ডাকসু নির্বাচনে অংশ নেবেন কোটা সংস্কার আন্দোলনের নেতারা। দীর্ঘ ২৮ বছর পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। আর এ নির্বাচন নিয়ে কোটা সংস্কার আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসান আল মামুন বলেন, ডাকসু নির্বাচনে যাওয়ার মূল উদ্দেশ্য হচ্ছে সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকা। অর্থাৎ সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়া এবং তাদের অধিকার নিয়েই কিন্তু আমাদের সংগঠনটি দাঁড়িয়েছে।
কাজেই সাধারণ শিক্ষার্থীদের পাশে থাকতে এবং তাদের যেকোনো সমস্যা সমাধান ও অধিকার আদায়ের লক্ষ্যেই আমাদের ডাকসু নির্বাচনে অংশগ্রহণ। আমাদের যে সংগঠন আছে বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদ এই সংগঠনের ব্যানারে আমরা প্যানেল দেবো। হল সংসদ বা কেন্দ্রীয় সংসদে আমরা কি করবো এ বিষয়ে এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। পরবর্তীতে এ বিষয়ে আমরা সিদ্ধান্ত নেবো।
তবে আমরা হল সংসদ এবং কেন্দ্রীয় সংসদ দুটোতেই প্রার্থী দেবো। এখন আমরা আন্তঃযোগাযোগ চালিয়ে যাচ্ছি।
যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নুর বলেন, ডাকসু নির্বাচনে আমাদের পক্ষ থেকে কারা অংশ নেবে এ বিষয়টি এখনো সুনির্দিষ্ট করা হয়নি। যেহেতু কোটা সংস্কার আন্দোলনে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের দাবি দাওয়ার স্বার্থ জড়িত ছিল। যেহেতু ডাকসু সাধারণ ছাত্রদের প্রতিনিধি তাই ছাত্ররাও চায় যে আমরা ডাকসুতে অংশগ্রহণ করে তাদের প্রতিনিধি হয়ে তাদের জন্য কাজ করি। আমরা বরাবরই বলেছি সাধারণ শিক্ষার্থীদের স্বার্থ রক্ষায় আমরা কাজ করবো। তাদের চাওয়ার প্রাধান্য দিয়ে আমরা নির্বাচনে অংশ নেবো। বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের সঙ্গে মিটিং এ প্রশাসনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ক্যাম্পাসে সহাবস্থান নিশ্চিত করা হবে।
সকল ক্রিয়াশীল ছাত্র সংগঠন যাতে স্বাধীনভাবে তাদের কর্মসূচি পালন করতে পারে, চলাফেরা করতে পারে এবং মিছিল মিটিং করতে পারে প্রশাসনকে সেই পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে। এতোদিন হলে হলে যে ভোট হতো সেটা নিয়ে এখন অনেকেই দ্বিমত পোষণ করছে। হল-এর ছাত্ররা বলছে ছাত্রলীগ এখন ক্ষমতায়। সুতরাং সেখানে সুষ্ঠু পরিবেশে ভোট হওয়ার সম্ভাবনা নেই। তাই একমাত্র ছাত্রলীগ বাদে সকল ছাত্র সংগঠনের দাবি ‘ভোটকেন্দ্র যেন হল-এর বাইরে করা হয়’। আমরাও এ বিষয়ে প্রশাসনের কাছে দাবি জানাই যে হল-এর বাইরে যেন কেন্দ্র করা হয়। সর্বোপরি প্রশাসন যদি নিরাপদ ক্যাম্পাস, সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করে এবং ভোট সুষ্ঠু হওয়ার নিশ্চয়তা আমাদের দেয় এবং তারা যদি কাজেও সেগুলোর প্রতিফলন ঘটায় তাহলে আমরা নির্বাচনে অংশ নেবো।
কোটা আন্দোলনের নেতা মুহাম্মদ রাশেদ খান বলেন, যেহেতু আমরা এখন পর্যন্ত কোনো রাজনৈতিক দল নই তাই স্বতন্ত্রভাবে আমাদের সংগঠনের ব্যানারে প্রার্থী দেয়ার চেষ্টা করবো। সাধারণ ছাত্র-ছাত্রীদের চাওয়া পাওয়া থেকে আমরা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ইতিমধ্যে আমরা কোটা সংস্কার আন্দোলনের মতো একটি বৃহত্তর আন্দোলনের নেতৃত্ব দিয়েছি। এবং সেখানে আমরা সফল হয়েছি। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন ফাঁসের বিরুদ্ধে আন্দোলনে আমরা সফল হয়েছি। এবার সারা দেশে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আমরা প্রায় ২৫ জন শিক্ষার্থীকে ভর্তিতে সহায়তা করেছি। এবং সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রক্তদানসহ বিভিন্ন সমাজসেবামূলক কর্মকাণ্ডসহ ছাত্র-ছাত্রীদের চাওয়া-পাওয়া পূরণ করে যাচ্ছি। সর্বোপরি সকল সমস্যায় আমরা সাধারণ ছাত্রদের পাশে থাকবো।