ভেনিজুয়েলার বিরোধী নেতা জুয়ান গাইডো জানিয়েছেন, ইসরাইলের সঙ্গে পুনরায় সমপর্কোন্নয়নে কাজ করছেন তিনি। এর আগে ভেনিজুয়েলার সমাজতান্ত্রিক চিন্তাধারার শাসকরা ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানিয়ে ইসরাইলের সঙ্গে সমপর্ক ছিন্ন করেছিলেন। ফলে প্রায় একদশক ধরে ভেনিজুয়েলার সঙ্গে ইসরাইলের কোনো সমপর্ক নেই। বর্তমান প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরোও ইসরাইলের সঙ্গে কোনো ধরনের সমপর্কে আগ্রহী নয়। তবে যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত ভেনিজুয়েলার স্বঘোষিত প্রেসিডেন্ট জুয়ান গাইডো মঙ্গলবার বলেছেন, ইসরাইলের সঙ্গে পুনরায় সমপর্ক স্থাপনের কাজ চলছে। প্রথমে আমরা সমপর্ক স্থাপন করবো। এরপর ইসরাইলে আমরা রাষ্ট্রদূত নিয়োগ দেবো। আমরা আশা করছি ইসরাইলেরও একজন রাষ্ট্রদূত এখানে নিয়োগ দেয়া হবে।
ইসরাইলের সংবাদপত্র হাইয়োমকে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে এ কথা বলেছেন গাইডো।
গাইডো আরো জানিয়েছেন, তিনি ভেনিজুয়েলার দূতাবাস ইসরাইলের জেরুজালেমে স্থাপন করবেন। মূলত এর মাধ্যমে জেরুজালেমকে ইসরাইলের অংশ হিসেবে স্বীকৃতি দেয়া হবে। দখলকৃত এ অংশটিকে ভবিষ্যৎ ফিলিস্তিন রাষ্ট্রের রাজধানী হিসেবে দাবি করা হয়। ইসরাইল সমগ্র জেরুজালেমকেই নিজের রাজধানী হিসেবে দাবি করে। তবে এর পূর্বাংশ ১৯৬৭ সালের যুদ্ধে অবৈধভাবে দখল করে নেয় দেশটি। গাইডো বলেন, আমি সময়মতো সমপর্ক স্থাপন ও দূতাবাস স্থাপনের সবকিছু ঘোষণা করবো।
গত মাসে ইসরাইল যুক্তরাষ্ট্র ও এর পশ্চিমা মিত্রদের পথ অনুসরণ করে ভেনিজুয়েলার বিরোধী নেতা গাইডোকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে স্বীকৃতি দেয়। তবে ভেনিজুয়েলার নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো গত নির্বাচনে প্রায় ৬৮ শতাংশ ভোট পেয়ে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত রয়েছেন। তার সমর্থনে রয়েছে রাশিয়া ও চীন। একই সঙ্গে দেশটির রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্র্ণ সেনাবাহিনীও মাদুরোর প্রতি আনুগত্য প্রকাশ করেছে। সমাজতান্ত্রিক নেতা হুগো শ্যাভেজের সময় ভেনিজুয়েলা ইসরাইলের সঙ্গে সমপর্ক ছিন্ন করেছিল। ভেনিজুয়েলা স্বাধীন ফিলিস্তিনকেই এ অঞ্চলের সংকট মোকাবিলায় সমাধান মনে করে থাকে। তবে গাইডো এবার এর উল্টো বিদেশনীতি ঘোষণা করলো। ২০১০ সালে হুগো শ্যাভেজ দাবি করেছিলেন যে, ইসরাইল ভেনিজুয়েলায় তার বিরোধীদের অর্থায়ন করছে। তিনি আরো বলেছিলেন, এখানে মোসাদের নেতৃত্বে ইসরাইলি সন্ত্রাসীরা কাজ করছে। তারা আমাকে হত্যা করতে চায়।
ভেনিজুয়েলার বিরোধী দল সরকারের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার বিক্ষোভ করে। সেখান থেকে দাবি তোলা হয় ভেনিজুয়েলা সীমান্তে থাকা ত্রাণ যাতে দেশটিতে প্রবেশ করতে দেয়া হয়। তবে মাদুরো সরকার জানিয়েছে, ভেনিজুয়েলার কোনো সাহায্যের দরকার নেই। যুক্তরাষ্ট্র ভেনিজুয়েলায় প্রবেশ ও তেলের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার চেষ্টা হিসেবে এই চাল চালছে। ইরাক ও লিবিয়ায় মার্কিন সেনাদের আগ্রাসনের কথাও উল্লেখ করা হয়েছে। এদিকে ভেনিজুয়েলার অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপের বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রকে কঠিন হুঁশিয়ারি দিয়ে যাচ্ছে রাশিয়া।