× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, মঙ্গলবার , ৩ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ৭ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

মর্গ থেকে বলছি

ষোলো আনা

পিয়াস সরকার
১ মার্চ ২০১৯, শুক্রবার

লাশ। পোড়া লাশ। থরে থরে সাজানো পোড়া লাশ। এসব লাশ থেকে ভেসে আসছে উটকো গন্ধ। এরই মধ্যে লাশ খুঁজতে ব্যস্ত স্বজন। পুড়ে যাওয়া এসব লাশ দেখে বোঝার উপায় নেই কোনটা কার লাশ। এক মা ছেলের লাশ খুঁজছেন। পোড়া কিছু শরীরের মাঝে দেখছেন বেল্টের বকলেস।
লাশের গন্ধও এই মাকে বিরত রাখতে পারছে না। ছেলের কোমরের চেনা বেল্টের বকলেসটি দেখেই চিৎকার করে উঠেন- এই তো আমার মানিক।

আরেক মা অনেক খোঁজার পর পেলেন নিজের ছেলেকে। শরীরের সঙ্গে লেগে থাকা কাপড়ের পোড়া অংশ দেখে। অনেক কষ্টেও তাকে সরানো যাচ্ছে না লাশের পাশ থেকে। তার আরেক ছেলে টেনেও ব্যর্থ মাকে সরাতে।

চকবাজার ট্র্যাজেডি। পুরান ঢাকার চুড়িহাট্টায় ২০শে ফেব্রুয়ারি রাতে ঘটে যায় ভয়াবহ এক অগ্নিকাণ্ড। সারা রাত ধুঁকে ধুঁকে জ্বলে সেই আগুন। আগুন নেভার পর আসতে থাকে এক একটি লাশ। এক একটি পরিবারের স্বপ্ন। পুড়ে যাওয়া একেকটি লাশ যেন এক একটি স্মৃতির ডায়েরি।

মর্গের বাইরে জবা ফুলের গাছ। আছে একটি বরইয়ের গাছও। সেইসঙ্গে ছায়া দিয়ে যাচ্ছে বেশ কয়েকটি গাছ। এই গাছের নিচেই আহাজারিতে মত্ত পরিবারের লোকজন। অপেক্ষা স্বজনদের জন্য। অপেক্ষা নাড়ি কাটা সন্তানের জন্য। অপেক্ষা বাবার সন্তানের লাশটা কাঁধে নেয়ার জন্য। ১১ মাসের যমজ সন্তান যেমন হারিয়েছে বাবাকে। তেমনি গর্ভের সন্তানের মুখ না দেখেও পরপারে পাড়ি দিয়েছেন বাবা। বাবা-মা ও একমাত্র ভাইকে হারিয়ে নিঃস্ব হয়েছে ১১ বছরের শিশু রামিম।

অনেক সুরে কান্না। অনেক চোখের পানি। কিন্তু সবার অপেক্ষা লাশের। অবুঝ শিশুটি যে বাবা মা ছাড়া ঘুমাতো না। সেই শিশুকে দিতে হচ্ছে বাবার লাশের জন্য ডিএনএ স্যাম্পল। এই দৃশ্য শুধুই কাঁদায়। এই দৃশ্য শুধুই ব্যথা দেয়। তারা চলে গেলেন। নিঃস্ব পরিবার বোঝা বইবে প্রতিদিন। প্রতিটি মুহূর্ত। সারাটা জীবন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর