× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৭ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

পদকজয়ীদের অনুসরণে আগামী প্রজন্ম নিজেদের গড়ে তুলবে: প্রধানমন্ত্রী

শেষের পাতা

স্টাফ রিপোর্টার
২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, বৃহস্পতিবার

দেশ-জাতি-ভাষার মর্যাদায় একুশে পদকপ্রাপ্তদের অবদান রয়েছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমি মনে করি, পদকজয়ীদের অনুসরণ করে আমাদের আগামী প্রজন্ম নিজেদের গড়ে তুলবে। গতকাল রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়  আয়োজিত ‘একুশে পদক প্রদান-২০১৯’ অনুষ্ঠানে তিনি এসব কথা বলেন। এর আগে, তিনি একুশে পদকপ্রাপ্তদের হাতে পুরস্কার, সম্মাননাপত্র ও চেক তুলে দেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে যারা একুশে পদক পেয়েছেন, তারা গুণীজন।

তারা স্ব-স্ব ক্ষেত্রে কীর্তিমাণ। দেশ-জাতি-ভাষায় তাদের বিশাল অবদান রয়েছে। সেই অবদানের কথা সবসময় আমরা স্মরণ করি। তিনি বলেন, ‘একুশে ফেব্রুয়ারির প্রাক্কালে ভাষা শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি এই সংগ্রামে যারা অংশগ্রহণ করেছেন, তাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাই। আজ যেসব গুণীজন পুরস্কৃত হয়েছেন, তাদের প্রতিও আন্তরিক অভিনন্দন।
এ বছরের একুশে পদক প্রাপ্তরা হচ্ছেন- ভাষা আন্দোলনে অবদানের জন্য মরহুম অধ্যাপক হালিমা খাতুন (মরণোত্তর), যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের প্রধান কৌঁসুলি গোলাম আরিফ টিপু এবং অধ্যাপক মনোয়ারা ইসলাম। ক্ষিতীন্দ্র চন্দ্র বৈশ্য একুশে পদক পেয়েছেন মহান মুক্তিযুদ্ধে ভূমিকার জন্য।

প্রয়াত পপ শিল্পী আজম খান (মরণোত্তর) ও নজরুল সংগীত শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিলের সঙ্গে এবার সংগীত বিভাগে এ পুরস্কার পান গায়ক সুবীর নন্দী। সুবর্ণা মুস্তাফার সঙ্গে লাকী ইনাম ও লিয়াকত আলী লাকী একুশে পদক পান অভিনয়ের জন্য। দেশের প্রথম নারী আলোকচিত্রী সাইদা খানম আলোকচিত্রে অবদানের জন্য এবং চিত্রশিল্পী জামাল উদ্দিন আহমেদ চারুকলায় এ পুরস্কার পান। গবেষণায় ড. বিশ্বজিৎ ঘোষ ও ড. মাহবুবুল হক এবং শিক্ষায় ড. প্রণব কুমার বড়ুয়াকে এ পদক প্রদান করা হয়।

এছাড়া ভাষা সাহিত্যে রিজিয়া রহমান, ইমদাদুল হক মিলন, অসীম সাহা, আনোয়ারা সৈয়দ হক, মইনুল আহসান সাবের ও হরিশংকর জলদাস একুশে পদক পান। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একুশে পদকপ্রাপ্তদের হাতে পদক তুলে দেন এবং মরণোত্তর একুশে পদক বিজয়ী মরহুম অধ্যাপক হালিমা খাতুনের পক্ষে তার কন্যা বেগম প্রজ্ঞা লাবণী এবং পপ সম্রাট আজম খানের পক্ষে তার কন্যা বেগম ইভা খান পুরস্কার গ্রহণ করেন। সংস্কৃতি বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী কেএম খালিদ অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের ভারপ্রাপ্ত সচিব ড. আবু হেনা মুস্তফা কামাল স্বাগত বক্তৃতা করেন।

