× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অবশেষে সক্রিয় রাজনীতিতে নেমে কতদূর কী করতে পারবেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী?

বিশ্বজমিন


(৫ বছর আগে) জানুয়ারি ২৪, ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ১০:০৪ পূর্বাহ্ন

সব জল্পনার অবসান ঘটিয়ে ভারতে সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধীর নাতনি প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ওয়াধরা অবশেষে সক্রিয় রাজনীতিতে যোগ দিয়েছেন।

ভারতে আসন্ন সাধারণ নির্বাচনের মাত্র মাসতিনেক আগে এদিন প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে উত্তরপ্রদেশ রাজ্যে কংগ্রেসের অন্যতম সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে।

তার ভাই ও বর্তমানে দলের সভাপতি রাহুল গান্ধী জানিয়েছেন একটা দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েই প্রিয়াঙ্কাকে এই দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।

ক্যারিশমাটিক প্রিয়াঙ্কা যাতে কংগ্রেসের হাল ধরেন তার জন্য গত প্রায় দুদশক ধরেই ধরেই দলের নেতা-কর্মীরা দাবি জানিয়ে আসছিলেন। কিন্তু এত দেরিতে রাজনীতিতে প্রবেশ করে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী ভারতের রাজনীতিতে আদৌ কতটা প্রভাব ফেলতে পারবেন?

আসলে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী গত প্রায় কুড়ি বছর ধরে রাজনীতিতে নিজেকে সীমাবদ্ধ রেখেছেন মা সোনিয়া গান্ধী ও ভাই রাহুল গান্ধীর হয়ে যথাক্রমে রায়বেরিলি ও আমেথি আসনে প্রচারের কাজেই।

পাঁচ বছর আগে উত্তরপ্রদেশে এমনই একটি নির্বাচনী সভায় দেখেছিলাম কোনও নেতা-মন্ত্রী না-হওয়া সত্ত্বেও আমজনতার কাছে তার আকর্ষণ কতটা অপ্রতিরোধ্য - কীভাবে মানুষ তাকে 'দ্বিতীয় ইন্দিরা গান্ধী' হিসেবে দেখেন।

তবে কংগ্রেসের চরম দুর্দিনে যখন প্রিয়াঙ্কাকে দলের দায়িত্ব দেওয়ার প্রস্তাব উঠেছে, যে কোনও কারণেই হোক তা বাস্তবায়িত হয়নি। অথচ আজ দেশে সাধারণ নির্বাচনের যখন একশো দিনও বাকি নেই, গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য উত্তরপ্রদেশের পূর্বাঞ্চলে - যেটা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও যোগী আদিত্যনাথের গড় বলে পরিচিত - সেই তাকেই দলের দায়িত্বে নিয়ে এলেন তার বড় ভাই রাহুল গান্ধী।

রাহুল গান্ধী এদিন আমেথিতে জানিয়েছেন, "কংগ্রেস আক্রমণাত্মক রাজনীতি করবে বলেই একটা নির্দিষ্ট দায়িত্ব দিয়ে প্রিয়াঙ্কা গান্ধী বা জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়ার মতো তরুণ নেতাদের সামনে নিয়ে আসা হয়েছে।"

তারা যে "মাত্র দুমাসের জন্য আসেননি, বরং লম্বা সময়ের জন্য মিশন নিয়ে নেমেছেন" - সেটাও স্পষ্ট করে দেন তিনি।

কিন্তু প্রিয়াঙ্কা গান্ধী কি আদৌ পারবেন কংগ্রেসের পুরনো সুদিন ফেরাতে? তাও আবার উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যে? দিল্লিতে সিনিয়র সাংবাদিক ও রাজনৈতিক বিশ্লেষক সোমা চৌধুরী বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন, "দেখুন, রাজনৈতিক উপস্থিতি, ব্যক্তিত্ব বা প্রতিপক্ষর টক্কর নেওয়ার ক্ষমতা ধরলে প্রিয়াঙ্কা অবশ্যই কংগ্রেসের জন্য সম্পদ।"

"কিন্তু ভোটের মাত্র কয়েকদিন আগে যেভাবে তিনি উত্তরপ্রদেশের মতো কঠিন রাজ্যে সরাসরি মোদী-আদিত্যনাথের সঙ্গে পাল্লা দিতে নামলেন, তার ফলাফল কী হয় আমি সে দিকে সাগ্রহে তাকিয়ে থাকব।"

"কোনও সন্দেহ নেই রাজনৈতিকভাবে তিনি একটা বিরাট ঝুঁকি নিয়েছেন!"

প্রিয়াঙ্কাকে সক্রিয় রাজনীতিতে আনার দাবি উঠছে আজ প্রায় বিশ-পঁচিশ বছর ধরে। সেই দাবি অবশেষে মানা হল, কিন্তু তার জন্য কি বড্ড দেরি হয়ে গেল না?সোমা চৌধুরী অবশ্য বিশ্বাস করেন, "রাজনীতিতে ভীষণ দেরি বলে কিছু হয় না, কারণ এখানে রাতারাতি কারও কপাল ফিরে যেতে পারে।"

"প্রিয়াঙ্কার বয়স সাতচিল্লশ বলে দেরি হয়ে যায়নি, তবে সম্ভবত ব্যক্তিগত ও পারিবারিক নানা কারণেই তিনি কিছুটা দেরিতে ফুলটাইম রাজনীতিতে নামলেন।"

"আর নামলেন এমন একটা সময় যখন তার ভাই বহু বছর পর সবে কয়েক মাস হল পায়ের তলায় রাজনৈতিক জমি খুঁজে পাচ্ছেন।"

"প্রিয়াঙ্কা এখনও ফুরিয়ে যাননি মোটেই - তবে যদি নেহাত একটা সেলোটেপের মতো তাকে কংগ্রেস উত্তরপ্রদেশে জোড়াতালি দেওয়ার কাজে ব্যবহার করে তাহলে আমি বলব তাতে বিশেষ কিছু হওয়ার নয়", বলছিলেন মিস চৌধুরী। এদিকে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীকে রাজনীতিতে নামানোর এই ঘোষণায় কোনও প্রতিক্রিয়া দেওয়ারই প্রয়োজন বোধ করছেন না বিজেপির সাধারণ সম্পাদক সরোজ পান্ডে।

বিবিসি বাংলাকে মিস পান্ডে বলছিলেন, "কোন দল কাকে কোথায় কোন পদে বসাল তা আমাদের দেখারই দরকার নেই।"

বিজেপিরই আর এক মুখপাত্র সম্বিত পাত্র অবশ্য মন্তব্য করেছেন, "দুর্বল রাহুল গান্ধীর আসলে একটা ক্রাচ দরকার বলেই প্রিয়াঙ্কার এই নিয়োগ।"

তবে ভারতের রাজনৈতিক ল্যান্ডস্কেপে প্রিয়াঙ্কা গান্ধীর যোগদানে শুধু কংগ্রেস নয়, বিজেপি-সহ অনেক দলকেই যে নতুন করে রাজনৈতিক স্ট্র্যাটেজি কষতে হচ্ছে তাতে কোনও সংশয় নেই।

সূত্রঃ বিবিসি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর