মিসরে সংবিধানের একটি খসড়া সংশোধনী পার্লামেন্টে সংখ্যাগরিষ্ঠের ভোটে পাস হয়েছে। এতে প্রেসিডেন্ট আব্দেল ফাত্তাহ আল সিসিকে ২০৩৪ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকার সুযোগ দেয়া হয়েছে। অর্থাৎ তিনি নির্ধারিত মেয়াদের পরেও অতিরিক্ত ১২ বছর দেশ শাসন করবেন। একই সঙ্গে বিচারক নিয়োগসহ বেশ কিছু ক্ষেত্রে তার ক্ষমতা আরো বাড়ানো হয়েছে। বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, ২০২২ সালে প্রেসিডেন্ট হিসেবে সিসি’র দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ হবে। মিসরের সংবিধান অনুসারে, প্রেসিডেন্টের মেয়াদ চার বছর। আর কোনো ব্যক্তি দুই বারের বেশি প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে পারবে না। দ্বিতীয় মেয়াদ পূর্ণ হওয়ার পর নিয়ম অনুসারে সিসিকে প্রেসিডেন্টের পদ ছাড়তে হতো।
কিন্তু তার আগেই নির্ধারিত মেয়াদের পরেও নিজের ক্ষমতায় থাকা নিশ্চিত করতে সংবিধান সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছেন সেনাপ্রধান থেকে রাষ্ট্রনায়কে পরিণত হওয়া সিসি। বৃহস্পতিবার ৫৯৬ সদস্যবিশিষ্ট পার্লামেন্টের ৪৮৫ সদস্য খসড়া সংশোধনীর পক্ষে ভোট দেন। পরে এই খসড়া চূড়ান্ত আইন হিসেবে আবারো পার্লামেন্টে ভোটাভুটির জন্য তোলা হবে। চূড়ান্তভাবে পার্লামেন্টের অনুমোদন লাভের পর এই ইস্যুতে গণভোট অনুষ্ঠিত হবে। ধারণা করা হচ্ছে, এই সংশোধনীর সব আনুষ্ঠানিকতা সফলভাবেই সম্পন্ন হবে। পার্লামেন্টে প্রেসিডেন্টের অনুসারীরা যুক্তি দেখিয়েছেন, অর্থনৈতিক সংস্কার ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সম্পন্ন করার জন্য সিসিকে আরো দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা দরকার। এই সংশোধনীতে প্রেসিডেন্টের মেয়াদ ও কর্তৃত্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি দেশের সংবিধানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য সেনাবাহিনীকে বিস্তর ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। এছাড়া, অন্যান্য সংশোধনীর মধ্যে রয়েছে- দ্বিতীয় পার্লামেন্টারি চেম্বার প্রবর্তন, পার্লামেন্টে ২৫% নারী কোটা চালু ও তরুণ, সংখ্যালঘু কপটিক খ্রিষ্টান ও প্রতিবন্ধীদের জন্য পর্যাপ্ত সুবিধা নিশ্চিত করা।
তবে সমালোচকরা বলছেন, সিসির অবস্থান আরো মজবুত ও দীর্ঘ করার জন্যই এই সংশোধনী আনা হয়েছে। মিসরের ১১টি মানবাধিকার সংগঠন এক বিবৃতিতে প্রেসিডেন্ট সিসির কর্তৃত্ববাদী শাসনের কঠোর সমালোচনা করে।
উল্লেখ্য, গত বছরের নির্বাচনে অবিশ্বাস্যভাবে ৯৭ শতাংশ ভোট পেয়ে দ্বিতীয়বারের মতো প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। যদিও এই নির্বাচনে সমালোচকরা গুরুতর সব অনিয়মের অভিযোগ তুলেছেন।