× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

গুম, প্রেম ও সাহসের গল্প

অনলাইন

আসিফ নজরুল
(৫ বছর আগে) ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৯, বৃহস্পতিবার, ১২:৩৩ অপরাহ্ন

রহমানকে জিজ্ঞেস করি, বকুলদের ওখানে গিয়েছিলি?
সে উত্তর দেয় না।
বকুল কেমন আছে রে দোস্ত?
সে কঠিন গলায় বলে: সেটা দিয়ে তোর কি দরকার?
মন খারাপ করে বসে থাকি। বড় বড় চোখ, খাড়া নাক, লাল ঠোঁটের সেই মায়াময় মেয়েটার মুখ ভেসে ওঠে বারবার। সে কি জানে কিছু আমার কথা? মনে হয় না। হয়তো ভুলেই গেছে আমাকে। মনে রাখার মতো কিছু তো নাই আসলে।
রহমান এক কাপ চা বাড়িয়ে দেয় আমার দিকে। বকুলের মায়ের অবস্থা খুব খারাপ।

আমি চমকে তাকাই তার দিকে। অপেক্ষা করি আরও কিছু বলুক সে। শেষে না থাকতে পেরে বলি: কী হয়েছে?
বশির ভাইকে কোপ দিয়েছিল এক দিন।
মানে! আনন্দ আর উত্তেজনায় বুক লাফিয়ে ওঠে আমার। তারপর?
কোপ লাগেনি ঠিকমতো। লাগলে হয়তো মারাই যেত।
যায়নি মারা!
রহমান ভর্ৎসনার দৃষ্টিতে তাকায়। মারা যাবে কেন। শকুনের দোয়ায় গরু মরে?
আমি বলি: কিছু হয়নি তার?
হইছে। দুইটা আঙুল কাটছে। টুকরা হয়া গেসে।
বলিস কি!
জোড়া লাগানোর চেষ্টা করছে। শিউর না লাগব কিনা!
সত্যি!
রহমান আমার উত্তেজনাকে পাত্তা দেয় না। বলে, বকুলের মা-কে মেন্টালে পাঠায় দিসে।
মেন্টালে?
হ্যাঁ, তো কি করবো? কোপ খাইবো নাকি আবার!
আহারে! আমার মন কেমন করে ওঠে। আর বকুলদের কী হলো?
কি হইব! রহমান অবাক হয়। তারা আছে।
মাকে ছাড়া কীভাবে আছে ওরা?
ভালো আছে! তোর চিন্তা করতে হইব না। রহমান বিরক্ত হয়। কেন যে বলতে গেলাম তোরে এত কথা।
আমি আর কাজে মন বসাতে পারি না।

উপরের অংশটা আমার নতুন উপন্যাস ‘উধাও’ থেকে নেয়া। পড়লে  মনে হতে পারে: এটা একটা প্রেমের উপন্যাস। কিন্তু প্রেমের উপন্যসের নাম উধাও হলো কেন? উধাও মানে কি আমি গুমের কথা বলতে চেয়েছি? গুমের বিরুদ্ধে সর্বদা সোচ্চার আমার উপন্যাসে কিছু নেই এ’সম্পর্কে?
উধাও নিয়ে এসব জানতে চায় মানুষ আমার কাছে। আমার ফেসবুক ফ্যানপেজে বড় একটি প্রশ্ন উধাও-এর বিষয়বস্তু নিয়ে। আমি পাকা লেখকের মতো রহস্যটা গোপন রেখেছি। এরমধ্যে উধাও পাঠকের চোখে পড়েছে। বইমেলার মাত্র বারো দিনে এর প্রথম মুদ্রন শেষ হয়েছে।  
আমি এখনো বিষয়টা অস্পষ্ট রাখতে পারি। কিন্তু কেন যেন এখন জানাতে ইচ্ছে করছে যে, উধাও আসলে গুম হওয়ারও গল্প। গল্পও ঠিক না। সত্যি ঘটনা জেনেশুনে তা গল্পের আদলে বলা হয়েছে এর বড় একটি অংশে।
আমার উপন্যাসে গুম হওয়া মানুষটা ফিরে আসে। কিন্তু আরো যারা ফিরে না তাদের ইংগিত আছে সেখানে। আপনার হয়তো চিনেন তাদের।
কিন্তু উধাও-এর মূল বিষয়বস্তু গুম নয়। এটি মূলত ভালোবাসার গল্প। গুম থেকে ফিরে আসা ভীত-সন্ত্রস্ত একজন তরুন শুধু প্রেমের কারণে কিভাবে সাহসী হয়ে ওঠে, বা উঠতে চায় সেই গল্প।  
তবে কোন উপন্যাস প্রেমসর্বস্ব হতে হবে এটা আমি মানি না। প্রেমের উপন্যাসেও সমসাময়িক রাজনীতি আর মানবিক বিপর্যয়ের ঘটনা আনা যায়না। খুবই যায়। আমার কোন উপন্যাস তাই সমসাময়িকতা বা বাস্তবতা বর্জিত নয়।
পাঠককে ‘উধাও’ পড়ার আমন্ত্রন জানানোর আত্মবিশ্বাসটা পাই সেখান থেকে। উধাও বের করেছে প্রথমা, বইমেলায় পাবেন ৮ নং প্যাভিলিয়নে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর