বাংলাদেশ ভারতের দেয়া সাত বিলিয়ন ডলারের ক্রেডিট লাইনের অধীনে তার দেশ এবং উত্তর-ভারতের রাজ্যগুলোর মধ্যে ‘রিভার কানেকটিভিটি’ বাস্তবায়ন করছে। অন্যদিকে ভারতের বাংলাদেশ হাইকমিশন এখন প্রতিদিন গড়ে দেড়শ’জন ভারতীয়কে ভিসা দিচ্ছে। আগামী মাস থেকে এটা তিনগুণ বাড়বে কিংবা অন্তত প্রতিদিন চারশ’ ভারতীয় বাংলাদেশি ভিসা নেবেন।
ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনার শাহ মো. তানভীর মনসুর গত সোমবার শিলংয়ে একটি পর্যটন বিষয়ক সম্মেলনে ওই তথ্য প্রকাশ করেছেন। খবর প্রেস ট্রাস্ট অব ইন্ডিয়ার। ওই সম্মেলনে যোগ দিতেই তিনি আসামের রাজধানী শিলংয়ে এসেছিলেন। গত সোমবার শিলংয়ে তিনি বলেছেন, বাণিজ্য ও পর্যটন উন্নয়নে উভয় দেশের মধ্যে যোগাযোগের উন্নতির জন্য ঢাকা ও নয়াদিল্লি উভয়ই একযোগে কাজ করছে।
তিনি বলেন, ‘পর্যটনের ব্যাপক উন্নয়নে নদী রুট, রেল ও আকাশপথে সংযোগে কাজ করছে বাংলাদেশ ও ভারত সরকার। আগামী মাসেই গৌহাটি ও ঢাকায় সরাসরি ফ্লাইট চালু হতে যাচ্ছে। ভারত সরকারের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় এটা বাস্তবায়নে সক্রিয় রয়েছে।
আমি নিশ্চিত যে, এটি কানেকটিভিটিকে আরো প্রসারিত করবে এবং উভয় দেশের মধ্যে পর্যটনকে আরো বাড়িয়ে তুলবে।’
বাংলাদেশি কূটনীতিকের কথায়, ‘বর্তমানে আমি প্রতিদিন ১৫০টি ভিসা প্রদান করছি। আমি নিশ্চিত যে, আগামী মাসে থেকে ভিসার এই সংখ্যা তিনগুণ বা অন্তত চারশ’জন ভিসা নেবেন।’
মনসুর বলেন, বর্তমানে বাংলাদেশ সরকার ?‘রিভার কানেকটিভিটি’ বিষয়ে কাজ করছে। ড্রেজিং কার্যক্রম পুরোদমে চলছে। ভারত সরকার সাতশ’ কোটি মার্কিন ডলারের একটি ক্রেডিট লাইন বাংলাদেশকে দিয়েছে। এই ক্রেডিট লাইনের আওতায় রেল সংযোগের মাধ্যমে বাংলাদেশ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের মধ্যে কানেকটিভিটি প্রতিষ্ঠা করছে।’
মেঘালয়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রশংসা করে মনসুর বলেন, ‘আমি বিশ্বাস করি যে মেঘালয় রাজ্যটি স্কটল্যান্ডের তুলনায় অনেক সুন্দর। এর আগে আমার শেষ কর্মস্থল রাশিয়া ছিল। তার আগে আমি দুবাই ও জাপানে ছিলাম। আমি অনেক জায়গায় গিয়েছি কিন্তু কখনো মেঘালয়ের মতো একটি সুন্দর জায়গা দেখিনি।’
তিনি বলেন, ‘মেঘালয় একমাত্র স্থান যেখানে মেঘ এবং নদী একই দিগন্তরেখায় মিশেছে। এটা এক বিস্ময়কর সংমিশ্রণ। পৃথিবীর খুব কম জায়গায় আপনি এমন স্থান দেখতে পাবেন।’
বাংলাদেশ সহকারী হাই কমিশনার বলেন, ‘মেঘালয় শান্তির আবাসস্থল হয়ে উঠেছে। আমরা দেখি রাজ্যটি শৃঙ্খলাবদ্ধ এবং কোনো দ্বন্দ্ব-সংঘাত নেই। ভারতের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই।
মেঘালয়ের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস পি কে সাংমা বলেন, সফররত পর্যটকরা যতখুশি তাজা বাতাস সেবন করতে পারেন, তবে তারা ট্র্যাশ এবং বিষাক্ত বর্জ্য ফেলে চলে যান।’
তিনি সতর্ক করে বলেন, পর্যটকদের ফেলে যাওয়া বর্জ্য পরিবেশকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং পরোক্ষভাবে পর্যটনের ওপর নির্ভরশীল মানুষের জীবিকাকে নেতিবাচকভাবে প্রভাবিত করে।
সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন রাজ্যের অতিরিক্ত সচিব আর ভি সুচিয়াং। তিনি বলেন, গত ১০ বছরে মেঘালয়ে পর্যটন ৮০ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।