয় স্বজনের মধ্যে বিরাজ করছে আতঙ্ক। এরই মধ্যে ফেসবুকে দেখতে পাই বন্ধু মশিউরের আন্দোলন। তাই আমিও এই আন্দোলনে যুক্ত হয়ে যাই।

আন্দোলনকারীদের দাবি, মা-বোনদের নিরাপত্তার জন্য এর বিরুদ্ধে সামাজিক আন্দোলন গড়ে তুলতে হবে। ধর্ষণের মতো এ ন্যক্কারজনক ঘটনা যাতে আর না ঘটে সেজন্য পুলিশকে আরো তৎপর হওয়ার আহ্বান জানান। সেই সঙ্গে বিচার বিভাগের প্রতি সুদৃষ্টি কামনা করে অপরাধীরা যাতে আইনের মার প্যাঁচে জামিন না নিতে পারে। অতিদ্রুত বিচার সম্পন্ন করে মৃত্যুদণ্ডের দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে পারলেই অনেকাংশে হ্রাস পাবে ধর্ষণের মতো গর্হিত কাজ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর