আলেকজান্ডার এবং ক্যালডার যমজ ভাই-বোন। কিন্তু তাদের বাবা একজন নন বরং ভিন্ন দুই বৃটিশ ব্যক্তি। আলেকজান্ডার হলেন সায়মনের মেয়ে, আর তার ভাই ক্যালডার হলেন গ্রিমের ছেলে। কিন্তু কিভাবে যমজ বাচ্চাদের ভিন্ন বাবা থাকা সম্ভব?
সায়মন এবং গ্রিম বার্নি-এডওয়ার্ডস যখন সিদ্ধান্ত নিলেন যে তারা বাবা হতে চান তখন তাদের সামনে এটি একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাড়ায়। কারণ তারা হাতে গোনা বৃটিশ দম্পতির একজন যারা ভিট্রো ফার্টিলাইজেশান বা আইভিএফ-গর্ভাধান পদ্ধতিতে দুইজনের থেকে একটি করে ভ্রূণ বেছে নেয়। এবং এই দুটি ভ্রূণ একই সাথে একই সময়ে একজন সারোগেট মায়ের শরীরে ইমপ্ল্যান্ট করা হয়।
দীর্ঘ এবং জটিল এই প্রক্রিয়ার লক্ষ্য ছিল পর পর দুইবারের গর্ভধারণ থেকে দুজনের ডিএনএ সম্বলিত দুটি বাচ্চা ভূমিষ্ঠ করা। তবে একটি সংস্থা একজন সারোগেট মায়ের থেকে একইসঙ্গে দুটি শিশু জন্মদানের সম্ভাবনার কথা জানান। সেই সারোগেট মাকে খুঁজে পেতেও সহায়তা করে সংস্থাটি।
সায়মন এবং গ্রিম যুক্তরাজ্যে থাকলেও এই প্রক্রিয়ায় জন্য তাদের দেশের বাইরে যেতে হয়েছিল।
বিবিসিকে সায়মন বলেন, আমরা আমাদের গর্ভাধানের চিকিৎসা করিয়েছি যুক্তরাষ্ট্রের নেভাডা অঙ্গরাজ্যের লাস ভেগাসে। এবং সেখানকার একজন সারোগেট মাকে পেয়ে যাই আমরা।
সারোগেট মায়ের শরীরে অর্ধেক সায়মন ও অর্ধেক গ্রিমের শুক্রাণু ফার্টিলাইজ করা হয়। তাদের শক্তিশালী ভ্রূণটি থেকে গর্ভধারণ করেন এই মা। আর সন্তান ভূমিষ্ঠ করা হয় কানাডায়।
সুতরাং, দুইটি ভ্রূণের মধ্যে রয়েছে একজন মা ও দুইজন ভিন্ন বাবার নমুনা। এই দুটি ভ্রুণ একই সাথে বেড়ে উঠতে থাকে সারোগেট মায়ের গর্ভের ভেতরে। কানাডার নাগরিক এই সারোগেট মায়ের নাম মেগ স্টোন। যিনি সায়মন এবং গ্রিমের সন্তান জন্ম দেয়ার ব্যাপারে রাজি হয়েছেন।
সায়মন বলেন, আমরা আমাদের সন্তান ভূমিষ্ঠ করতে কানাডাকে বেছে নিয়েছিলাম কারণ তাদের আইনি কাঠামো আমাদের পছন্দ হয়েছে। এটা অনেকটা যুক্তরাজ্যের মতোই, যেখানে সারোগেসিকে কোন ব্যবসা নয় বরং কল্যাণকর কাজ হিসেবে দেখা হয়।
কিন্তু যমজ শিশু প্রসবের ছয় সপ্তাহ আগেই দুই বাবা যুক্তরাজ্যে ফিরে আসেন। প্রতিনিয়ত কানাডা থেকে একটা ভাল খবরের প্রতীক্ষায় উৎকণ্ঠার মধ্যে থাকতেন তারা । তাদের একটাই প্রশ্ন ছিল, সন্তানের পৃথিবীর মুখ দেখা সফল হবে তো? অবশেষে তাদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে আসে প্রতীক্ষিত সেই ফোন কল। পৃথিবীর প্রথম যমজ সন্তানের ভিন্ন বাবা হন তারা।
সূত্র: বিবিসি