একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগে হাইকোর্টে বিএনপি-ঐক্যফ্রন্ট প্রার্থীদের মামলার বিষয়ে আওয়ামী লীগ বিব্র্রত নয় বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি বলেন, এ বিষয়টি নির্বাচন কমিশন দেখবে। গতকাল ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন। মামলার বিষয়ে আওয়ামী লীগ কী ভাবছে- এমন প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিষয়টি আমলে নেয়ার কিছু নেই। নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে সে ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয়ার সম্পূর্ণ এখতিয়ার নির্বাচন কমিশনের। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তের পর ট্রাইব্যুনালে যদি কেউ মামলা করেন, এ বিষয়ের দায় বর্তায় নির্বাচন কমিশনের ওপর। নির্বাচন কমিশন এখন আদালতে গিয়ে মোকাবিলা করবে। আইনি প্রক্রিয়ার মুখোমুখি হবে।
এটাই নিয়ম। এখানে তাদের (আওয়ামী লীগ) কিছু করার নেই। বিষয়টা সম্পূর্ণভাবে নির্বাচন কমিশনের এখতিয়ার।
জামায়াতের এক শীর্ষ নেতার দল থেকে পদত্যাগ এবং মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার জন্য দলটি ক্ষমা চাইলে আওয়ামী লীগ বিষয়টি কীভাবে নেবে- এ ব্যাপারে সাংবাদিকেরা জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, ক্ষমা চাওয়ার পরই বিষয়টি নিয়ে ভাববেন তারা। জামায়াত নিষিদ্ধের বিষয়টি আদালতের ওপর নির্ভর করছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ওবায়দুল কাদের বলেন, উপজেলা নির্বাচনে না যাওয়ার বিষয়ে বিএনপি দলীয় সিদ্ধান্ত নিলেও দলটির স্থানীয় পর্যায়ের নেতারা তা মানবেন না। স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে হলেও বিএনপি নির্বাচনে আসবে। অপর এক প্রশ্নে তিনি বলেন, উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে দল মনোনীত বা বিদ্র্রোহী প্রার্থী যেই জিতুক, তিনি আওয়ামী লীগেরই হবেন। বিএনপি নির্বাচনে অংশ না নিলে যদি নৌকার প্রার্থী না জেতে, তাহলে বিদ্রোহী প্রার্থী জিতবে। তিনিও তো আওয়ামী লীগেরই। ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি অংশ না নিলে যদি এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের অভ্যন্তরীণ বিবাদ বাড়ে, তাতে বিএনপির লাভ কি? রেজাল্ট তো আর তাদের পক্ষে আসবে না।
উপজেলা চেয়ারম্যান পদ শেষ পর্যন্ত উন্মুক্ত করা হবে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, উপজেলায় ভাইস চেয়ারম্যান পদগুলো উন্মুক্ত করে দেয়া হয়েছে, যেন সেখানে একটি প্রতিদ্বন্দ্বিতার সুযোগ থাকে। কিন্তু উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আমরা আমাদের নৌকা প্রতীক দিয়েছি, উপজেলা চেয়ারম্যান পদ আমরা উন্মুক্ত করিনি। আর যেহেতু ওয়ার্ডের ক্ষেত্রে দলীয় প্রতীকে নির্বাচন হচ্ছে না, সেটাও উন্মুক্ত থাকতেই পারে। উপজেলা নির্বাচনে কেউ বিদ্রোহী প্রার্থী হলে তাকে দল থেকে বহিষ্কার করা হবে কিনা প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, প্রার্থী হওয়ার আগে, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের আগে আমি কাউকে বিদ্রোহী প্রার্থী বলতে পারি না।
আমরা দেখছি, কারা কারা নির্বাচনে প্রার্থিতা ঘোষণার পরও বিদ্রোহ করে। এমন কেউ করলে বিষয়টি আমরা দেখবো। এর জন্য প্রার্থিতা প্রত্যাহার পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে। সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও পানিসম্পদ উপমন্ত্রী এনামুল হক শামীম, আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক আব্দুস সাত্তার, কার্যনির্বাহী সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।