কোম্পানীগঞ্জে পাথরখেকোদের কবল থেকে সরকারি ভূমিসহ ভোলাগঞ্জ এলাকা রক্ষার্থে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করা হয়েছে। উপজেলার ভোলাগঞ্জ গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা মরহুম ছানাফর আলীর পুত্র মো. আতাউর রহমান ভোলাগঞ্জ গুচ্ছগ্রাম, নতুন বাজার, নতুন বাজার পাঞ্জেগানা মসজিদ, ডিসি খতিয়ানের ভূমি, এলসি ঘাট ও ১০ নম্বর নামক এলাকাসহ বিভিন্ন স্থাপনা রক্ষার্থে সিলেটের জেলা প্রশাসক বরাবর দেয়া আবেদন করেন। আবেদনে তিনি উল্লেখ করেন- সিলেটের সর্ববৃহৎ পাথর কোয়ারি কোম্পানীগঞ্জের ধলাই নদীতে দীর্ঘদিন যাবৎ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে শ্রমিকরা এসে পাথর উত্তোলন করে দিনাতিপাত করতেন। এক সময় তারা ম্যানুয়েল পদ্ধতিতে পাথর উত্তোলন করলেও বর্তমানে বোমা মেশিন নামক দানব যন্ত্র দিয়ে পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে। ফলে ধলাই নদীতে আগের মতো আর দেখা যায় না হাজার হাজার পাথর শ্রমিকদের। বোমা মেশিন দিয়ে ধলাই নদীর বুক ছিন্নভিন্ন করে দিয়েছে পাথরখেকোরা। কিন্তু বিগত ২ মাস যাবৎ ধলাই নদীর পশ্চিম পাড়ে প্রায় ৭০-৮০টি ‘সেইভ মেশিন ও লিস্টার মেশিন’ দিয়ে স্থানীয় বিএনপি নেতা পুরান ভোলাগঞ্জ গ্রামের ছবর আলীর ছেলে আলমগীর, ভোলাগঞ্জ গ্রামের আমান মিয়ার ছেলে লোকমান মিয়া, মৃত আলকাছ আলীর ছেলে কুটন মিয়া ও কাঁচা মিয়া, ছোরাব মিয়ার ছেলে বোরহান মিয়া ও ভোলাগঞ্জ (হতরি বাড়ি) গ্রামের আজির মিয়ার ছেলে জাকির হোসেন উক্ত এলাকায় অবাধে পাথর উত্তোলন করছেন। এ চক্র প্রতিদিন ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ‘সেইভ মেশিন ও লিস্টার মেশিন’ দিয়ে পাথর উত্তোলন করে এলাকা ধ্বংস করে দিচ্ছে।
নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাচ্ছে এরশাদ সরকারের দেয়া ভোলাগঞ্জ আদর্শ গ্রাম (গুচ্ছগ্রাম), নতুন বাজার, নতুন বাজার পাঞ্জেগানা মসজিদ, ১০ নম্বর নামক এলাকা, ডিসি খতিয়ানের ভূমি ও এলসি ঘাট। এলসি ঘাট থেকে প্রতি বৎসর সরকার প্রায় ৩শ’ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় করছে। আর সেই এলাকায় সেইভ মেশিন ও লিস্টার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করে সরকারি ভূমি দখল করে ধ্বংস করে ফেলছে ওই চক্র। ওই চক্র উক্ত জায়গাগুলো থেকে কমিশন বাবত প্রতিটি মেশিন থেকে চাঁদা আদায় করছে দৈনিক ৭-৮ হাজার টাকা। উপরোক্ত সেইভ মেশিন ও লিস্টার মেশিনের মালিকরা বহিরাগত হওয়ায় ওই চক্র তাদেরকে জোরপূর্বক ও বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে এ চাঁদা আদায় করে ধ্বংস করে দিচ্ছে উক্ত এলাকা। মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন করায় ওই এলাকার মেহনতি শ্রমিকরা মাথা গোঁজার শেষ অবলম্বনটুকুও হারাতে বসেছে। উদ্বেগ-উৎকণ্ঠায় দিন কাটাচ্ছেন এলাকার হতদরিদ্র বাসিন্দারা। তাই সেইভ মেশিন ও লিস্টার মেশিন দিয়ে পাথর উত্তোলন বন্ধ করে এসব এলাকা রক্ষা ও লুটপাটকারী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জেলা প্রশাসকের হস্তক্ষেপ কামনা করে এ আবেদন করেন মো. আতাউর রহমান। আবেদনের অনুলিপি সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি, পুলিশ সুপার, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার, সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও কোম্পানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ বরাবর প্রদান করা হয়েছে।