ঠাকুরগাঁওয়ের হরিপুর উপজেলার বহরমপুরে গরু জব্দ করার ঘটনা নিয়ে বিজিবির গুলিতে তিন জনের মৃত্যুর ঘটনাকে অনাকাঙ্ক্ষিত বলে মন্তব্য করে সব পক্ষকে সতর্ক থাকার আহ্বান জানিয়েছেন সংস্থাটির মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মো. সাফিনুল ইসলাম। সোমবার দুপুরে ঠাকুরগাঁও সার্কিট হাউসে বহরমপুর গ্রামবাসী ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে মতবিনিময়ের পর সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে তিনি এ মন্তব্য করেন।
বিজিবি প্রধান বলেন, বহরমপুরে যে ঘটনাটি ঘটেছে সেটি একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। ওই এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জেনেছি তাদের কাছেও এটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। ভবিষ্যতে যেন এ ধরনের কোনো ঘটনা না ঘটে, সে জন্য এলাকাবাসী এবং বিজিবি উভয়ে সতর্ক থাকবে।
এ ঘটনায় বিজিবির পক্ষ থেকে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। এই তদন্ত প্রতিবেদনে অনুযায়ী পরবর্তীতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। গ্রামবাসীর ওপর গুলিবর্ষণ ছাড়া অন্য কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা যেত কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বিজিবির মহাপরিচালক বলেন, বিষয়টি যেহেতু তদন্তাধীন, সে ক্ষেত্রে তদন্তে বেরিয়ে আসবে যে কি করা উচিত ছিল? তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত কোনো মন্তব্য করা ঠিক হবে না।
ঠাকুরগাঁও সফরের উদ্দেশ্য সম্পর্কে ডিজি বলেন, সফরের উদ্দেশ্য হচ্ছে বহরমপুরের এলাকাবাসী, ডিসি এবং এসপির সঙ্গে মতবিনিময় করে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হওয়ায়। এখানে এসে বিষয়টি আরো ভালো করে অনুধাবন করার চেষ্টা করেছি।
বিজিবির পক্ষ থেকে গ্রামবাসীর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহার করা হবে কিনা? এই প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিষয়টি নিয়ে আমরা ডিসি-এসপির সঙ্গে আলোচনা করেছি। আমরা সেটি নিশ্চিত করব।
তিনি আরও বলেন, আমরা এ রকম অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার পুনরাবৃত্তি চাই না। আমরা যে যার দায়িত্ব পালন করতে চাই। দায়িত্ব পালনের ক্ষেত্রে সাংবাদিকেরা যারা আছেন, আপনারা আমাদের সহযোগিতা করবেন।’
এ সময় ঠাকুরগাঁওয়ের জেলা প্রশাসন কে এম কামরুজ্জামান সেলিম, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান, বিজিবির ঠাকুরগাঁও সেক্টর কমান্ডার সামশুল আরেফিন, ঠাকুরগাঁও ৫০ বিজিবির অধিনায়ক তুহিন মোহাম্মদ মাসুদ উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ১২ ফেব্রুয়ারি বিজিবি বেতনা ক্যাম্পের সদস্যরা চোরাচালান করে আনা ভারতীয় গরু তল্লাশি করতে হরিপুর উপজেলার বকুয়া ইউনিয়নের বহরমপুর গ্রামে যান। পরে তাঁরা সেখানে কয়েকটি গরু জব্দ করেন। গরু জব্দ করা নিয়ে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে বাগ্বিতণ্ডার একপর্যায়ে বিজিবির স্থানীয়দের সংঘর্ষ শুরু হয়। সে সময় বিজিবি গুলি ছুড়লে এক শিশুসহ তিনজন নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হন আরও ১৪ জন।