পরকীয়ার জন্য সাম্প্রতিক সময়ে আমাদের দেশে বেশ কয়েকটি চাঞ্চল্যকর হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। শুধু স্বামীই নয়, পরকীয়ার জন্য সন্তানদেরও হত্যা করা হয়েছে। পরকীয়া বা বিবাহবর্হিভূত সম্পর্ক নৈতিকভাবে খারাপ বিবেচিত হলেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে এর শাস্তির ধরণে ভিন্নতা রয়েছে।
ভারতভারতে কোন বিবাহিত নারী বা পুরুষ যদি অন্য কারো সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্কে লিপ্ত হন তাহলে তা আর ফৌজদারি অপরাধ বলে গণ্য হবে না বলে সম্প্রতি রায় দিয়েছে সেদেশের সুপ্রিম কোর্ট। এই রায়ের আগে ভারতে দেড়শত বছর ধরে পরকীয়া ফৌজদারি অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হতো। তবে যদি স্বামী বা স্ত্রীর পরকীয়ার কারণে জীবনসঙ্গী আত্মহত্যা করে তা অপরাধ হিসেবে বিবেচিত হবে। তখন আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার যে সাধারণ আইন রয়েছে, সে আইনে বিচার করা হবে।
বাংলাদেশধর্মীয় এবং সামাজিক উভয় দৃষ্টিকোণ থেকে বাংলাদেশে বিবাহ বর্হিভূত সম্পর্ক একটি সাংঘাতিক অপরাধ। কিন্তু এ সংক্রান্ত আইন খুব বেশি নেই। তবে পেনাল কোডের ৪৫৭ ধারায় বলা হয়েছে যে কোন বিবাহিত ব্যক্তি যদি অন্য কোন বিবাহিত নারীর সঙ্গে জেনেশুনে যৌন সম্পর্ক করে তাহলে তা ব্যভিচার বলে গণ্য হবে।
এ ক্ষেত্রে সেই পুরুষটির পাঁচ বছরের কারাদন্ড, অর্থদন্ড বা উভয় দন্ডের বিধান আছে। তবে যে নারীর সঙ্গে ব্যভিচার করা হয়েছে - তার ক্ষেত্রে আইনে কোন শাস্তির বিধান নেই, ব্যভিচারকারী নারী ও পুরুষ উভয়ের শাস্তির কথাও বলা নেই।
সৌদি আরবসৌদি আরবে পরকীয়া বা বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক একটি জঘন্য অপরাধ হিসেবে বিবেচিত। সেখানে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক যিনা বা ব্যভিচার হিসেবে বিবেচিত। প্রকাশ্যে পাথর নিক্ষেপের মাধ্যমে এ অপরাধের নারী-পুরুষ উভয়কে শাস্তি প্রদান কর হয়।
চীনপরকীয়ার জন্য চীনের বিভিন্ন অঞ্চলে বিভিন্ন রকমের শাস্তির বিধান রয়েছে। তবে চীনের কেন্দ্রীয় আইন অনুযায়ী পরকীয়াকে অপরাধ হিসেবে দেখা হয় এবং সেখানে এর শাস্তি অর্থদন্ডসহ তিন বছরের কারাদন্ড।
যুক্তরাষ্ট্রযুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্যভেদে পরকীয়ার শাস্তির মাত্রায় পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। একুশটি অঙ্গরাজ্যে পরকীয়াকে কোন ধরনের অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয় না। তবে ম্যাসাচুসেটস, ওকলাহামা, উইসকন্সিন, মিশিগানের মতো অঙ্গরাজ্যগুলোতে পরকীয়াকে মারাত্বক অপরাধ হিসেবে দেখা হয় এবং সেখানে এর শাস্তি অর্থদন্ডসহ যাবজীবন কারাদন্ড।