× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

খোলা আকাশের নিচে ৭ বছর / সরকারি নষ্ট সার যাচ্ছে কৃষকের কাছে

শেষের পাতা

প্রতীক ওমর, বগুড়া থেকে
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, শুক্রবার

দীর্ঘ সাত বছর ধরে গুদামের বাইরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকা সরকারি গুদামের সার কৌশলে কৃষকদের কাছে বিক্রি হচ্ছে। ফলে প্রতারণার শিকার হচ্ছেন কৃষক। বগুড়ার আদমদীঘির সান্তাহারে অবস্থিত বিসিআইসি’র রাসায়নিক সারের বাফার স্টক গুদাম থেকে নওগাঁ এবং বগুড়ার বিভিন্ন ডিলারদের কাছে সার দিয়ে থাকে। ২০১২ সাল থেকে ওই গুদামের দায়িত্বশীলদের অবহেলায় সাত বছর ধরে গুদামের বাইরে খোলা আকাশের নিচে পড়ে আছে ১১ হাজার টন ইউরিয়া সার। কয়েক বছর আগেই সারগুলো জমাট বেঁধেছে। এ নিয়ে গত বছরের ৪ঠা এপ্রিল মানবজমিনে একটি সংবাদ ছাপা হয়েছিল। তৎকালীন সান্তাহার বাফার গুদাম ইনর্চাজ আব্দুল মালেকের অবহেলায় এই সারগুলো নষ্ট হয়েছে বলে স্থানীয় ডিলাররা অভিযোগ করেছেন। তিনি সারগুলো রক্ষায় কোনো কার্যকরী পদক্ষেপ নেননি।
নষ্ট হওয়া এই সারের দাম বর্তমান বাজার অনুযায়ী প্রায় ১৭ কোটি টাকা। গুদাম ইনচার্জ জানান, এই সারগুলো কুয়েত এবং চায়না থেকে আনা হয়েছে।

 গুদাম কর্তৃপক্ষ বৃহস্পতিবার ডিলারদের জোর করে এই নষ্ট সার দেয়ার প্রতিবাদে ৫ ঘণ্টা অবস্থান ধর্মঘট পালন করেছেন। পরে  ডিলার এবং গুদাম কর্তৃপক্ষের সমঝোতায় দুপুরের পার সরবরাহ কার্যক্রম শুরু হয়।

ডিলার সূত্রে জানা গেছে, সান্তাহার বাফার স্টক গুদাম থেকে নওগাঁ জেলার ১১ উপজেলার ১২৬ ডিলারকে রাসায়নিক সার সরবরাহ করা হয়ে থাকে। এই গুদামে স্থানাভাবে বিপুল পরিমাণ সার খোলা আকাশের নীচে রাখা হয়। গত ৭ বছর ধরে এভাবে সার মজুদ রাখায় রোদ, বৃষ্টি ও কুয়াশায় সারগুলো জমাট বেঁধে পাথরের মতো শক্ত হয়ে গেছে। সাম্প্র্রতিক সময়ে ঠিকাদার নিয়োগ করে জমাট বাধা সার হাতুড়ি ও ইট ভাঙা মেশিনে ভেঙে নিয়ে নতুন বস্তায় ভরা হচ্ছে। কিন্তু ঠিকাদার দায়সারা কাজ করায় জমাট সার পুরোপুরি না ভেঙেই রি-প্যাক করা হচ্ছে এবং সেগুলোই সরবরাহ নিতে বাধ্য করা হয়। কৃষক সার কিনে নিয়ে যাওয়ার পর জমাট দেখে ডিলারের কাছে ফেরত দিয়ে যায়। ফলে ডিলাররা এসব জমাট বাধা সার নিয়ে বিপাকে পড়ে। এভাবে প্রতি ডিলারের ঘড়ে হাজার হাজার বস্তা জমাট বাধা সারের মজুদ গড়ে উঠেছে। এতে করে তারা লাখ লাখ টাকার লোকসানে পড়েছেন।

ওলিউর রহমান, মিজানুর রহমান, রনি হোসেন, দিপক কুমারসহ বহু ডিলার অভিযোগ করে বলেন, গত মাস থেকে প্রতি ৪০০ বস্তার ট্রাকে ১১০ বস্তা জমাট বাঁধা সার সরবরাহ নিতে বাধ্য করছে বাফার কর্তৃপক্ষ। এ নিয়ে বিরোধ সৃষ্টি হয়। চলতি মাসের বৃহস্পতিবারও একই পরিমাণে জমাট বাঁধা সার সরবরাহ নেয়া নিয়ে বেঁকে বসেন ডিলাররা। তারা প্রায় শতাধিক ট্রাক নিয়ে এসে বাফার স্টক গুদামে প্রবেশ না করিয়ে রাস্তায় রেখে দেয় এবং গেটের সামনে অবস্থান ধর্মঘট শুরু করে। খবর পেয়ে বেলা ১২টার দিকে নওগাঁ জেলা সার ডিলার সমিতি (বিএফএ)’র সভাপতি রেজাউল করিম, সহ-সভাপতি দীপক কুমার ও মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে প্রতিনিধিদল বাফার গুদামের ইনচার্জ একেএম হাবিবুর রহমানের সঙ্গে বৈঠক করেন। প্রায় ঘণ্টাব্যাপী বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয় যে, প্রতি ট্রাকে ১১০ বস্তার স্থলে ৩৫ বস্তা জমাট বাধা সার সরবরাহ দেয়া-নেয়া হবে। ডিলাররা সে সিদ্ধান্ত মেলে নিলে দুপুর ১টার দিকে কার্যক্রম শুরু হয়।

এ বিষয়ে বাফার গুদামের ইনচার্জ একেএম হাবিবুর রহমান রহমান জানান, সারগুলো জটবাঁধা হলেও গুণগতমান ঠিক আছে। ওই সার ব্যবহার করলে কৃষকের ফসলের কোনো ক্ষতি হবে না।

অপর দিকে বগুড়া কৃষি অঞ্চলের অতিরিক্তি পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) কৃষিবিদ কামাল উদ্দিন তালুকদার জানান, ইউরিয়ায় নাইট্রজেনের পরিমাণ বেশি থাকায় এই সার তৈরির পর থেকেই গুণগতমান কমতে থাকে। যত দিন যায় তত গুণগত মান নষ্ট হয়।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর