× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ৫ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৯ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মানবজমিন যেতে হবে বহুদূর

প্রথম পাতা

শামীমুল হক
১৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, শুক্রবার

 নানা উত্থান-পতন। নানা ঘটন অঘটনের সাক্ষী। ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়া। শিশু থেকে এখন দীপ্ত-যৌবনের তুঙ্গ-তরঙ্গে। পেশার প্রতি অবিচল, দায়িত্বশীলতা এবং বস্তুনিষ্ঠ সংবাদপ্রবাহের প্রতি সত্যনিষ্ঠাই  একমাত্র লক্ষ্য। সে শপথকে আঁকড়ে এগিয়ে চলা দৈনিক মানবজমিন আজ পা রেখেছে বাইশে। দক্ষিণ এশিয়ার প্রথম রঙিন ট্যাবলয়েড প্রথম দিনই সাড়া জাগায় দেশ ছাড়িয়ে বিশ্বে। সেদিন ফরাসি বার্তা সংস্থা এএফপি খবর দিলো ঢাকায় একটি ট্যাবলয়েড পত্রিকা হুলস্থূল বাধিয়ে দিয়েছে।
এ হুলস্থূল এখনো চলছে। মানবজমিন তার গৌরবময় একুশটি বছর অতিক্রম করে বাইশে পদার্পণের এই শুভদিনে বিশ্বব্যাপী অগণিত পাঠক, শুভানুধ্যায়ীকে জানাচ্ছে বিনম্র অভিবাদন। তারুণ্য-যৌবনের লেলিহান বাইশের শুরুতে মানবজমিন পুনরুচ্চারণ করছে কারও তাঁবেদারি না করার। নব্বই দশকের শেষদিকে ১৯৯৮ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারি সূর্য্যের আলো দেখে মানবজমিন। টানটান উত্তেজনা সবার মাঝে।

কীভাবে নেবে পাঠকমহল? পশ্চিমা ধাঁচের ট্যাবলয়েড মানবজমিন কি পাঠকের হৃদয়ে জায়গা করে নিতে পারবে? সকল জল্পনা কল্পনাকে উড়িয়ে দিয়ে পাঠক লুফে নেয় পত্রিকাটিকে। মানবজমিনের স্বাপ্নিক-প্রতিষ্ঠাতা মতিউর রহমান চৌধুরীর উদ্যোগে বিকল্প সংবাদশক্তির উন্মেষের সেই রোমাঞ্চকর ঘটনা আজ ইতিহাসের অংশ। প্রতিষ্ঠাতা প্রধান সম্পাদকের অকৃত্রিম সহযাত্রী সম্পাদক-ছড়াকার মাহবুবা চৌধুরী।  কঠিন সেই যাত্রায় তারা সফল।  তাই তো নানা চ্যালেঞ্জ পেরিয়ে আজ অনলাইন এবং প্রিন্ট মিডিয়ায় মানবজমিন জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বাংলাভাষী পাঠক সমাজে অন্যতম জনপ্রিয় শীর্ষ দৈনিক। মানুষের সিক্ত-ভালোবাসা তথা পাঠকের আস্থা ও বিশ্বাসের শক্তিতেই এগিয়ে চলছে মানবজমিন। ১৫ই ফেব্রুয়ারি জন্মের ক্ষণে বসন্তের ফাল্গুনী সুর-ছন্দ-রঙ আর ভালোবাসার বন্ধনে বাইশ বছরে পা দেয়ার এই দিনে সবার প্রতি  ভালোবাসা, শুভাশিস ও কৃতজ্ঞতা।  প্রত্যাশা জানাচ্ছি, সম্মিলিত পথচলার। আর এ পথচলার মাধ্যমেই মানবজমিনকে যেতে হবে বহুদূর। যার সঙ্গী হবে অগণিত পাঠক আর শুভানুধ্যায়ী। সঙ্গী হবে সত্য আর ন্যায়।

দীর্ঘ একুশ বছরে দেশের সঙ্কুল আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক প্রতিকূলতায় ভরা বিরূপ পরিস্থিতির মধ্যেও মানবজমিন সত্যান্বেষণে লড়াই করেছে প্রতিনিয়ত। জাতীয় স্বার্থ আর গণমানুষের ন্যায়সঙ্গত অধিকারের পক্ষে সোচ্চার ছিল সবসময়। অচলাবস্থার অন্ধকারের মধ্যেও পাঠকের কাঙিক্ষত তথ্য ও সংবাদের অগ্রণী ও অনিবার্য সংযোগ সূত্র হিসেবে সচল থেকেছে মুদ্রিত পৃষ্ঠায় আর ওয়েভ পেজের মলাটে। ফেলে আসা দিনগুলোতে মানবজমিন চিন্তায়, চেতনায় যা কিছু সত্য, সুন্দর, ভালো, মানবিক, গণতান্ত্রিক, মহৎ, কল্যাণকর সেসবের সঙ্গে সামঞ্জস্য ও সমন্বয় বিধানের কঠিন কাজটিই সফলভাবে করেছে। ‘কারও তাঁবেদারি করে না’- ঘোষিত এ নীতিকে ঊর্ধ্বে তুলে ধরতে শত চাপ ও বিরোধিতার মধ্যেও মানবজমিন সাদাকে সাদা আর কালোকে কালো বলতে দ্বিধা করেনি।  দেশের প্রথম রঙিন ট্যাবলয়েড দৈনিক হিসেবে আত্মপ্রকাশের দায় ও দায়িত্বের প্রতি নিষ্ঠায় পত্রিকার অকুতোভয় সংবাদকর্মীরা ভয়হীনতায় দাঁড়িয়েছেন সত্যের স্বপক্ষে।

দীর্ঘ এ সময়ে মানবজমিন নিজেকে সম্পূর্ণভাবে মেলে ধরেছে বিশ্বব্যাপী বাংলাভাষী মানুষের তথ্যবলয়ে। রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, বিনোদন, খেলাধুলা, নারী, প্রযুক্তি, ফ্যাশন, আন্তর্জাতিক বিষয়সহ জীবনের সকল অঙ্গনকে স্পর্শ করেছে নিজস্ব বৈশিষ্ট্যতায়।  প্রকৃত সংবাদ আর সংবাদের পেছনের অন্তর্নিহিত সত্যই পূর্ণ করেছে মানবজমিন-এর প্রতিদিনের পৃষ্ঠাসমূহ। বাংলাদেশের ব্যক্তিগত ও সামাজিক ক্ষেত্রে মানুষের যাপিত জীবনের আশা ও দুঃখের কোনো বিষয়কেই উপেক্ষা করে নি মানবজমিন। এড়িয়ে যায় নি জাতীয় ও মানবিক স্বার্থে একটি বিষয়ও।  বাংলাদেশের কেন্দ্র থেকে দূরপ্রান্তে বসবাসরত পাঠকের জানার অধিকারকে পরিপুষ্ট করার ব্রত থেকে মানবজমিন এক মুহূর্তের জন্যও বিচ্যুত হয়নি। পত্রিকার খোলা চোখে পাঠক দেখেছে নিজস্ব ভূগোল, সমাজ, সুশাসন, সারা বাংলাদেশ ও পৃথিবীর প্রসারিত রূপ এবং সেখানকার আলো ও অন্ধকারকে। দেখেছে ভালো ও মন্দকে। সত্য যত কঠিনই হোক, সেই কঠিনেরে ভালোবেসে মানবজমিন নিজেকে তুলে ধরেছে মানুষের চেতনা ও বিবেকের পাটাতনে। পাঠকের মুক্তচিন্তাকে শ্রদ্ধা করেছে বলেই কোনো বিশেষ দল-মত-গোষ্ঠী নয়, মানবজমিন  হয়েছে সর্বস্তরের পাঠকের নিজস্ব দৈনিক। আস্থা, নির্ভরযোগ্যতা ও বিশ্বাসের সংবাদমাধ্যম।

মানুষের চিন্তা ও বোধের সারথী। তথ্যের নির্ভরশীল সঙ্গী। বিনাশে, সংকটে, সমস্যায় মানবজমিন আশা-জাগানিয়া স্পন্দনে মানুষকে দিতে চেয়েছে পথের দিশা। প্রতিদিন পাঠকের সামনে তথ্যের অধিকার নিয়ে চিন্তার সহযাত্রী হয়ে এসেছে মানবজমিন। বাংলাদেশের অপার অর্থনৈতিক সুযোগ ও সম্ভাবনা, প্রাকৃতিক বৈচিত্র্য এবং জনজীবনের বিশালতাকে অনুঘটকের মতো প্রতিনিয়ত উৎসাহিত করেছে ইতিবাচকতার অভিমুখে। স্বকীয় যোগ্যতায়, দ্রুততায়, দক্ষতায়, নিরপেক্ষতায়, অগ্রগণ্যতায় ও কৃতিত্বে এগিয়ে গেছে একুশটি বছর।  পাঠকের আস্থা ও বিশ্বাসের শক্তিই মানবজমিন-এর অন্তহীন কর্মপ্রচেষ্টাময় পদযাত্রার সাহসিক প্রেরণা।

মহান একুশের মাসে জন্ম নেয়া মানবজমিন এ পর্যন্ত অর্জিত স্বর্ণালি-অভিজ্ঞতায় সর্বদা সত্য ও সাহসের প্রতীক হয়ে ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যেতে চায়। পেশাগত দায়িত্বের সঙ্গে মানবিক দায়িত্ববোধের রাঁখিবন্ধনে মানবজমিন নিজেকে একটি স্বর্ণালী পালকের মতো প্রতিস্থাপন করতে চায়। পাঠকের ভালোবাসা আর আত্মপ্রত্যয়ের  মিলিত শক্তিতেই এগিয়ে যাবে মানবজমিন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর