× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

স্ত্রী’র মামলায় থানায় স্বামীর আত্মসমর্পণ

বাংলারজমিন

সরাইল (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি
১৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, সোমবার

 স্ত্রী শেফালির (২৭) মামলা ও পরবর্তীতে নির্যাতন সইতে না পেরে মো. মনির (৩২) থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন। পুলিশকে বারবার বলছেন ‘একটু খুঁজে দেখুন, আমার নামে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা আছে। গ্রেপ্তার করুন। জেল হাজতে পাঠান। আমি সেখানে শান্তিতে থাকব।’ মনিরের এমন আত্মসমর্পণে হতবাক হয়েছেন পুলিশ। মনিরের বাড়ি উপজেলার নোয়াগাঁও গ্রামে। জনৈক পুলিশ কর্মকর্তার বক্তব্য-‘এমন ঘটনা আমার চাকরি জীবনে কখনো দেখিনি।’ খুবই সহজে হাতের কাছে পেয়ে মনিরকে গ্রেপ্তার করে থানা কাস্টডিতে নিয়ে যায় পুলিশ। গতকাল রোববার দুপুরে সরাইল থানায় এ ঘটনা ঘটেছে।

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, নোয়াগাঁও গ্রামের মাউদ মিয়ার ছেলে মো. মনির মিয়া। অভাব অনটনের সংসারে রিকশা চালিয়ে জীবন নির্বাহ করছে। ৪-৫ বছর আগে একই গ্রামের জারুল্লা হাটির অঙ্গু মিয়ার মেয়ে শেফালির সঙ্গে প্রেম করে বিয়ে হয়। এর আগেও দুটি বিয়ে করেছিল মনির। প্রথম স্ত্রী বিষ পানে আত্মহত্যা করে। তাদের রয়েছে ২ ছেলে ও ২ মেয়ে।  তারা এখন নানী ও খালাম্মার কাছে রয়েছে। দ্বিতীয় স্ত্রী স্বামীকে ফেলে চলে যায়। তাদের রয়েছে ১ ছেলে ও মেয়ে। অভাব অনটন নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে মনোমালিন্য চলে আসছিল। জেলা শহরে তারা ভাড়া বাসায় বসবাস করছে। দীর্ঘদিন আগে শেফালি স্বামী মনিরের বিরুদ্ধে নারী নির্যাতন মামলা করেছিল। ওই মামলার গ্রেপ্তারি পরোয়ানা বেরিয়েছে। পুলিশ বাড়িতে গিয়ে মনিরের বাবাকে খুঁজে। ওদিকে চুন থেকে পান খসলে শেফালি স্বামী মনিরকে অকথ্য ভাষায় গালমন্দ করে। সারা দিনের আয়ের টাকা পকেট থেকে জোর করে নিয়ে যায়। অন্য মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কের সন্দেহ করে মারধরও করে। স্ত্রী শেফালির নিয়মিত নির্যাতন, অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে মনির। কোনো উপায় না দেখে মনের দুঃখে গতকাল দুপুরে সরাইল থানায় গিয়ে হাজির হয় মনির। মনির চিৎকার করে বলে পুলিশ, আমার স্ত্রীর মামলায় আমাকে গ্রেপ্তার করে জেলে পাঠিয়ে দিন। আমি সেখানে শান্তিতে থাকব। যন্ত্রণা আর সইতে পারছি না। আমি জেলে গেলে তাকে (স্ত্রীকে) কে টাকা রোজগার করে দেয় দেখি। তার বাচ্চাসহ তাকে কে লালন পালন করবে? পুলিশ যখন গ্রেপ্তারি পরোয়ানা খুঁজে পাচ্ছিল না। তখন অতিষ্ঠ হয়ে মনির বলতে থাকে, খুঁজে দেখুন। স্যার পাবেন অবশ্যই। আমাকে গ্রেপ্তার করে বাঁচান। স্ত্রীর নির্যাতন আর সইতে পারছি না। দেড় ঘণ্টা পর পুলিশ খুঁজে পায় মনিরের গ্রেপ্তারি পরোয়ানার কাগজ। পরে আদর করে মনিরকে গ্রেপ্তার করে থানা কাস্টডিতে নিয়ে যায়। পুরো ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. নূরুল হক বলেন, আমার ১০ বছরের চাকরি জীবনে এভাবে থানায় এসে পুলিশকে অনুরোধ করে গ্রেপ্তার হওয়ার নজির এই প্রথম।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর