ইউরোপীয় ইউনিয়নের কালো টাকার দেশ হিসেবে তালিকাভুক্ত হয়েছে সৌদি আরব। অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন রোধে সক্ষমতা প্রমাণ না করতে পারায় এই তালিকাভূক্ত হলো সৌদি আরব, পানামা, নাইজেরিয়াসহ নতুন সাতটি দেশ। বুধবার ইউরোপীয় ইউনিয়ন এই প্রস্তাবিত তালিকা প্রকাশ করে। এর আগে থেকেই তালিকায় ১৬টি দেশের নাম ছিল। এই নিয়ে কালো টাকার তালিকায় থাকা দেশের সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৩টিতে। এ খবর দিয়েছে ডয়েচে ভেলে।
সৌদি আরব, পানামা, নাইজেরিয়া ছাড়াও নতুন যুক্ত হওয়া দেশগুলোর মধ্যে আছে লিবিয়া, বতসোয়ানা, ঘানা, সামোয়া, বাহামা এবং যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে থাকা চার রাজ্য- আমেরিকান সামোয়া, ইউএস ভার্জিন আইল্যান্ডস, পুয়ের্তো রিকো ও গুয়াম। আগের তালিকা থেকে বাদ পড়েছে কেবল বসনিয়া, গায়ানা, লাওস, উগান্ডা ও ভানুয়াতু।
তবে আফগানিস্তান, উত্তর কোরিয়া, ইথিওপিয়া, ইরান, ইরাক, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, সিরিয়া, ত্রিনিদাদ অ্যান্ড টোবাগো, তিউনিসিয়া ও ইয়েমেন আগের মতোই তালিকাতে বহাল আছে। ইইউয়ের বিচার বিষয়ক কমিশনার ভেরা জোরুভা নতুন এ তালিকাটি প্রস্তাব করেছেন। তিনি বলেন, ইউরোপ ব্যবসার জন্য উন্মুক্ত। কিন্তু এতটাই বোকা নয় যে অর্থ পাচার নিয়ন্ত্রণে ব্যর্থ ও জঙ্গি অর্থায়নে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে সম্পর্ক অব্যাহত রাখবে।
উল্লেখ্য নিজেদের অর্থ ব্যবস্থায় কালো টাকার উপস্থিতি বন্ধ করতে কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে যাচ্ছে ইইউ। একইসঙ্গে জঙ্গিবাদে অর্থায়ন বন্ধ করতেও বেশ তৎপর এই জোট। তারই জের ধরে এই তালিকা ঘোষণা করেছেন ভেরা জোরুভা। কালো তালিকাভুক্ত হওয়া এই দেশগুলোর সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনৈতিক লেনদেন সংকটাপূর্ণ হয়ে উঠবে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে প্রস্তাবিত তালিকাটি এখনো কমিশনের সবার পূর্ণাঙ্গ অনুমোদন পায়নি। প্রস্তাবিত এ তালিকাকে স্বীকৃতি দিতে জোটভুক্ত ২৮টি দেশ সর্বোচ্চ দু'মাস সময় পাবে। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে চাইলে তারা তালিকাটিকে প্রত্যাখ্যানও করতে পারে বলে জানিয়েছে কমিশন। এদিকে কালো তালিকাভুক্তির প্রস্তাবিত তালিকায় নাম উঠে আসায় তীব্র ক্ষোভ প্রকাশ করেছে সৌদি প্রশাসন। সৌদি অর্থমন্ত্রী মোহাম্মদ আল জাদান বলেন, এ ধরনের তালিকাভুক্তি সৌদি আরবের জন্য ভীষণ অসম্মানের। তার দেশ অর্থ পাচার রোধ ও জঙ্গি অর্থায়ন রুখতে কঠোর পদক্ষেপ নিয়ে আসছে। ভবিষ্যতেও এটি অব্যাহত থাকবে। এদিকে সৌদি আরবের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্কযুক্ত দেশ বৃটেন এই তালিকায় বিস্ময় প্রকাশ করেছে। একইসঙ্গে উদ্বেগও প্রকাশ করে দেশটি।