× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

ডিএনসিসি নির্বাচন / আতিক একাই চষে বেড়াচ্ছেন

দেশ বিদেশ

হাফিজ মুহাম্মদ
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, শুক্রবার

নির্বাচনের বাকি মাত্র ৮ দিন। প্রার্থীরাও প্রতীক পেয়েছেন। প্রচারণায় জমজমাট থাকার কথা চারপাশ। কিন্তু চিত্র অনেকটা ভিন্ন। আওয়ামী লীগের প্রার্থী ব্যবসায়ী আতিকুল ইসলাম অনেকটা একাই চষে বেড়াচ্ছেন মাঠে। তিনি উন্নয়নের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, সাধারণ ভোটারদের  কাছে ভোট চাইছেন। প্রধান বিরোধী দলগুলোর কেউ প্রার্থী না হওয়ায় ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীর বিপরীতে অন্য প্রার্থীরা প্রচারণা চালাচ্ছেন বিচ্ছিন্নভাবে। কোথাও কোথাও তাদের পোস্টার দেখা যাচ্ছে।


ব্যতিক্রম শুধু নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ব্যবসায়ী আতিকুল ইসলাম। তিনি প্রতীক পেয়েই মাঠে নেমে ব্যস্ত সময় পার করছেন। প্রতিদিন ভোটারদের দ্বারে দ্বারে ছুটছেন। শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী না থাকলেও তিনি গণসংযোগ, সভা-সমাবেশ করে বেড়াচ্ছেন সকাল-সন্ধ্যা। নগরীর এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত দৌড়াচ্ছেন। নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মাঝে আগ্রহ না থাকলেও আতিকের ছুটে চলা তাদেরকে টানছে। নির্বাচনে তারা প্রার্থীদের মধ্যে শুধু আতিকুল ইসলামের নাম বলতে পারছেন। ডিএনসিসি উপনির্বাচনে আতিক ছাড়া আরো ৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রার্থী সংগীত শিল্পী সাফিন আহমেদ মাঝেমধ্যে দুই একটি গণসংযোগ করলেও অন্যদের দেখা যাচ্ছে না। তারা শুধু নির্বাচন কমিশনে মনোনয়নে বৈধ প্রার্থী। প্রতীক নিয়েও তারা ভোটের মাঠে প্রচারণায় নামছে না। নির্বাচনে আতিক, শাফিন ছাড়া অন্য প্রার্থীরা হচ্ছেন ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টির ববি হাজ্জাজ, প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক পার্টির শাহিন খান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির আনিসুর রহমান ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আবদুর রহিম। নগরীর বিভিন্ন এলাকায় শুধু আতিকুল ইসলামের পোস্টার দেখা যায়। অন্য কারো পোস্টার, লিফলেট এখনো চোখে পড়েনি।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনে (ডিএনসিসি) উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে আগামী ২৮শে ফেব্রুয়ারি। এদিন মেয়র পদে উপনির্বাচন এবং সিটির বর্ধিত অংশে কাউন্সিলর পদে ভোটগ্রহণ হবে। স্থানীয় সরকারের এ নির্বাচনে সংসদে সরকারি দল ও বিরোধী দল অংশগ্রহণ করছে। তবে সংসদের বাইরে প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল বিএনপি জোট নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে না। এ জন্য নির্বাচন নিয়ে তেমন কোনো আলোচনা নেই। উত্তাপ-আনন্দও নেই। ডিএনসিসির বিভিন্ন এলাকার ভোটাররা ভোটের আগেই অনুমান করছেন নির্বাচনে একটি দলের প্রার্থী জয়ী হবেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী কোনো প্রার্থী নেই। তাই এটা নিয়ে তাদের কোনো আগ্রহ নেই। একারণে নির্বাচন ঘনিয়ে আসলেও ভোটের কোনো প্রভাব পড়ছে না।

গত কয়েকদিন ধরে ডিএনসিসির নির্বাচনী একাধিক এলাকা ঘুরে সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে এমন তথ্য পাওয়া গেছে। ভোটারদের অনেকে এখনো জানেন না ভোটের তারিখ। আর প্রার্থীদের সম্পর্কে জানতে চাইলে দুই একজন ভোটার শুধু আওয়ামী লীগ প্রার্থীর নাম বলতে পারছেন। সংসদের বিরোধী দল জাপার প্রার্থী এবং নৌকার প্রধান প্রতিপক্ষ লাঙ্গলের শাফিন আহমেদকেও ভোটাররা এখনো মাঠে দেখেননি। নগরীর কোথাও তার প্রচার-প্রচারণাও চোখে পড়েনি। পোস্টারিং এবং মিছিল-মিটিংও করছেন না তিনি। অথচ মেয়র আনিসুল হকের মৃত্যুর পরে ঘোষিত উপনির্বাচনে এমন চিত্র ছিল না। তখন প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি মনোনয়ন দাখিল করে নির্বাচনী মাঠে থাকার ঘোষণা দিয়েছিলো। তারপরে নির্বাচন স্থগিত হওয়ার পরে এখন আবার পুনরায় নির্বাচন হলেও গত একাদশ জাতীয় নির্বাচন প্রশ্নে সাধারণ মানুষের আগ্রহ হারিয়েছে।

ঢাকা উত্তর সিটির মিরপুর। এ এলাকার বিভিন্ন রোডে, গলিতে আতিকুল ইসলামের ভোট চেয়ে পোস্টারিং করা হয়েছে। দেয়ালে দেয়ালেও পোস্টারে ছেয়ে গেছে। আতিকুল ইসলাম তার নির্বাচনী প্রচারণাও শুরু করেছেন মিরপুর শাহ আলী মাজার থেকে। প্রায় প্রতিদিনই মিরপুরের কোথাও না কোথাও সভা, গণসংযোগ করছেন। তাই এলাকার মানুষ তাকে জানতে পারছেন। নির্বাচন নিয়ে মানুষের বিরূপ ধারণা থাকার পরেও আতিকুল ইসলামের ভোটারদের কাছে ছুটে চলা ইতিবাচকভাবে নিচ্ছেন। শুধু মিরপুর এলাকা নয় তেজগাঁও, গুলশান, বারিধারা, নদ্দা, বাড্ডা, উত্তরা, মোহাম্মদপুরেও নৌকার প্রার্থী প্রচারণা শুরু করেছেন। এসব এলাকায় সড়কে, পাড়া-মহল্লায় পোস্টার, বিল-বোর্ড, ফেস্টুন উড়তে দেখা যায়। আতিকুল ইসলাম নিজেও রুটিন করে এসব এলাকায় যাচ্ছেন।

মিরপুর এলাকার ভোটার মো. শাহজাহান। তিনি জানান, আসন্ন সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়ে তার কোনো আগ্রহ নেই। বর্তমানে নির্বাচন মানে নির্দিষ্ট দলের প্রার্থী বিজয়ী হবেন। এতে জন রায়ের কোনো প্রতিফলন হয় না। মানুষ তার পছন্দের প্রার্থীকে খুঁজে পান না। তাই ভোট নিয়ে তার কোনো ভাবনা নেই।

মিরপুরে আরেক ভোটার মো. আজম। আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতাও তিনি। আজম বলেন, আনিসুল হকের মৃত্যুর পরে উন্নয়ন কাজ থমকে গেছে। আর এটাকে এগিয়ে নিতে হলে নির্বাচিত মেয়র দরকার। শক্ত প্রতিপক্ষ না থাকলেও আতিকুল ইসলাম ভোটারদের কাছে কাছে যাচ্ছেন- এটাকে তিনি ভালোভাবে দেখছেন। তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনের মতো না হলেও উত্তরের নির্বাচনে ভোটে প্রতিদ্বন্দ্বিতা হবে।

গুলশান এলাকার বাসিন্দা সেলিনা হোসেন বলেন, আমি গুলশানে নির্বাচনের কোনো হাওয়া দেখছি না। ডিএনসিসিতে কতজন প্রার্থী তাও জানি না। তবে শিল্পী শাফিন আহমেদ লাঙ্গল প্রতীকে নির্বাচন করছেন বলে শুনেছি। আমাদের এলাকায় মশার প্রকোপটা বেশি যেই প্রার্থী হয় আর নির্বাচিত হয় এদিকে খেয়াল রাখবে বলে আশা করছি।
নগরীর উত্তরার ভোটার মো. আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ডিএনসিসির উপ-নির্বাচন হচ্ছে তা তিনি পত্রিকা- টেলিভিশনেই দেখছেন। এলাকায় ভোটের কোনো আমেজ নেই।কোথাও তিনি প্রচারণাও দেখতে পাচ্ছেন না।

এ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থী ও তৈরি পোশাক শিল্প মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আতিকুল ইসলাম মানবজমিনকে বলেন, নির্বাচনে বিএনপি অংশগ্রহণ না করলেও অন্যান্য দলগুলো নির্বাচনে মাঠে আছে। আমি সকল ভোটারের কাছেই যাচ্ছি। এ ছাড়া নাগরিক সমাজের সঙ্গে মত বিনিময় করছি। ব্যবসায়ীদের সংগঠনের সঙ্গেও আমি আলাপ-আলোচনা অব্যাহত রেখেছি। প্রতিপক্ষ নেই- এটা আমি মনে করি না। ভোটের মাঠে যারা আছে তারাও কম শক্তিশালী নয়। যদি প্রতিপক্ষ নাই থাকতো তাহলে, আমি ঘরে বসে থাকতাম।
তিনি আরো বলেন, ভোটাররা আমার কাছে এখন আর ভাত-কাপড় চাচ্ছে না। তারা এখন শহরের ফুটপাথ দখলমুক্ত, রাস্তাঘাটের উন্নয়ন চায়। তারা চায় সুন্দর একটি ঢাকা শহর। তাদের ভাত-কাপড়ের চাহিদা এখন নেই। আমি নির্বাচনে বিজয়ী হলে ঢাকার উন্নয়নে যা যা করা লাগে তাই করবো।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর