× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শিবিরের সাবেক সভাপতির চোখে জামায়াতের যত ভুল

প্রথম পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, শুক্রবার

জামায়াতের নানা ভুল নিয়ে খোলামেলা মতামত দিয়েছেন ছাত্রশিবিরের সাবেক সভাপতি মজিবুর রহমান মঞ্জু। এ নিয়ে ফেসবুকে এক দীর্ঘ স্ট্যাটাস
দিয়েছেন তিনি। সেই স্ট্যাটাসটি হুবহু তুলে ধরা হলো-
আমার খুব ঘনিষ্ঠ প্রিয় একজন মানুষ যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফোন করলেন। কুশলাদি জানার পর সরাসরি প্রশ্ন করলেন- শুনলাম আপনি নাকি জামায়াত থেকে বের হয়ে নতুন দল খুলতে যাচ্ছেন? আমি তাঁর কাছ থেকে এ রকম আচমকা প্রশ্ন শুনে কিছুক্ষণ হাসলাম। কী উত্তর পেলে ভদ্রলোক খুশী হবেন তা নিয়ে সামান্য ভাবলাম। - হ্যাঁ আপনি ঠিকই শুনেছেন। ঠিক! সত্যি সত্যি আপনি.... (তিনি চমকে উঠলে তাঁকে থামিয়ে দিয়ে বললাম) আপনি যা শুনেছেন সেটা আমিও শুনেছি। মানে?- মানে হলো, এ রকম কথা বেশ কিছুদিন যাবত ফেসবুকের কিছু আইডি থেকে প্রচার হয়ে আসছে।
সেই সূত্রে বিভিন্ন জায়গায় এ রকম আলোচনা হচ্ছে। কোনো অফিস, আদালত সামাজিক অনুষ্ঠানে গেলে অনেকে মজা করে আমাকে বলে ভাই নতুন দলের খবর কী? আমার জন্য একটা পোস্ট রাইখেন। এগুলো শুনতে শুনতে আমি ধাতস্থ হয়ে গেছি। নতুন দলের উদ্যোক্তা! হিসেবে এ রকম কদর দেখে মাঝে মাঝে একটু-আধটু ভাবও নিই।

- ও আচ্ছা! তাহলে কী কথাটা সত্য নয়, শুধুই অপপ্রচার! আসলে আমার যদি যোগ্যতা থাকত, আমি যদি শারীরিক ও অর্থনৈতিকভাবে সামর্থ্যবান হতাম তাহলে বহু আগেই এ রকম একটা উদ্যোগ নিতাম। আমি চাই এ রকম একটা উদ্যোগ বড়রা কেউ নিক। আমি তাদের নিবিড় সহযোগী হবো। আপনি তো ভয়ানক কথা বলছেন। জামায়াতের মতো একটা সুশৃঙ্খল, নিয়মতান্ত্রিক দলে ভাঙন ধরানোর কথা বলছেন। না না আমি জামায়াতের কথা বলছি না। আমি বাংলাদেশের সকল রাজনৈতিক দলের কথা বলছি। আমি মনে করি বাংলাদেশে এই মুহূর্তে একটি রাজনৈতিক দলও নেই যারা বাংলাদেশে সুশাসন উপহার দিতে পারে। যারা সাম্য, মানবিক মর্যাদা, সামাজিক ন্যায়বিচার-এর ভিত্তিতে একটি সমৃদ্ধ বাংলাদেশ গড়তে পারে। জামায়াত তো এ উদ্দেশ্যেই কাজ করছে এবং সৎ ও যোগ্য লোক  তৈরির মাধ্যমে তারা ধীরে ধীরে একটি সুন্দর দেশ উপহার দেয়ার লক্ষ্যে এগিয়ে যাচ্ছে। অবশ্যই জামায়াত চেষ্টা করছে। শুধু জামায়াত নয়, আরও অনেকেই চেষ্টা করছে। বাংলাদেশে এখনও যতটুকু আশা বেঁচে আছে তা সেসব প্রচেষ্টারই ফল। কিন্তু শুধু চেষ্টা করলেই তো হবে না। চেষ্টার সঙ্গে কর্মকৌশল, কর্মনীতি, যথা সময়ে প্রয়োজনীয় চিন্তা ও সিদ্ধান্তের সমন্বয় না ঘটলে সে চেষ্টা একসময় পথ হারিয়ে ফেলে। কখনও কখনও অনিশ্চয়তায় নিপতিত হয়। বহু নবী বিজয় অর্জন করতে পারেননি। চেষ্টা করতে করতে আল্লাহ্‌র সন্তুষ্টির পথে তাঁরা জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন।

কিন্তু সর্বশেষ নবী এবং রাসূল (সা.) বিজয় অর্জন করেছিলেন। আল্লাহ্‌র বিধান প্রতিষ্ঠিত করে প্রমাণ করেছিলেন ইসলাম কীভাবে সমতা, শান্তি ও ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে পারে। জামায়াতের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য রাসূল (সা.) এর অনুরূপ। জামায়াত যে চেষ্টা করছে তাতে উদ্দেশ্য পূরণ হবে হয়তো কিন্তু লক্ষ্য যদি অর্জিত না হয় তাহলে সমাজ ও ইতিহাস আমাদের ব্যর্থই ভাববে। তাহলে আপনি মনে করেন বাংলাদেশে আপনারা জামায়াতের লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হতে চলেছেন? হ্যাঁ মনে করি। তবে এই ব্যর্থতার একটা বড় দায়ভার জামায়াতের বিরোধীদের। জামায়াতকে সর্বক্ষেত্রে, সর্বদিক দিয়ে নির্মূল করার যে চেষ্টা সে চেষ্টায় তারা ব্যাপক সফলতা পেয়েছে। আমরা সে ষড়যন্ত্র, অপপ্রচার মোকাবিলা করতে পারিনি বরং দু’টি মেজর মিসটেক নিয়ে আমরা দীর্ঘ সংগ্রামী পথ পাড়ি দিয়েছি। একটি আদর্শগত তাত্ত্বিক ভুল অন্যটি রাজনৈতিক ভুল।

আদর্শগত ভুলটা কী? আমার দৃষ্টিতে ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার ঘোষণা এবং বাস্তবায়নে আমরা যে তত্ত্বগত, দার্শনিক ও বাস্তবায়নগত কর্মপন্থা নিয়েছি তা আদর্শগত ভুল। ফলে জামায়াতে ইসলামী কী একটি ইসলামী আন্দোলন? না রাজনৈতিক দল? তা নিয়ে দোটানায় থাকতে হয়। ইসলামী আন্দোলন হিসেবে আমাদেরকে মানতে পারেন না বৃহৎ অংশের আলেম ওলামারা। আবার সুশীল-মধ্যবিত্ত আর পাশ্চাত্যপন্থিদের সমলোচনা হল জামায়াত গোঁড়া- মৌলবাদী। প্রচলিত ভোট এবং জোটের রাজনীতির সঙ্গে তাল মিলাতে গিয়ে আমাদেরকে প্রতিনিয়ত জায়েজ-নাজায়েজ, হালাল-হারাম ইত্যাদি বিতর্কে নাকাল হতে হয়। একটি রাজনৈতিক দল নিয়ে প্রকাশ্য আলোচনা হবে, সমলোচনা হবে এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু জামায়াতে এটার সুযোগ কম। যেমন এই যে, আমি এখন আপনার সাথে জামায়াত নিয়ে আলোচনা করছি এটা যদি কেউ টেপ করে দায়িত্বশীলদের শোনায় তাহলে আমার সদস্যপদ থাকবে না। তাই নাকি! কেন? আমাদের গঠনতন্ত্রে সদস্যদের প্রকাশ্য মত প্রকাশের ক্ষেত্রে বেরিয়ার আছে। ফোরাম ছাড়া অন্য কোথাও ভিন্নমত নিয়ে আলোচনা করার সুযোগ নেই। যদি এ রকম তৎপরতা পরিলক্ষিত হয় তাহলে সেটা শৃংখলা ভঙ্গ, গ্রুপিং হিসেবে চিহ্নিত হয়। যেমন এখন আপনি আমাকে বললেন আমি দলে ভাঙন ধরানোর চেষ্টা করছি। নতুন দল গড়তে যাচ্ছি- সেরকম। ভিন্নমত, ভিন্ন আলোচনা মানেই আপনি বিদ্রোহী। এটা রাজনৈতিক দলের বৈশিষ্ট্য নয়। রাজনৈতিক দলে যৌক্তিক আলোচনা-সমলোচনা হবে। একটা অর্গানিক প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে কর্মীরা গড়ে উঠবে। একটু সমলোচনা হলেই সব গেল গেল, কর্মীরা বুঝি নিরুৎসাহিত হয়ে যাচ্ছে! ভীতি সঞ্চারিত হবে না। কোথাও দু’চারটা মিটিং হলেই হায়! হায়! দল বুঝি ভেঙে গেল! বলে রব উঠবে না।

বরং পাবলিক তর্ক- বিতর্ক দলকে সুসংহত করে মজবুত আস্থায় স্থাপিত করে। পবিত্র কুরআনে মুসলিম বাহিনীর শুধু সৌকর্যের কথা বলা নেই। পাশাপাশি ওহুদ যুদ্ধে তাদের বিপর্যয় ও আনুগত্য লঙ্ঘনের কথাও বলা আছে। হযরত আয়েশার (রা:) ইফকের মতো সেনসিটিভ ঘটনাও কুরআনে আল্লাহ্‌তায়ালা তুলে ধরেছেন। হাদিসে তো এমন কোনো জটিল বিষয় নেই যা বাদ গেছে। এ সকল কিছুই সবার জন্য উন্মুক্ত। যারা এসব দ্বান্দ্বিক জ্ঞানের বেড়াজাল পেরিয়ে ইসলাম গ্রহণ করবে তাঁরাই হবে মজবুত মুসলিম। অর্থাৎ ইসলামের যে পূর্ণাঙ্গ আদর্শিক ও রাজনৈতিক রূপ সেই অর্থে জামায়াতে অপূর্ণতা রয়েছে। কিন্তু এটাতো মানবেন যে আপনারা মানে জামায়াত-খুব সুশৃঙ্খল ও সুসংগঠিত দল। হ্যাঁ। সেটা বলতে পারেন। তবে সেটা এপারেন্টলি। কার্যত: জামায়াত পরিবার, জামায়াত অধ্যুষিত অফিসগুলো এবং জামায়াত সার্কেলের বন্ধু-বান্ধবেরা সারাক্ষণই জামায়াত নিয়ে ব্যাপক কাটা-ছেঁড়া করেন। এমন কোনো সমলোচনা নেই যা এ সকল আড্ডায় হয় না।

দায়িত্বশীলদের ঘর-বাড়ি, অফিসে এসবের মাত্রা আরও বেশি। কিন্তু ফোরামের পরিবেশ খুব বিশুদ্ধ, উখুয়াতে পরিপূর্ণ। আবেগ আর কান্নার রোলে সেখানে শুধুই পবিত্র বন্ধনের ধ্বনি-প্রতিধ্বনি।
হুম্‌ (দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে) বুঝতে পারলাম। কিন্তু এবার বলেন, আপনাদের রাজনৈতিক মেজর মিসটেক বা ভুলটা কী? রাজনৈতিক বড় ভুল হলো- বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধে জামায়াতের ভূমিকা নিয়ে আমাদের অস্বচ্ছ- বিভ্রান্তিকর অবস্থান। সেটা কী রকম? ১৯৭১ সালের স্বাধীনতা যুদ্ধে জামায়াত অংশ নেয়নি বরং বিরোধিতা করেছে। এই বিরোধিতা করে জামায়াত কী সঠিক করেছে? না ভুল করেছে? দলীয়ভাবে এ বিষয়টি তারা এখনো সুরাহা করতে পারেননি। ভুল শুদ্ধের সুরাহা না করেই জামায়াত বিভিন্ন সময়ে বক্তৃতায় বিভিন্ন কথা বলেছে। মরহুম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা এবং মুক্তিযোদ্ধাদের ‘জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান’ হিসেবে স্বীকার করে নিয়েছে। অথচ মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তাদের বিবেচনায় শেখ মুজিব ছিলেন ‘ষড়যন্ত্রকারী’ ‘দেশদ্রোহী’ এবং মুক্তিযাদ্ধারা ছিলেন ‘ভারতের দালাল’। একই নেতৃবৃন্দের কাছে আমরা কখনো শুনি “মুক্তিযুদ্ধকালীন আমাদের ভূমিকা ছিল আবেগ নির্ভর ও বাস্তবতা বিবর্জিত” আবার কখনো তাঁরা বলেন- “৭১-এ আমরা যে ভূমিকা নিয়েছিলাম তা যে সঠিক ছিল তা এখন জাতি বুঝতে পারছে”!

মহান মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে আমাদের মুরব্বীদের মুখ থেকে দুই ধরনের পাঠ পাওয়াটা খুবই দুর্ভাগ্যজনক। এতে বোঝা যায় তাঁরা পরিস্থিতি বুঝে একবার একরকম বলছেন। দলের সুস্পষ্ট কোনো স্ট্যান্ড নেই। ফলে সাধারণ কর্মীদের মধ্যে এ প্রশ্ন জাগাটা খুবই স্বাভাবিক যে, মুক্তিযুদ্ধ কে সমর্থন না করাটা যদি সঠিক হয়, তাহলে বিজয় দিবস, স্বাধীনতা দিবস পালন কীভাবে সঠিক হয়? হ্যাঁ জামায়াত যদি ৭১ সালের ভূমিকার জন্য দুঃখ প্রকাশ করতো, ক্ষমা চাইতো এবং সবার আগে আমাদেরকে অর্থাৎ দলীয় কর্মীদের কে সে বিষয়ে দীক্ষা দিত তাহলে কোনো সমস্যা ছিল না। আমাদের কে জানানো হয়েছে শেখ মুজিব স্বাধীনতা চাননি। তিনি স্বেচ্ছায় পাকিস্তানিদের হাতে ধরা দিয়েছিলেন। কিন্তু আবার জনসম্মুখে চাপে পড়ে বলা হচ্ছে শেখ মুজিব স্বাধীন বাংলাদেশের স্বপ্নদ্রষ্টা! ফলে আমাদের সকল রাজনৈতিক অর্জন এই এক ক্ষেত্রে এসে প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যাচ্ছে।

১৯৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ প্রসঙ্গ এলে রাজাকার, আলবদর, যুদ্ধাপরাধী এমন কোনো গালি নেই যা আমাদের দেয়া হয় না। রাজনৈতিক প্রজ্ঞার অভাবে এবং নেতৃত্বের দোদুল্যমানতায় অযথা আমরা সমাজের ২য় শ্রেণির নাগরিক হয়ে আছি। আপনি কী মনে করেন মুক্তিযুদ্ধ প্রসঙ্গে ক্ষমা চাইলে জামায়াতের রাজনীতি সবাই গ্রহণ করে ফেলবে? না আমি ক্ষমা চাওয়া আর ক্ষমা চাওয়ার সঙ্গে সবার রাজনীতি গ্রহণ করার কথা বলছি না। জামায়াত ভুল করেছে না শুদ্ধ করেছে সেটা আগে সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করার কথা বলছি। আপনি যদি ভুল করে থাকেন আর সেটা স্বীকার না করে নানা ধানাই-পানাই করে যুক্তি দেন তাহলে সেটা কখনোই আপনি প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন না। এটা ইসলামিক পদ্ধতিও নয়। বরং এতে আপনার বিরুদ্ধ প্রচারণাটাই প্রতিষ্ঠা পাবে। আর যদি আপনার ভূমিকা হায় সঠিক, ন্যায়ানুগ এবং যুক্তিপূর্ণ কিন্তু আপনি পরিস্থিতির কারণে সুবিধা পাওয়ার জন্য বলেন না আমি ঠিক করিনি, আবেগ নির্ভর ছিল বা ভুল ছিল-সেটা আরো মারাত্মক। এই অস্পষ্টতা,  দ্বৈতাচরণ আপনাকে আদর্শিকভাবে শূন্য বানিয়ে ফেলবে। -তাহলে জামায়াত এখন কী করবে? আপনাদের যাদের ভিন্নমত তাঁরাই বা কী করবেন? দেখুন আমি রাজনীতি থেকে এখন অনেক দূরে। আমি আমার দলের একটি ক্ষুদ্র ইউনিটেরও দায়িত্বশীল নই। এই দলের ভাঙন তো দূরের কথা আমার কথায় দলের সামান্য সুতাও নড়বে না।

আমি আমার ওজন ও সামর্থ্য বুঝি। বিভিন্ন পেশা ও মতের মানুষদের নিয়ে কিছু ইনটেলেকচুয়াল গ্রুপ আছে যেখানে সমাজ রাজনীতি নিয়ে ডিস্কাশন হয়। আমি সে রকম কয়েকটির সদস্য। একটির মডারেটর আমি নিজে। সেখানে রাজনীতির রূপান্তর, কার কী ভবিষ্যৎ, জাতীয় মুক্তি আন্দোলন কীভাবে সম্ভব এসব নিয়ে আলোচনা হয়। আমার কাজ আলাপ-আলোচনা, ফেসবুকিং, আড্ডা এগুলোতেই সীমাবদ্ধ। যারা আমার সাথে কথা বলতে চায় তাদের সাথে কথা বলি। পেশাগত কাজে এদিক সেদিক যাই। কোন দাওয়াতে গেলে ছোট খাট মিটিং হয়ে যায়। স্বাধীনভাবে মত প্রকাশ করার অধিকার আল্লাহ্‌তায়ালার প্রদত্ত অধিকার। আত্মসমলোচনা,  বৈরী পরিবেশেও হক কথা বলা, অন্যায়ের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা এসব অনুপ্রেরণা আমি সংগঠন থেকে শিখেছি। আমি বিশ্বাস করি সংস্কার একটি দীর্ঘমেয়াদি প্রক্রিয়া। এর পথ বড্ড প্রতিকূল। পথভ্রষ্ট, দালাল, মুনাফেক, সংস্কারবাদী, সুবিধাবাদী, ভীরু, দলে ভাঙন সৃষ্টিকারী, ষড়যন্ত্রকারী, গ্রুপিং সৃষ্টিকারী, শৃঙ্খলা বিরোধী ও বিনষ্টকারী...... এ রকম বহুমাত্রিক গালি-অপবাদ তাদের পাথেয়। দলে তাদের ঠাঁই হয় না। শৃঙ্খলা রক্ষা, দলের ঐক্য অটুট রাখার স্বার্থে তাদের দল থেকে বের করে দেয়া হয়। তাদের দল ছাড়তে বাধ্য করা হয়। কিন্তু এরপরও কী দল অটুট থাকে? সংস্কারের দাবি তিরোহিত হয়? হয়না। দমননীতি আর অপবাদ দিয়ে সংস্কার আর পরিবর্তনের পথ রোধ করা যায় না।

সংস্কার কে যুক্তি এবং একোমোডেশন দিয়ে আত্মস্থ করতে হয়। তাহলে দল টিকে এবং সফল হয়। আপনি কী মনে করেন জামায়াত টিকবে? উফ্‌... আপনি তো দেখি আমাকে কঠিন ইন্টারেগেশনে ফেললেন। আমি আর কথা বলতে আগ্রহ বোধ করছি না। না না এটা বলেন। এটা বলেই শেষ করেন। শোনেন জামায়াত অবশ্যই টিকবে। যুগ যুগ শতাব্দীকাল ধরে টিকবো আমরা। কিন্তু সফল হবো কি না সেটাই প্রশ্ন? আর এই শতাব্দীকালের পরিক্রমায় আমাদের লক্ষ্য হয়তো সরে যাবে। উদ্দেশ্য সাধনে যুক্ত হবে শিরক, বেদায়াত, মানুষের ভয়। গঠনতন্ত্রের চাবুক আমাদের নমনীয়, অনুগত এবং তাক্‌ওয়াবান বানিয়ে রাখবে। এটাই বা কম সফলতা কিসের। আপনার জবাব কী পেয়েছেন?  হুম্‌ম্‌.. পেয়েছি। তবে দেশে আসলে আপনার সথেঙ্গ সাক্ষাতে আরও অনেক আলাপ করবো  ওকে। ভালো থাকবেন, দোয়া করবেন। আল্লাহ্‌ হাফেজ।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর