‘আইএস বধূ’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া বাংলাদেশী বংশোদ্ভূত বৃটিশ তরুণী শামিমা বেগমের নাগরিকত্ব রদ করার যেই সিদ্ধান্ত বৃটেনের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় নিয়েছে, তার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন দেশটির বিরোধী দলীয় নেতা ও লেবার পার্টির প্রধান জেরেমি করবিন। ৪ বছর আগে জঙ্গিগোষ্ঠী ইসলামিক স্টেটের পক্ষে লড়াই করতে বৃটেন ছেড়ে সিরিয়ায় পাড়ি জমান ১৫ বছর বয়সী শামিমা বেগম। যদিও তার পাসপোর্ট রহিত করেছে সরকার, তবুও করবিন বলছেন, শামিমার দেশে ফেরার অধিকার রয়েছে। করবিন আরও বলেছেন, তার নাগরিকত্ব রদ করার সিদ্ধান্ত একটু কড়া হয়ে গেছে। তাকে দেশে ফেরানো উচিৎ ও প্রশ্নের মুখোমুখি করা উচিৎ। এ খবর দিয়েছে বিবিসি।
খবরে বলা হয়, বৃটিশ নাগরিকদের নাগরিকত্ব তখনই রদ করা যেতে পারে যখন তারা অন্য কোথাও নাগরিকত্ব লাভের উপযুক্ত বলে বিবেচিত হন। ধারণা করা হয় যে, তিনি বাংলাদেশি নাগরিক হতে পারেন, কারণ তার মা বাংলাদেশী। কিন্তু বাংলাদেশের পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রণালয় বলেছে, শামিমা বেগম বাংলাদেশী নাগরিক নন।
তাকে বাংলাদেশে আসতে দেওয়ার কোনো প্রশ্নই উঠে না।
এই মুহূর্তে ব্রাসেলসে ব্রেক্সিট প্রস্তাবনা নিয়ে আলোচনা করতে যাওয়া করবিন আইটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন, ‘আমার মতে, তার অবশ্যই বৃটেনে ফেরত আসার অধিকার রয়েছে। ফেরত আসার পর তাকে অবশ্যই অনেক প্রশ্নের মুখে পড়তে হবে। বিশেষ করে, তিনি যা করেছেন সেই সম্পর্কে। এরপর তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া বা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া যায়। কিন্তু কোনো মানুষের নাগরিকত্ব রদ করার সিদ্ধান্ত, বিশেষ করে সেই ব্যক্তিটি যদি বৃটেনে জন্মগ্রহণ করে থাকেন, তাহলে সেটি নিশ্চয়ই খুবই চরম সিদ্ধান্ত।’ তিনি আরও বলেন, আমি অবশ্যই এই প্রশ্ন রাখি যে আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রীর এই ধরণের ক্ষমতা রয়েছে কিনা। তবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী জাভিদ নাগরিকত্ব রদের সিদ্ধান্তেই অটল আছেন।
২০১৫ সালে পূর্ব লন্ডন ত্যাগ করেন শামিমা। তিনি বলেন, তিনি কখনই আইএস’র ‘পোস্টার গার্ল’ হতে চাননি। তার এখন একটাই আশা, নিজের সন্তানকে যাতে যুক্তরাজ্যে নীরবে বড় করে তোলা যায়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জাভিদ বলছেন, কোনো ব্যক্তিবিশেষকে রাষ্ট্রহীন তিনি করবেন না। এমনটা করা আন্তর্জাতিক আইনেও অবৈধ। শামিমা বেগমের পারিবারিক আইনজীবী তাসনিম আকুনজি বলছেন, তিনি ওই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আপিল করবেন। এক্ষেত্রে শামিমা এখন রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি হয়ে গেলেন কিনা তা বিবেচনা করে দেখছেন তিনি।