× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২০ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ৭ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১১ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আইএসের সেই শামিমাকে নিয়ে বৃটেনে তুমুল বিতর্ক

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৫ বছর আগে) ফেব্রুয়ারি ১৬, ২০১৯, শনিবার, ১১:৪৩ পূর্বাহ্ন

জঙ্গি গোষ্ঠী আইএসে যোগ দেয়া মুসলিম যুবতী শামিমা বেগমকে নিয়ে লন্ডনে নতুন করে বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে। তিনি এখন অন্তঃসত্ত্বা। তার দাবি অনুযায়ী, তিনি ৯ মাসের অন্তঃসত্ত্বা। তিনি আরো তিনজন মুসলিম কিশোরিকে নিয়ে লন্ডন থেকে পালিয়ে গিয়ে সিরিয়ায় আইএসে যোগ দিয়েছেন। বর্তমানে তিনি একটি শরণার্থী শিবিরে অবস্থান করছেন। সেখান থেকে লন্ডনে ফিরতে চাইছেন শামিমা। তিনি চাইছেন, তার সন্তান লন্ডনেই জন্মগ্রহণ করুক। কিন্তু তাকে কি বৃটেনে ফিরতে দেয়া উচিত? এ নিয়ে তুমুল বিতর্ক বৃটেনে।
অনেকেই তার পক্ষে মত দিচ্ছেন। আবার অনেকে বিপক্ষে। তাকে যারা সমর্থন করছেন তার মধ্যে রয়েছেন কুখ্যাত গুয়ানতানামো বে বন্দিশিবিরের সাবেক বন্দি বৃটিশ নাগরিক মোয়াজ্জম বেগ। তিনি বলেছেন, শামিমাকে বৃটেনে আসতে দেয়া উচিত। কারণ, তিনি অন্তঃসত্ত্বা দশার শেষ ধাপে রয়েছেন এবং তিনি কোনো রকম হুমকি নন।

শামিমা বেগমের এখন বয়স ১৯ বছর। তিনি গ্রিন অ্যান্ড বেথনেল এলাকা থেকে দুই সহশিক্ষার্থীকে সঙ্গে নিয়ে চার বছর আগে পূর্ব লন্ডন থেকে পালিয়েছিলেন ২০১৫ সালে। সিরিয়ায় যাওয়ার পর তিনি আইএসের এক বিদেশী যোদ্ধাকে বিয়ে করেন। তার এর আগে দুটি সন্তান হয়েছিল। তারা মারা গেছে। শামিমা বলেছেন, যদি সিরিয়ায় শরণার্থী শিবিরে তার সন্তান জন্ম নেয় তাহলে তাকে হত্যা করা হতে পারে। এ জন্য সন্তানের নিরাপত্তার জন্য বৃটেনে ফিরতে চান। তাকে ক্ষমা করে দেয়ার জন্য লন্ডনে বসবাসকারী তার পরিবার সরকারের কাছে করুণা ভিক্ষা করেছে। তবে সরকার ইঙ্গিত দিয়েছে যে, তাকে সেই সুযোগ দেয়া হবে না। একটি টেলিভিশন চ্যানেলে ‘গুড মর্নিং বৃটেন’ অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন মোহাজ্জম বেগ। তিনি এ সময়ে শামিমার পক্ষে কথা বলেছেন। শামিমার ভবিষ্যত নিয়ে যখন চারদিকে বিতর্ক তখন তিনি তাকে বৃটেনে ফিরতে দেয়ার অনুরোধ করেছেন।


উল্লেখ্য,
মোয়াজ্জম বেগ ২০০২ সাল থেকে ২০০৫ সাল পর্যন্ত গুয়ানতানামো বে বন্দিশিবিরে বন্দি ছিলেন। তিনি ওই অনুষ্ঠানে বলেছেন, আমি ওই (গুয়ানতানামো বে) ববন্দিশিবিরে ১৪ থেকে ১৫ বছর বয়সী টিনেজারদের সঙ্গে অবস্থান করেছিলাম। তাদের অনেকেই গুরুত্বর মানসিক আঘাতপ্রাপ্ত। তাদের কেউ কেউ পশ্চিমা নাগরিক। তাদের জীবন সেখানেই শেষ হয়ে গেছে। কারণ, তাদের পিতামাতার সিদ্ধান্তের কারণে তাদের জীবন এভাবে শেষ হয়ে গেছে। তাদেরকে ফেরত নেয় নি। আমি বলছি, তিনি (শামিমা) অনুশোচনাহীন। কিন্তু দ্য টাইমস পত্রিকার সংক্ষিপ্ত সাক্ষাতকারে তা কিভাবে নির্ধারণ করা হয়েছে? তিনি তো এটাও বলেছেন, ইসলামিক স্টেট (আইএস) যে নির্যাতন চালিয়েছে তার কারণে তারা বিজয় অর্জনের দাবিদার হতে পারে না।
এখানে প্রশ্ন হলো, এই যুবতী কি কোনো হুমকি হবে? ভাল কথা, তিনি তো এখন এই মুহূর্তে ‘হেভিলি প্রেগনেন্ট’। যদি তিনি ফেরত আসেন, তাহলে তিনি একটি সন্তান প্রসব করবেন।

ওদিকে ২০০১ সালে বৃটিশ সাংবাদিক ইয়োন্নি রিডলি’কে আটক করেছিল তালেবানরা। পরে ওই সাংবাদিক ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম গ্রহণ করেছিলেন। সেই সাংবাদিকও এবার এই শামিমা বেগমের পক্ষ অবলম্বন করেছেন। তিনি শামিমার পক্ষ নিয়ে বলেছেন, আমরা একটি শিশুকে নিয়ে কথা বলছি। শামিমা তো বলেছেন, তিনি কোনো অনুশোচনা করেন না। কিন্তু সবাইকে স্মরণ করা উচিত যে, তিনি যে শরণার্থী শিবিরে আছেন সেখানে এখন আরো ৩৯০০০ মানুষ রয়েছে। তার ওপর এখন কতগুলো চোখ তা কে জানে। যুদ্ধের ফলে শামিমা নির্যাতিত। আমরা জানি না, তার কি অবস্থা। আমরা জানি না তিনি আতঙ্কিত বোধ করছেন কিনা। অথবা তিনি হুমকিতে রয়েছেন কিনা। আমাদের এটাও স্বীকার করতে হবে যে, তিনি ফিরে এলে গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও সত্যিকার সহায়তা পাবে। আমাদেরকে বুঝতে সাহায্য করবে যে, কোনো অবস্থায় তিনি পালিয়ে আইএসে যোগ দিতে গিয়েছিলেন।

যদি তাকে উগ্রবাদী বানানো হয়ে থাকে, তাহলে তাকে উগ্রবাদ থেকে স্বাভাবিক পথেও আনা যাবে। তিনি একজন বৃটিশ। তিনি আমাদের সমস্যা। আমাদের দেশে একটি চমৎকার আইনি ব্যবস্থা রয়েছে। আর এখন আমরা বিশে^র কাছে কি বার্তা দিচ্ছি? আমরা বিশে^র কাছে বার্তা দিচ্ছি যে, বিশ^কে আমরা আমাদের সমস্যার ভাগাড়ে পরিণত করছি। এই সমস্যার মালিকানা নিতে হবে বৃটেনকে।


সাবেক গ্লামার মডেল কিম্বারলি মাইনারসকে একবার আইএসের সদস্য সংগ্রহকারীরা ব্রেইনওয়াশ করে ফেলেছিল। সেই কিম্বারলি ‘দিস মর্নিং’ অনুষ্ঠানে বলেন, যেহেতু শামিমা বেগম অনুশোচনা দেখাচ্ছেন তাই তাকে বৃটেনে ফিরতে দেয়া উচিত। তিনি এখনও বয়সে অনেক তরুণী। তিনি বলেন, যখন আমাকে আইএসে যোগ দেয়ানোর চেষ্টা করা হয়েছিল তখন আমি ছিলাম প্রাপ্ত বয়স্কা। বিষয়টি ভালভাবে বুঝতে আমার দু’বছর সময় লেগেছে। তখনই আমি বুঝতে পেরেছি আমার ব্রেইন ওয়াশ করা হয়েছে। আমি প্রায় চলে গিয়েছিলাম সিরিয়ায়। যখন এমন অবস্থায় পড়েন একজন মানুষ তখন তিনি বুঝতে পারেন না তিনি কি করতে চলেছেন। আমি তো এখনও বুঝতে পারি না কি ঘটেছিল। তাই শামিমার বাচ্চাটাকে শাস্তি দেয়া উচিত হবে না।


তবে শামিমার প্রতি কোনো সহানুভূতি দেখান নি ম্যাসার গিফোর্ড। তিনি আইসিসের বিরুদ্ধে কুর্দি সেনাদের সঙ্গে যুদ্ধ করতে সিরিয়া গিয়েছিলেন। যেহেতু আমি আইসিসের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে সংকল্পবদ্ধ ছিলাম, আর সেই আইসিসই শামিমাকে উদ্বুদ্ধ করেছে। তিনি দেশ ছেড়ে যেতে চেয়েছেন আইসিসকে সমর্থন করতে। আমরা যা দেখেছি, শামিমা তার সবই করেছে। খ্রিস্টান ও ইয়াজিদিদের হত্যাকা-ের আইসিস মেশিনের অংশ ছিলেন শামিমা। তার এসব কর্মকান্ডের জন্য শামিমার কোনো অনুশোচনা নেই। তিনি যে এখন কম বিপদজনক তার কোনো প্রমাণ নেই।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর