× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের কেন এত গুরুত্ব পাকিস্তানে!

বিশ্বজমিন

মানবজমিন ডেস্ক
(৫ বছর আগে) ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০১৯, রবিবার, ১২:৩১ অপরাহ্ন

সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান আজ দু’দিনের সফরে পাকিস্তান আসছেন। এ জন্য এলাহি কান্ড পাকিস্তানে। তাকে উষ্ণ আতিথেয়তা জানাতে প্রস্তুতি শেষ। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। তাকে এতটা গুরুত্ব দেয়ার কারণ পাকিস্তানে সৌদি আরবের কয়েক শত কোটি ডলার বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতি। এক্সপ্রেস ট্রিবিউন লিখেছে, ক্রাউন প্রিন্সের সঙ্গে এই সফরে থাকছেন উচ্চ শক্তিসম্পন্ন প্রতিনিধি দল। এর মধ্যে রয়েছেন রাজপরিবারের সদস্য, গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী ও নেতৃস্থানীয় ব্যবসায়ীরা।
২০১৭ সালের এপ্রিলে সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স হিসেবে আসীন হন মোহাম্মদ বিন সালমান।
তারপর এটাই পাকিস্তানে তার প্রথম সফর। এই সফরে তিনি সাক্ষাত করবেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ড. আরিফ আলভি, প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান, সেনা প্রধান জেনারেল কমর জাভেদ বাজওয়া ও সরকারের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে। দুই দেশের মধ্যে পার্লামেন্টারি সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়েও মোহাম্মদ বিন সালমানের সঙ্গে সাক্ষাত করার কথা পাকিস্তানের একটি সিনেট প্রতিনিধি দলের।
ক্রাউন প্রিন্স ও তার দলবলকে স্বাগত জানাতে বিমানবন্দরে উপস্থিত থাকার কথা পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের। প্রাইম মিনিস্টার হাউসে তাকে দেয়া হবে লাল গালিচা সংবর্ধনা। দেয়া হবে গার্ড অব অনার। এই সফরের সময় সৌদি আরব ও পাকিস্তানের মধ্যে অনেক চুক্তি ও সমঝোতা স্বারক স্বাক্ষরিত হবে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে। সহযোগিতার আরো ক্ষেত্র নিয়ে এ সময়ে আলোচনা হবে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ড. মুহাম্মদ ফয়সাল বলেছেন, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্সের এই সফর জোরালোভাবে ফুটিয়ে তোলে যে, মানব ও প্রাকৃতিক সম্পদের ক্ষেত্রে কতটা গুরুত্বপূর্ণ পাকিস্তান। এর মধ্য দিয়ে পাকিস্তান নিজেকে শক্তিশালী ও গতিশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে প্রকাশ করে। এক টুইট বার্তায় তিনি লিখেছেন, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমান ও পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের নেতৃত্বে এই সফরে শুরু হবে সৌদি-পাকিস্তান সুপ্রিম কো-অর্ডিনেশন কাউন্সিলের। এই কাউন্সিলের লক্ষ্য হবে, পারস্পরিক সম্মতি আছে এমন লক্ষ্য অর্জনের জন্য কার্যকর দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা।
পরে আরেকটি টুইটে তিনি বলেছেন, পাকিস্তান ও সৌদি আরব এ সময়ে এক্সিকিউটিভ প্রোগ্রাম ফর মিডিয়া কো-অপারেশন নামে একটি চুক্তিতে স্বাক্ষর করবে। এর মধ্য দিয়ে তথ্য ও মিডিয়া বিষয়ে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা সমৃদ্ধ ও শক্তিশালী করা হবে। স্বাক্ষরিত হবে একটি সমঝোতা স্বারক। তার অধীনে একটি সমন্বিত কমপ্লেক্স প্রতিষ্ঠা করা হবে, যেখাবে পেট্রোকেমিক্যাল পরিশোধন করা হবে।
এর পাশাপাশি দুই দেশের ব্যবসায়ীরা বেসরকারি খাতে সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনা করবেন। পাকিস্তানের তথ্যমন্ত্রী ফাওয়াদ চৌধুরী বলেছেন, সৌদি আরবের ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদ বিন সালমানের সফর উপলক্ষে সার্বিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিশ্চিত করা হয়েছে। সৌদি আরবের বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে দেয়া সাক্ষাতকারে পাকিস্তানের এই মন্ত্রী বলেছেন, ক্রাউন প্রিন্স মোহাম্মদকে পাকিস্তানের সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার নিশান-ই পাকিস্তান দেয়া হবে। তিনি আরো বলেন, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান সম্প্রতি সৌদি আরব সফর করেছেন। এর ফলে দুই দেশের সম্পর্ক শক্তিশালী হয়েছে। সৌদি ক্রাউন প্রিন্সের দৃষ্টিভঙ্গির প্রতি সমর্থন রয়েছে পাকিস্তানি নাগরিকদের। পাকিস্তান ও সৌদি আরবের মধ্যে অভিন্ন অবস্থান গড়ে তোলা হবে ভবিষ্যতে।
ফাওয়াদ চৌধুরী বলেন, সৌদি আরবের সঙ্গে শক্তিশালী কৌশলগত অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে চায় পাকিস্তান। এটা হবে একটি ঐতিহাসিক সম্পর্ক। সহনশীলতা প্রদর্শনে পাকিস্তান সৌদি আরবের তথ্য মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ সহযোগিতা করে যাচ্ছি।
উল্লেখ্য, ক্রাউন প্রিন্সের এই সফরে সহযোগিতার ক্ষেত্রে দুই দেশের সব রকম বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। কঠিন সময়ে বা চ্যালেঞ্জের সময়ে সব সময়ই পাকিস্তানের পাশে দাঁড়িয়েছে সৌদি আরব। এক্ষেত্রে তারা উদারভাবে সমর্থন দিয়ে গেছে। ভ্রাতৃত্বপ্রতীম এই দুটি দেশের একের সঙ্গে অন্যের রয়েছে কৌশলগত অংশীদারিত্ব। সম্প্রতি স্টেট ব্যাংক অব পাকিস্তানে ৩০০ কোটি ডলার জমা করেছে সৌদি আরব। প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান যে সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন সম্প্রতি তাতে ভারসাম্য রাখার জন্য এই অর্থ জমা করা হয়েছে। এ ছাড়া ৩০০ কোটি ডলার পর্যন্ত তেল আমদানিতে সম্মতি দিয়েছে সৌদি আরব। গোধারে একটি তেল পরিশোধনাগার নির্মাণে দুই দেশের মধ্যে সমঝোতা হয়েছে। এ প্রকল্প সম্পন্ন করবে সৌদি আরব। এর ফলে  সৌদি বিনিয়োগের অংক দাঁড়াবে ১০০০ কোটি ডলার।
এখানেই শেষ নয়। পাকিস্তানের সবচেয়ে বেশি অভিবাসী রয়েছেন সৌদি আরবে। প্রায় ২৬ লাখ সৌদি নাগরিক বসবাস করেন সৌদি আরবে। পাকিস্তানের সর্বোচ্চ রেমিটেন্সের উৎস এই দেশটি। গত বছর তারা এ খাত থেকে পেয়েছে ৪৮০ কোটি ডলার।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর