স্বাধীনতাবিরোধী ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়ার কথা বলে জামায়াতে ইসলামী নতুন নামে আসার কৌশল নিতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। বলেন, এটা তাদের একটা কৌশল হতে পারে। বাস্তবতার আলোকে নতুন কোনো চিন্তাভাবনায় হয়তো তারা এসেছে। একাত্তরে যুদ্ধাপরাধের বিষয় নিয়ে ৪৭ বছর পর ক্ষমা চাওয়ার বিষয় কেন এলো? সেটাও কোনো কৌশল কি না, ভেবে দেখতে হবে। আজ সকালে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।
শুক্রবার জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ব্যারিস্টার দলকে দেশের স্বাধীনতার বিরোধিতা করা ও মুক্তিযুদ্ধের ভূমিকার জন্য ক্ষমা চাওয়ার পরামর্শ দিয়ে পদত্যাগ করেছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, এখনও তারা ক্ষমা চায়নি। এইটা স্পেকুলেশনের পর্যায়ে, আলোচনার পর্যায়ে, গুজব-গুঞ্জনের পর্যায়ে সীমিত। এখনও তারা আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চায়নি।
আমি গতকালও বলেছি, তারা ক্ষমা চাওয়ার আগে কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
তবে ক্ষমা চাইলেও মানবতাবিরোধী অপরাধের যে বিচার প্রক্রিয়া চলছে, তা বন্ধ হবে না বলে জানান সরকারের এই সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, এখনও তাদের কোনো বিষয়ই স্পষ্ট না। তাদের ইনটেনশন স্পষ্ট হোক, তারপর এ নিয়ে মন্তব্য করা যাবে।
জামায়াত নতুন নামে এলে আওয়ামী লীগ কী প্রতিক্রিয়া দেখাবে এমন প্রশ্নের উত্তরে কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ কোনো সিদ্ধান্ত এখনও নেয়নি। নতুন নামে পুরনো, নতুন বোতলে পুরনো মদ যদি আসে, তাহলে পার্থক্যটা কোথায়? জিনিস তো একটাই! তাদের আদর্শ তো ঠিক থাকবে।
সম্প্রতি একাধিক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী তার দায়িত্ব ছেড়ে দিয়ে গ্রামে যাওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক বলেন, তিনি এর আগেও বিদায় নিতে চেয়েছিলেন। আমাদের দলের কাউন্সিলর ও নেতাকর্মীদের চাপের মুখে তিনি ঘোষণা দিয়েও সরে যেতে পারেননি। আসলে তিনি অনেকদিন ধরেই বলছেন, আর কত! কিন্তু বাস্তবতা হলো এখনও শেখ হাসিনার কোনো বিকল্প আমাদের পার্টিতে নেই এবং তার কোনো বিকল্প বাংলাদেশের সমসাময়িক রাজনৈতিক অঙ্গনেও নেই।
তিনি বলেন, রাজনীতিবিদরা আগামী নির্বাচনের কথা ভাবেন। কিন্তু শেখ হাসিনা ভাবেন পরবর্তী প্রজন্ম নিয়ে। তার সেই ভাবনাটা সুদূরপ্রসারী। সেটা ২০৪১ সালের সীমারেখায় নেই, ২১০০ সালের ডেল্টা প্ল্যানে চলে গেছে। গত ৪৩ বছরে দক্ষতায়, যোগ্যতায়, সততায় শেখ হাসিনাকে কেউ অতিক্রম করতে পারেনি। এই পাঁচ বছরে তিনি যদি শারীরিকভাবে সুস্থ ও সবল থাকেন, আমার মনে হয় তার বিকল্পের চিন্তাভাবনা নেই। পাঁচ বছর পর শেখ হাসিনা রাষ্ট্র পরিচালনায় অক্ষম হবে, অসমর্থ হবেন, এটা আমরা এই মুহূর্তে ভাবতেই পারি না। আর তিনি ছাড়তে চাইলেও সময় পরিস্থিতি তাকে ছাড়বে কি না, নেতাকর্মীরা তাকে ছাড়বে কি না সেটাও দেখতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক আবদুুস সবুর, কার্যনির্বাহী সদস্য এস এম কামাল হোসেন, আনোয়ার হোসেনসহ অন্যরা।