নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি ছিল সরকার প্রতি ঘরে ঘরে একজনকে চাকরির ব্যবস্থা করবে। কিন্তু সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে উল্টো যারা নিজেরা নিজেদের কর্মসংস্থান করে নিয়েছে, তাদের কোনো পুনর্বাসনের ব্যবস্থা না করেই উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে গরিব হকারদের সর্বস্বান্ত করার চেষ্টা করছে। তাই প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাস অনুযায়ী আগে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করে তারপর হকার্স উচ্ছেদের দাবি জানিয়েছে বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়ন। গতকাল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে আয়োজিত এক বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে এই দাবি জানায় সংগঠনটির সভাপতি আবদুল হাসিম কবির। প্রধান অতিথির বক্তব্যে মনজুরুল আহসান খান বলেন, নির্বাচনের রেশ কাটতে না কাটতেই হকারদের পেটে লাথি মারা শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, গত নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি ছিল সরকার প্রতি ঘরে ঘরে একজনকে চাকরির ব্যবস্থা করবে। সেই প্রতিশ্রুতি পূরণ না করে বরং যারা নিজেরা নিজেদের কর্মসংস্থান করে নিয়েছে, তাদেরকে উচ্ছেদের মধ্য দিয়ে গরিব হকারদের সর্বস্বান্ত করার চেষ্টা করছে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাকে বলেছিলেন, পুনর্বাসন ছাড়া তিনি হকার উচ্ছেদ করবেন না।
তাই আমি এখনো আশা করছি তিনি তার প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবেন। সমাবেশে বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের সভাপতি আবদুল হাসিম কবির বলেন, আমরা প্রায় ১ যুগ ধরে হকারদের পুনর্বাসনের জন্য ১০ দফা দাবির সংগ্রাম করে আসছি। সংগ্রামের একপর্যায়ে সিটি করপোরেশন আমাদের সঙ্গে পরামর্শ করে, কিভাবে হকারদের সমস্যা সমাধান করা যায়। আমরা হকারদের সমস্যা সমাধানের জন্য কতগুলো প্রস্তাবনাও তুলে ধরা হয়। আমাদের পক্ষ থেকে তখন বলা হয়, যতক্ষণ না হকারদের স্থায়ীভাবে পুনর্বাসন করা যাচ্ছে, ততক্ষণ ফুটপাতের ১-৩ অংশ জায়গা হকারদের জন্য বরাদ্দ দেয়া হোক এবং তাদের সিটি করপোরেশনের পক্ষ থেকে একটি করে আইডি কার্ড দেয়া হোক। আর শহরে যানজট নিরসনের জন্য প্রাইভেট কারগুলো চলাচলের জন্য জোড়-বিজোড় পদ্ধতি চালু করা হোক। বড় বড় মার্কেটগুলো যাতে বিল্ডিং কোড মেনে চলে, তার জন্য কঠোরভাবে আইন প্রয়োগ করা হোক। বেশির ভাগ মার্কেটগুলোতে গাড়ি পার্কিং-এর কোনো ব্যবস্থা নেই। এজন্য গাড়িগুলো যত্রতত্র এলোমেলোভাবে রাস্তার ওপর রাখার কারণে ভয়াবহ যানজটের সৃষ্টি হয়। তাই আমাদের এই প্রস্তাবনা তখন নগর উন্নয়নবিদদের প্রশংসা কুড়াতে সক্ষম হয়। তিনি বলেন, আমরা যতদূর জানি দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা কামরুল ইসলামের নেতৃত্বে হকার্স পুনর্বাসনের জন্য একটি প্রকল্পও গ্রহণ করা হয়েছিল। কিন্তু সেই প্রকল্প বাস্তবায়ন না করে হঠাৎ করে এমন হকার উচ্ছেদ করা অত্যন্ত দুঃখজনক। তাই আমরা সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, যতক্ষণ পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা না হবে, ততক্ষণ একটা হকারও উচ্ছেদ করা যাবে না। সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ হকার্স ইউনিয়নের কার্যকরী সভাপতি মুর্শিকুল ইসলাম শিমুল, সাংগঠনিক সম্পাদক মো. জসিম, সহ-সম্পাদক মো. গোলাপ, অর্থ সম্পাদক মো. মজিদ, আহম্মদ আলী, বিল্লাল হোসেন, মো. শহীদ, মো. ফারুখসহ প্রমুখ। সমাবেশ শেষে একটি বিক্ষোভ মিছিল প্রেস ক্লাব থেকে শুরু হয়ে মতিঝিল শাপলা চত্বর ঘুরে পুরানা পল্টন মোড়ে এসে শেষ হয়।