মন্ত্রিপরিষদ সচিব মো. শফিউল আলম অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন এবং পদক বিজয়ীদের সংক্ষিপ্ত পরিচিতি পাঠ করেন। অনুষ্ঠানে মন্ত্রিপরিষদ সদস্যবৃন্দ, সরকারের উপদেষ্টাবৃন্দ, সংসদ সদস্যবৃন্দ, বিচারপতিগণ, পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তাবৃন্দ, কবি, সাহিত্যিক, বুদ্ধিজীবী, শিল্পীসহ বিশিষ্ট নাগরিকবৃন্দ, বিভিন্ন দেশের কূটনীতিকবৃন্দ, পূর্বের একুশে পদক বিজয়ী ব্যক্তিবর্গ এবং আমন্ত্রিত অতিথিবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। পুরস্কার হিসেবে প্রত্যেককে ৩৫ গ্রাম ওজনের একটি স্বর্ণপদক, এককালীন দুই লাখ টাকা ও একটি সম্মাননাপত্র দেয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমরা বাঙালি জাতি, বাংলাদেশ আমাদের দেশ।

বাংলা আমাদের ভাষা। জাতির পিতা এ কথা বারবার বলেছেন। আর সেই দেশকে আমরা গড়ে তুলতে চাই, বিশ্ব দরবারে একটা মর্যাদার বাংলাদেশ যেন অধিষ্ঠিত হয়। বাঙালি জাতি যেন বিশ্বসভায় মাথা উঁচু করে সম্মানের সঙ্গে চলতে পারে, সেটাই আমাদের লক্ষ্য। সেই লক্ষ্য নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি। আমরা এটুকুই চাই। মহান একুশের বিভিন্ন প্রেক্ষাপট তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সৌভাগ্য ২০০৮ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশের জনগণ নৌকা মার্কায় ভোট দেয়।

আমরা আবার সরকারে আসি। সরকারে আসার পর সেই মাতৃভাষা ইনস্টিটিউট নির্মাণ করি, সেখানে এখন গবেষণা চলছে। পৃথিবীর বিভিন্ন মাতৃভাষার নমুনা, এমনকি হারিয়ে যাওয়া মাতৃভাষার নমুনা সংগ্রহেরও কাজ চলছে। শেখ হাসিনা বলেন, দেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী তাদের ভাষা বা পৃথিবীর অন্যান্য দেশেরও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ভাষার নমুনা সংগ্রহ করা এবং গবেষণা করার কাজ আমরা অব্যাহত রেখেছি। তিনি বলেন, জাতির পিতার স্বাধীনতার পর জাতিসংঘে যে ভাষণ দিয়েছিলেন, তিনি কিন্তু বাংলা ভাষায় ভাষণ দিয়েছিলেন।

আমি তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে সরকার প্রধান হিসাবে যতবার ভাষণ দিয়েছি, প্রতিবারই বাংলা ভাষায় ভাষণ দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের স্বাধীনতা, আমাদের ভাষার অধিকার, আমাদের সংস্কৃতি, আমাদের কৃষ্টি- এটাকে রক্ষা করা, চর্চা করা, এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য একটা সুন্দর পরিবেশ সৃষ্টি করা, এটা আমাদেরেই কর্তব্য।

  তিনি বলেন, আমরা অনেক সংগ্রামের মধ্যদিয়ে যে অর্জন করেছি, তার সুফলটা যেন আমাদের আগামী প্রজন্ম ভোগ করতে পারে। তারা যেন একটা সুন্দর জীবন পায়, সেটাই আমরা চাই। ভাষা আন্দোলনের শহীদদের স্মরণে সরকার ১৯৭৬ সাল থেকে প্রতি বছর বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে এই পুরস্কার দিয়ে আসছে। এ পর্যন্ত ৪৫৭ জন সুধী এবং ৩টি প্রতিষ্ঠানকে একুশে পদকে ভূষিত করা হয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর