× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পোল্যান্ডে ইরান-বিরোধী সম্মেলন, তেহরানে রক্তক্ষয়ী আত্মঘাতী হামলা

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৫ বছর আগে) ফেব্রুয়ারি ১৪, ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ৯:৫৩ পূর্বাহ্ন

পোল্যান্ডে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে শুরু হয়েছে মধ্যপ্রাচ্য সম্মেলন। ইসরাইল ও আরব বিশ্বের বিভিন্ন দেশের অংশগ্রহণে এ সম্মেলনের প্রতিপাদ্যই যেন ইরান-বিরোধী সুর। সম্মেলনের বাইরে শ’ শ’ মানুষকে ইরানের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করতে দেখা গেছে। অংশগ্রহণকারী অনেক প্রভাবশালী আলোচকের পাশাপাশি বিক্ষোভকারীরাও ইরানের ক্ষমতা-ব্যবস্থার পরিবর্তনের দাবি তুলেছেন। ঠিক একই দিনে কাকতালীয়ভাবে ইরানের রাজধানী তেহরানে এক ভয়াবহ আত্মঘাতী বোমা হামলা হয়েছে। ওই হামলায় ইরানের বিপ্লবী রক্ষী বাহিনীর ২০ জন সদস্য নিহত হয়েছেন। ওই গাড়ি বোমা হামলায় আরও ১০ জন সেনা আহত হন। এ খবর দিয়েছে আল জাজিরা।


ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা জানিয়েছে, এই হামলা হয়েছে সিস্তান-বেলুচিস্তান প্রদেশে। এই প্রদেশটি বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ আফিম পাচারের রুট। এখানে ইরানি বাহিনীর সঙ্গে প্রায়ই বেলুচ বিচ্ছিন্নতাকামী ও মাদক চোরাকারবারীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। বার্তা সংস্থা ফার্স জানিয়েছে, জৈশ আল-আদল নামে একটি সশস্ত্র গোষ্ঠী হামলার দায় স্বীকার করেছে।

এই হামলা এমন দিনে ঘটলো যখন পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ’তে চলছে মার্কিন নেতৃত্বাধীন মধ্যপ্রাচ্য বিষয়ক সম্মেলন। এতে মধ্যপ্রাচ্য জুড়ে ইরানের ‘ধ্বংসাত্মক কর্মকান্ড’ নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা।

ইরানে বিপ্লবী রক্ষীবাহিনী অর্থনৈতিক ও সামরিক দিক দিয়ে ব্যাপক শক্তিশালী। এটি কেবল দেশের সুপ্রিম লিডার আয়াতুল্লাহ আল খামেনির কাছে জবাবদিহি করে থাকে। ২০০৯ সালে এই সিসতান-বেলুচিস্তান প্রদেশেই এক আত্মঘাতি হামলায় এই বাহিনীর ৬ কমান্ডার সহ ৪০ জন নিহত হন। সেবার জান্দাল্লাহ নামে একটি সুন্নিপন্থী গোষ্ঠী দায় স্বীকার করে। ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরেও ইরানের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলীয় তেল-সমৃদ্ধ প্রদেশে সামরিক কুচকাওয়াজ চলাকালে হামলা হলে ২০ জন নিহত ও ৬০ জন আহত হন।

ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভেদ জারিফ এই হামলা ও পোল্যান্ডের সম্মেলনের নিন্দা জানিয়েছেন। তিনি টুইটারে বলেন, এটি কি কাকতালীয় ঘটনা যে, ওয়ারশতে এই রঙ্গ শুরু হওয়ার দিনেই সন্ত্রাসী হামলার শিকার হলো ইরান?
এদিকে ওই সম্মেলনে অংশ নিয়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু বলেন, এই সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আরব ও অন্যান্য নেতারা ইসরাইলের সঙ্গে একসঙ্গে বসেছে ইরানের বিরুদ্ধে যুদ্ধের অভিন্ন স্বার্থ এগিয়ে নিতে। সম্মেলনে অংশ নেওয়া মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডনাল্ড ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী রুডি জুলিয়ানি বলেছেন, ‘মধ্যপ্রাচ্যে শান্তি ও নিরাপত্তার স্বার্থে ইরানের ধর্মভিত্তিক নেতৃত্বব্যবস্থায় বড় ধরণের পরিবর্তন আনতে হবে।’ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের প্রতিনিধি হিসেবে উপস্থিত না হলেও, তিনি ইরানের ভিন্নমতাবলম্বীদের একটি গোষ্ঠীর প্রতিনিধি হিসেবে বক্তৃতা রাখেন। জুলিয়ানি বলেন, পারমাণবিক চুক্তি মেনে চলার ব্যাপারে ইরানের ওপর বিশ্বাস রাখা যায় না। বক্তব্যের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে বক্তৃতায় ইরানের ‘শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনে’র ডাক দেন তিনি। ওই ভিন্নমতাবলম্বী গ্রুপের আরেক প্রতিনিধি সাবেক মার্কিন সিনেটর রবার্ট টেরিসেলিও ইরানের সঙ্গে সমঝোতার পরিবর্তে দেশটির নেতৃত্ব পরিবর্তনের দাবি জানান।
আল জাজিরার খবরে বলা হয়, এই সম্মেলনের কথা গত মাসে প্রথম ঘোষণা দেন মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেও। কায়রোতে গতমাসে কড়া ভাষায় ইরান-বিরোধী বক্তব্যে তিনি এই তথ্য প্রকাশ করেন। অনেকেই মনে করছেন, ইরানের বিরুদ্ধে বিশ্বশক্তিকে এক করতে ওয়াশিংটন এই প্রচেষ্টা হাতে নিয়েছে।
তবে এই সম্মেলনের সময় অনেক কারণে সংবেদনশীল। এটি এমন সময় হচ্ছে, যখন ইরানের সঙ্গে আমেরিকার পরিত্যাগকৃত পারমাণবিক চুক্তি কার্যকর রাখতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে ইউরোপের প্রভাবশালী দেশগুলো।
সম্মেলনের আয়োজন পোল্যান্ড চেষ্টা করছে এই সম্মেলনকে ইরান-বিরোধী রূপ না দিতে। দেশটি বার বার বলছে, ইরানের সঙ্গে হওয়া পারমাণবিক চুক্তির প্রতি পোল্যান্ডের অঙ্গীকার এখনও অক্ষুন্ন রয়েছে। তবে দৃশ্যত, সম্মেলনের নিয়ন্ত্রণ এখন পোল্যান্ডের হাতে নেই।
এই সম্মেলনে তেহরানের কাউকে আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। ইরান বিষয়ক ট্রাম্পের বিশেষ দূত ব্রায়ান হুক এই সম্মেলনের আয়োজক। পররাষ্ট্রমন্ত্রী মাইক পম্পেওর উপস্থিতিতে এতে বক্তব্য রাখবেন মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট মাইক পেন্স ও ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। এছাড়া এতে বিরল ভাষণ দেবেন ট্রাম্পের বিশেষ উপদেষ্টা ও জামাতা জ্যারেড কুশনার। বৃটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেরেমি হান্ট উপস্থিত থাকলেও তিনি এই সম্মেলনে শুধু ইয়েমেন যুদ্ধ নিয়ে বক্তব্য দেবেন। অন্যান্য ইউরোপিয় দেশগুলো নিম্নপদস্থ কর্মকর্তা পাঠাচ্ছে। কিছু আরব দেশের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে রয়েছেন মন্ত্রীরা।
ইউরোপিয় ইউনিয়নের প্রধান কূটনীতিক ফেডেরিকা মোঘেরিনি বলেছেন, তিনি এতে অংশ নেবেন না। ইরানের গুরুত্বপূর্ণ মিত্র রাশিয়াও আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেছে। ফিলিস্তিনি কর্মকর্তারাও থাকবেন না। তাদের বক্তব্য, এই সম্মেলন হলো ফিলিস্তিনি দাবি দাওয়া মুছে ফেলতে মার্কিন-ইসরাইলি চক্রান্ত।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর