ঝিনাইদহ সদর উপজেলার ভীটশ্বর গ্রামে সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে বাড়িছাড়া ১৫টি পরিবার। নষ্ট হচ্ছে ৫০ বিঘা জমির আবাদি ফসল। প্রতিকার চেয়ে ঝিনাইদহ প্রেস ক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলন করে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো।
লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন, ভীটশ্বর গ্রামের আতিয়ার রহমান খানের মেয়ে ভুক্তভোগী মোহনা খাতুন। তিনি তার লিখিত বক্তব্যে অভিযোগ করেন, ভীটশ্বর গ্রামের রামকান্ত মণ্ডলের ছেলে হৃষিকেশ মণ্ডলের কাছ থেকে মহিউদ্দিন বিশ্বাসের ছেলে ফারুক আলী স্টাম্পের মাধ্যমে ছয়জনকে সাক্ষী রেখে ২০১৫ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে তিন কিস্তিতে টাকা দিয়ে ভীটশ্বর গ্রামের ১৪৩নং মৌজার ২৭২৮ দাগের মধ্যে ৪৬ শতক জমি বায়না নামা করেন। তারপর থেকেই দীর্ঘদিন ধরে আমরা জমি ভোগ দখল করে আসছি। এই জমি রেজিস্ট্রি করে না দিয়ে বিভিন্ন তালবাহানা করে আসছেন হৃশিকেষ। এ ছাড়াও ২০১৮ সালে ১লা আগস্ট হৃষিকেশ মণ্ডল ও তার ভাই অমরেশ মণ্ডল একই দাগের আরো ৪৬ শতক জমি আমাদের কাছে রেজিস্ট্রি মূলে বিক্রয় করেন। দুই ভাইয়ের কাছ থেকে সর্বমোট ৯২ শতক জমি আমরা ক্রয় করি।
পরবর্তীতে রেজিস্ট্রিকৃত জমি গোপনে অনত্র বিক্রয় করার ষড়যন্ত্র করলে বিষয়টি জানা জানি হয়। আমরা হৃষিকেশ মণ্ডল ও তার ভাই অমরেশ মণ্ডলকে বিষয়টি জানালে তারা বিভিন্ন অজুহাত দেখিয়ে তালবাহানা শুরু করে। এমনকি আমাদের দখলকৃত জমি থেকে উচ্ছেদ করার জন্য হুমকি দিতে থাকে। এরই জের ধরে গত ১০ই ফেব্রুয়ারি সকালে ওই গ্রামের হৃষিকেশ মণ্ডল, সাইফুল দফাদার, শরিফুল ইসলাম ওরফে হুমো শরিফুল, বিকাশ চন্দ্র, পিযুষ চন্দ্র, নিপেন মণ্ডল, উজ্জ্বল মণ্ডল, লাল মিয়া দফাদার, মোলাম দফাদার, আফিরুল ও মসিয়ার বিশ্বাস ওরফে মসেসহ আরো কয়েকজন দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র ও লাঠি সোঁটা নিয়ে তাদের বাড়িতে আসে। তারা আমাদের বাড়ির মধ্যে প্রবেশ করে মারধর, ভাঙচুর করে রান্না ঘর পুড়িয়ে দেয়, ১০টি হাঁস মেরে ফেলে এবং মাঠে থাকা একটি স্যালো মেশিন ভাঙচুর করে। এ ছাড়াও ওই মাঠে ধানে সেচ দেয়া ১০টি স্যালো মেশিন সেচ দেয়া বন্ধ করে রেখেছে। যার ফলে ৫০ বিঘা আবাদি জমির (ইরি) ফসল সেচের অভাবে ও পরিচর্যা করতে না দেয়ার কারণে ফসলগুলো জমিতে নষ্ট হতে চলেছে। এ ঘটনায় ঝিনাইদহ আদালতে ২টি মামলা করা হয়েছে। আমরা সন্ত্রাসীদের অত্যাচারে বাড়িঘর ফেলে জীবন বাঁচানোর তাগিদে ১৫টি পরিবার দীর্ঘদিন যাবৎ পালিয়ে বেড়াচ্ছি। এ ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাবাহিনীসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন ভুক্তভোগীরা। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন, ভুক্তভোগী আল মামুন, হাসেম আলী, রবিউল ইসলাম, ফরহাদুজ্জামান ও তাসলিমা বেগম। তাদের দাবি ওই সন্ত্রাসীদের হাত থেকে আমাদেরকে বাঁচান এবং এলাকায় ফিরে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন।