কালো টেপ মোড়ানো একটি বস্তু। পড়ে ছিল চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিন অফিসের সামনে। এটাকে বোমা ভেবে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ক্যাম্পাসে। ডাকা হয় পুলিশ। আড়াই শতাধিক পুলিশ হাজির হয় ক্যাম্পাসে। বিপুল পরিমাণ পুলিশের উপস্থিতি আতঙ্ক বাড়িয়ে দেয় আরো কয়েক গুণ।
আতঙ্কের পারদ যখন তুঙ্গে ওঠে, তখন ক্যাম্পাসে এসে হাজির হয় চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট। এ সময় নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেয়া হয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত-কর্মচারীদের।
পরে বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের সদস্যরা কালো টেপ ও তার কেটে সরানোর পর দেখা যায়, এটি শুধু একটি বেগুন বৈ কিছুই নয়। শুক্রবার বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিটের পাঁচ সদস্যের একটি টিম এতে অংশ নেন। তবে, বেগুনটি সাদা না কালো তা জানা যায়নি। পরে বিষয়টি নিয়ে হাস্যরসের সৃষ্টি করে। আর এর আগে ঘটে যায় লঙ্কাকাণ্ড।
হাটহাজারী থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, বেগুনের মধ্যে তার ঢুকিয়ে কেউ বোমা সদৃশ্য বস্তু তৈরি করে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে এ কাজ করেছে। তবে কারা করেছে তাদের খুঁজে বের করতে মাঠে নেমেছে পুলিশ।
ওসি জানান, বৃহস্পতিবার দিনগত রাত ১০টার দিকে চবির আইন অনুষদের ডিনের কার্যালয়ের সামনে বোমা সদৃশ্য বস্তু পড়ে থাকতে দেখে বিশ্ববিদ্যালয় কর্মচারীরা পুলিশকে খবর দেয়। বিশ্ববিদ্যালয় ফাঁড়ির পুলিশ ঘটনাস্থল ঘিরে রেখে হাটহাজারী থানা পুলিশকে খবর দেয়।
হাটহাজারী থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে যাওয়ার পর চট্টগ্রাম জেলা পুলিশকে বিষয়টি জানানো হয়। আর সারা রাত বোমাটি পাহারা দিয়ে রাখা হয়। শুক্রবার সকালে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে চট্টগ্রাম জেলার আড়াই শতাধিক পুলিশের উপস্থিতি ঘটে। এতে পুরো বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে অবস্থানরত সকল কর্মচারী-কর্মকতাদের সরিয়ে নেয়া হয়। এরপর বেলা ১১টার দিকে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট এসে বোমাটির ওপরের কালো টেপ ও তার কেটে নিষ্ক্রিয় করার পর বলা হয় এটি শুধু একটি বেগুন।
ওসি বলেন, বেগুনের মধ্যে তার ঢুকিয়ে বোমার মতো করে কেউ এটা তৈরি করেছিল। যা দেখতে অবিকল হ্যান্ডগ্রেনেডের মতো। যার কারণে পুলিশ কর্মকর্তারা এটিকে তাজা বোমা মনে করে সারা রাত পাহারা দিয়ে ঘিরে রেখে নিরাপত্তা বলয় সৃষ্টি করে।
এ ঘটনায় পুলিশ প্রশাসন ক্ষুব্ধ। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করতে চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার নুরে আলম মিনা নির্দেশ দিয়েছেন বলে জানান ওসি বেলাল উদ্দিন জাহাঙ্গীর। উল্লেখ্য, গত বুধবার দুপুরে সীতাকুণ্ড পৌরসভা এলাকায় উপমহাদেশের সনাতন সম্রদায়ের অন্যতম তীর্থস্থান ভোলাগিরি আশ্রমের সামনে থেকে পরিত্যক্ত অবস্থায় একটি তাজা বোমা উদ্ধার করা হয়। এটিতেও মানুষ বিধ্বংসী কোনো বস্তু না থাকলেও বিস্ফোরণে আতঙ্ক ছড়ানোর মতো যথেষ্ট উপাদান ছিল বলে জানান চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ।