× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ১৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

দক্ষতা বিষয়ক প্রতিযোগিতা উৎসাহিত করছে বাংলাদেশের যুব সমাজকে

দেশ বিদেশ

মুস্তাহসিন উল আজিজ
২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৯, শুক্রবার

সামাজিক ক্ষত থেকে বাংলাদেশের দক্ষতা বিষয়ক শিক্ষা (স্কিলস এডুকেশন) ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে তা আস্তে আস্তে পরিবর্তন হচ্ছে। পিতামাতা তার সন্তানকে প্রযুুক্তি বিষয়ক শিক্ষায় পাঠাতে অনিচ্ছুক। কারণ, তারা এর মূল্য অনুধাবন করতে পারেন নি। প্রযুক্তির মূলধারায় শিক্ষিত হওয়ার ক্ষেত্রে শিক্ষার্থীদের মধ্যে উচ্চাকাঙ্ক্ষাও কম। এর কারণ, ভুল করে তারা এ খাতকে ভেবে থাকে কম আয়ের ক্ষেত্র হিসেবে। দক্ষ কর্মশক্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাংলাদেশ সরকারের যে অর্জনের লক্ষ্য, তাতে এটা বড় রকমের একটি সমস্যা। পরবর্তী প্রজন্মের সামনে চাকরি ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে এবং বিভাজিত জনসংখ্যাতত্ত্বের ক্ষেত্রে যেসব চ্যালেঞ্জ রয়েছে তা মোকাবিলা করতে হলে এই মানসিকতার পরিবর্তন জরুরি।

এই অবস্থাকে কাটিয়ে উঠার জন্য কানাডা সরকার ও বিশ্বব্যাংকের সমর্থনে বাংলাদেশ সরকার একটি উদ্ভাবনী পদক্ষেপ নিয়েছে। তা হলো ‘স্কিলস অ্যান্ড ট্রেনিং এনহ্যান্সমেন্ট প্রজেক্ট’ (এসটিইপি)। ২০১৪ সালে এই প্রকল্পের অধীনে চালু হয়েছে একটি দক্ষতা বিষয়ক প্রতিযোগিতা ‘স্কিলস কম্পিটিশন’। এতে তিন দফায় প্রতিযোগিতা আয়োজন করা হয়েছে, যাতে সব ছাত্রছাত্রী উৎসাহিত হয় এবং সর্বোচ্চ অংশগ্রহণ নিশ্চিত হয়।
প্রকল্পের প্রথম ধাপে প্রতিযোগিতা হয় প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে। সেখানে বিজয়ীরা প্রতিযোগিতা করেন আঞ্চলিক পর্যায়ে। আর আঞ্চলিক পর্যায়ে বিজয়ীরা প্রতিযোগিতা করেন জাতীয় পর্যায়ে। এর মধ্য দিয়ে তারা ‘বেস্ট স্কিলড’ পুরস্কার জেতেন।  
এমন একটি উদ্ভাবনী সামনে এনেছেন রাজশাহী পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের তিন শিক্ষার্থী। তারা একটি সেন্টাল নেবুলাইজার ও সাকশন মেশিন উদ্ভাবন করছেন। এ রকম যন্ত্র এখন সারা দেশে বহু হাসপাতালে ব্যবহার হচ্ছে। ২০১৪ সালে শুরু করার এই উদ্যোগের সরাসরি ফল হলো এই ব্যতিক্রমী অর্জন।
নেবুলাইজার মেশিন উদ্ভাবনের সঙ্গে যুক্ত যে তিনজন শিক্ষার্থী তাদের একজন দীপক কুমার শীল। তিনি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন, আমাদের উদ্ভাবনী কাজ প্রদর্শনের একটি প্ল্যাটফর্ম হলো স্কিলস প্রতিযোগিতা। এই উদ্যোগ, সুযোগ সুবিধা এবং এসটিইপির মাধ্যমে দেয়া বৃত্তি আমাকে এবং আমার মতো অন্য অনেককে পাল্টে দিয়েছে। এটা আমাকে দিয়েছে সাহস ও প্ল্যাটফরম। এর মাধ্যমে আমি সৃষ্টিশীলতা ও দক্ষতা প্রদর্শন করতে পারছি। শত শত মানুষ আমার দ্বারা উৎসাহিত হচ্ছেন প্রযুক্তি বা টেকনিক্যাল বিষয়ক মূলধারায় পড়াশোনা করতে।
এই প্রতিযোগিতা চমৎকারভাবে কাজে আসছে। শিক্ষার্থীরা এখন প্রযুক্তি বিষয়ক মূলধারায় পড়াশোনা করতে উৎসাহিত হচ্ছে। প্রতিযোগিতাকে সামনে রেখে কয়েক মাস আগে থেকে তারা প্রস্তুতি নিচ্ছে। তাদের মনকে প্রতিযোগিতাময় করে গড়ে তুলছে। সক্রিয়ভাবে জড়িত হচ্ছে উদ্ভাবনী কাজে। পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ছাত্রছাত্রীরা বিজ্ঞান বিষয়ক জাতীয় পর্যায়ের প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হচ্ছে, যা এর আগে ছিল অচিন্তনীয়।
ওয়ার্ল্ড স্কিলস কাউন্সিলের একটি সদস্য দেশ এখন বাংলাদেশ। ২০১৯ সালে রাশিয়ার কাজানে হবে ওয়ার্ল্ড স্কিলস কম্পিটিশন। সেখানে অংশগ্রহণ করছে বাংলাদেশ। এইসব উদ্ভাবনকে লালন করার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করছে এই প্রকল্প। একই সঙ্গে প্রতিযোগীদের মধ্যে ভাবতে শিখাচ্ছে তাদের এসব উদ্ভাবন শুধু প্রতিযোগিতার মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখলে চলবে না।
স্কিলস কম্পিটিশন এখন তার পঞ্চম বর্ষে। এরই মধ্যে এতে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে দুই লাখ। এতে শুধুই যে উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে জনপ্রিয়তা বাড়ছে তা-ই প্রদর্শন করে এমন না। একই সঙ্গে শিক্ষায় প্রযুক্তি বিষয়ক মূলধারার প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধি পাচ্ছে, তারও প্রকাশ ঘটায়।  একটি সফল উদ্যোগ হয়ে উঠেছে স্কিলস কম্পিটিশন। এর মধ্য দিয়ে সারা দেশের শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করা হচ্ছে এবং বাংলাদেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে এটা অব্যাহত রাখা উচিত।
(বিশ্বব্যাংকের ওয়েবসাইটে প্রকাশিত লেখার অনুবাদ)
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর