কোনো প্রকার অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই উৎসববিহীন নিরানন্দ পরিবেশে পার্বত্য জেলা রাঙ্গামাটির সকল উপজেলায় শান্তিপূর্ণভাবে ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে। সকাল আটটা থেকে শুরু হয়ে বিকাল চারটা পর্যন্ত সময়কালে জেলার কোথাও বড় ধরনের সংঘর্ষ বা অপ্রীতিকর ঘটনার সংবাদ পাওয়া যায়নি। তবে ব্যাপক কারচুপির অভিযোগ এনে জেলার ১০ উপজেলার মধ্যে তিন উপজেলা বাঘাইছড়ি, কাউখালী ও নানিয়ারচর উপজেলায় সরকারসমর্থকদের ছাড়া বাকি ৫ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জন করেছেন। রাঙ্গামাটি জেলার বাঘাইছড়ি, নানিয়ারচর ও কাউখালী এই তিনটি উপজেলায় উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে পাঁচজন চেয়ারম্যান প্রার্থী গতকালকের ভোট বর্জন করেছে। একই সঙ্গে সাত ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীও তাদের ভোট বর্জনের খবর জানিয়েছেন। ভোট বর্জন করে নির্বাচন স্থগিতের আবেদন করেছেন তারা। দুই উপজেলাতেই জাতীয় রাজনৈতিক দলের কোনো দলই অংশ নেয়নি। ‘রাতে ভোটগ্রহণ ও দিনের বেলায় ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে যেতে না দেয়ার অভিযোগ এনে রাঙ্গামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় ভোটগ্রহণ শুরুর একঘণ্টা পরেই ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন পার্বত্য চট্টগ্রাম জনসংহতি সমিতি (জেএসএস) সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী বড়ঋষি চাকমা এবং তিন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী।
ভোট বর্জনের ঘোষণা দিয়ে বর্তমান চেয়ারম্যান ও এবারের প্রার্থী বড়ঋষি চাকমা অভিযোগ করেছেন, ‘গত রোববার রাতেই বিভিন্ন কেন্দ্রে অস্ত্রের ভয় দেখিয়ে ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। গতকাল সকাল থেকেই আমার সমর্থক ভোটারদের কেন্দ্রে আসতে বাধা দেয়।’
তিনি বলেন, সংস্কারপন্থি জেএসএস- এর বিপুল সংখ্যক বহিরাগত ও সশস্ত্র কর্মী এলাকায় অবস্থান নিয়ে ভোট সন্ত্রাস করলেও প্রশাসন কোনো পদক্ষেপ না নেয়ায় আমি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দিলাম। আমার সঙ্গে আরো তিন ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীও নির্বাচন বর্জন করেছে।
নানিয়ারচরের চেয়ারম্যান প্রার্থী রূপম দেওয়ান অভিযোগ করেছেন, রাতেই বেশিরভাগ কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ শেষ হয়ে গেছে এবং দিনের বেলায় আমরা ও আমাদের ভোটাররা কেন্দ্রেই যেতে পারছি না। সঙ্গত কারণেই নির্বাচনে থাকার কোনো মানে নেই। তাই আমিসহ তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী এবং চার ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থী ভোট বর্জন করে নির্বাচন থেকে সরে গেলাম। তিনি জানিয়েছেন, চেয়ারম্যান প্রার্থী জ্যোতিনা চাকমা, পঞ্চানন চাকমাও নির্বাচন বর্জন করেছেন। বর্জনকারী ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীরা হলেন- রণ বিকাশ চাকমা, সুজিত তালুকদার, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান কোয়ালিটি চাকমা ও কনিকা চাকমা। এদিকে কাউখালী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জনসংহতি সমিতি সমর্থিত প্রার্থী অর্জুন মণি চাকমা নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন। বেলা সাড়ে এগারোটার দিকে তিনি নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেন। এই উপজেলায় দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী আওয়ামী লীগের শামসুদ্দৌহা ও জনসংহতি সমিতির প্রার্থীর অর্জুন মণি চাকমার মধ্যে অর্জুন মণি চাকমা ভোট বর্জন করেন। তিনি জানান, ব্যাপক ভোট কারচুপি ও ভোট প্রদানে ভোটারদের বাধার কারণে আমি নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছি।