× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ১০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৪ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ভিন্নপথে সুহেল চৌধুরী আব্দাল মিয়া / সিলেটে নির্বাচিত ৬ জনই সরে দাঁড়ালেন

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট থেকে
২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, বুধবার

সুহেল-আব্দালে বিব্রত সিলেট বিএনপি। দলের সিদ্ধান্ত না মেনে তারা উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী। এই দুই উপজেলা চেয়ারম্যানকে নিয়ে স্থানীয় বিএনপিতেও ঝড় উঠেছে। সিলেট জেলার নির্বাচিত বিএনপি ও জামায়াতের অন্য সব চেয়ারম্যানরা দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ালেও তারা দুজন প্রার্থী থাকায় স্থানীয় নেতারা নাখোশ। তবে- সিলেট জেলা বিএনপির নেতারা জানিয়েছেন- যারা দলের সিদ্ধান্ত না মেনে প্রার্থী হবেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। আর নির্বাচনে থাকা বর্তমান চেয়ারম্যানরা জানিয়েছেন- নির্বাচনের পরিবেশ অনুকূলে না থাকলে তারাও সরে আসবেন। সুহেল আহমদ চৌধুরী বিশ্বনাথ উপজেলা পরিষদের নির্বাচিত চেয়ারম্যান।


ইলিয়াস পরিবারের সঙ্গে রয়েছে তার ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক । পাশাপাশি তিনি সিলেট জেলা বিএনপির সহসভাপতিও। বৃটেন প্রবাসী বিএনপি নেতা সুহেল আহমদ চৌধুরী বিএনপি ঘরানার ব্যক্তি। দীর্ঘ দিন প্রবাসে থাকার পর নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই তিনি নিজ এলাকা বিশ্বনাথে এসেছিলেন। বিএনপির নিখোঁজ নেতা এম ইলিয়াস আলীর ঘনিষ্ঠজন ছিলেন তিনি। দলের প্রতি অনুগত ও ইলিয়াস পরিবারের আস্থাভাজন নেতা হওয়ার কারণে ২০১৪ সালের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে তাকে সমর্থন দিয়েছিল বিএনপি। আর ইলিয়াস আলীর স্ত্রী বেগম তাহসিনা রুশদীরও সুহেলকে বিজয়ী করতে এলাকায় প্রচারণায় অংশ নেন। ফলে ভোটের মাঠে অখ্যাত হওয়ার পরও ইলিয়াস পরিবারের সমর্থন থাকায় ওই সময় উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন সুহেল আহমদ চৌধুরী।

নিখোঁজ বিএনপি নেতা এম ইলিয়াস আলীর নিজ এলাকা বিশ্বনাথ হওয়ায় এখানে বিএনপির যোগ্য প্রার্থীর অভাব নেই। সুহেল আহমদ চৌধুরী ছাড়াও উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি মোজাহিদ আলী, সিনিয়র বিএনপি নেতা আবুল কালাম কছির, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান গৌছ খান সহ কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে বাদ দিয়ে ইলিয়াস আলীর পরিবারের সমর্থন ছিল সুহেল চৌধুরীর ওপর। বিগত ৫ বছরও সুহেল আহমদ চৌধুরী উপজেলা পরিষদের দায়িত্ব পালন করেছেন। এই সময়ের মধ্যে তার সঙ্গে স্থানীয় বিএনপির নেতাদের দূরত্ব আরো বাড়ে। বিএনপি নেতারা জানিয়েছেন- বিএনপির সমর্থন ও ইলিয়াস আলীর পরিবারের নাম নিয়ে সুহেল আহমদ চৌধুরী চেয়ারম্যান হলেও তিনি বিএনপির জন্য কাজ করতে পারেননি। বরং তার কাছ থেকে সবচেয়ে বেশি অসহযোগিতা পেয়েছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। গায়েবি মামলায় বিএনপি নেতারা আক্রান্ত হলেও সুহেল আহমদ চৌধুরী তাদের দিকে ফিরে তাকাননি। ফলে এবার তাকে নিয়ে আগে থেকেই ক্ষোভ ছিল বিএনপিতে।

এদিকে- এবারের উপজেলা নির্বাচনে চেয়ারম্যান প্রার্থী হিসেবে বিএনপি নেতাকর্মীদের পছন্দের শীর্ষে ছিলেন ইলিয়াস আলীর ছোট ভাই আসকির আলী। তিনিও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। কিন্তু বিএনপির সিদ্ধান্ত মেনে শেষ পর্যন্ত আসকির আলী প্রার্থী হননি। পাশাপাশি ইলিয়াস আলীর স্ত্রী তাহসিনা রুশদীর লুনা অসুস্থ ও বড় ভাই আওলাদ আলীর মৃত্যুর কারণে ইলিয়াস পরিবার এখন বিপর্যস্ত। আসকির আলী গতকাল মানবজমিনকে জানিয়েছেন- বিএনপির সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত। দল যে সিদ্ধান্ত দিয়েছে সেটি তিনি মেনে নিয়ে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। ফলে বিশ্বনাথে বিএনপির কেউ যদি নির্বাচন করে এটা হবে ব্যক্তিগত বিষয়। দলের কেউ এখানে জড়াবে না। তিনি বলেন- বিএনপির সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা এবার তাকে নিয়ে স্বপ্ন দেখেছিলেন। আপাতত দলের সিদ্ধান্তের কারণে তিনি নির্বাচন করছেন না।

বালাগঞ্জ উপজেলার চেয়ারম্যান আব্দাল মিয়া ২০১৪ সালে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থী হিসেবে উপজেলা নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছিলেন। পাশাপাশি ইলিয়াস পরিবারের ছায়া ছিল তার ওপর। তখন বৃহত্তর বালাগঞ্জ নিয়ে ১৪ ইউনিয়নের ভোটে তিনি উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর বালাগঞ্জ উপজেলাকে ভেঙ্গে ওসমানীনগর উপজেলা করা হয়। মোট ৮টি ইউনিয়নের ওসমানীনগর উপজেলার প্রথম নির্বাচনে চেয়ারম্যান হয়েছেন বিএনপির ময়নুল হক চৌধুরী। আর আব্দাল মিয়া ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে বালাগঞ্জের চেয়ারম্যান থেকে যান। এবারো বালাগঞ্জ উপজেলা থেকে নির্বাচন করতে চেয়েছিলেন উপজেলা বিএনপির সভাপতি কামরুল হুদা জায়গীরদার। কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত মেনে তিনি শেষ পর্যন্ত আর প্রার্থী হননি।

উপজেলা চেয়ারম্যান পদে এবারো মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন আব্দাল মিয়া। স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ায় আব্দাল মিয়াকে নিয়ে বালাগঞ্জের বিএনপির নেতাকর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে। এবার বিএনপির অনেকেই তার পক্ষে নেই বলে স্থানীয়রা জানিয়েছেন। তবে- আব্দাল মিয়া বলেছেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেন- দীর্ঘ ৫ বছরের শাসনে মাঠ সাজানো। এ কারণে নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছি। তবে- দেখবো কী হয়। যদি দেখি নির্বাচন প্রশ্নবিদ্ধ হবে তাহলে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াবো। দলের সিদ্ধান্তের প্রতি এখনো তার সমর্থন রয়েছে বলে জানান।

সিলেট জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আলী আহমদ জানিয়েছেন- যারা দলের সিদ্ধান্ত না মেনে প্রার্থী হয়েছেন তাদের বিরুদ্ধে কঠোর সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। ব্যক্তি স্বার্থের চেয়ে দলের স্বার্থ বড় দেখাই হচ্ছে দলের প্রতি অনুগত বিষয়। এখানে কোনো ছাড় দেয়া হবে না বলে জানান তিনি।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর