পেশা বিমানবালা। কিন্তু আড়ালে এক অপরাধ চক্রের হয়ে কাজ করতেন দুই নারী। রাতারাতি বিপুল অর্থের মালিক হতেই
অপরাধী চক্রের সঙ্গে হাত মেলান তারা। বিশেষ কৌশলে নিজেদের প্যান্টির নিচে বহন করছিলেন স্বর্ণ। শেষ পর্যন্ত ওই দুই নারীকে বিপুল স্বর্ণসহ এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের সহযোগিতায় আটক করেছে কাস্টম কর্তৃপক্ষ। আটককৃত দুই নারী হচ্ছে- সায়মা আক্তার ও ফারজানা আফরোজ। তারা দুজনেই সৌদি এয়ারলাইন্সের বিমানবালা।
আটকের পর দীর্ঘ সময় জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে তাদের। জিজ্ঞাসাবাদে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছেন দুই নারী।
তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে নিজেদের রক্ষা করার চেষ্টা করছেন। কাস্টম ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, দুই নারী জানিয়েছেন তারা একটি চক্রের হয়ে কাজ করতেন। স্বর্ণ বহন করে ঢাকায় পৌঁছে দেয়ার বিনিময়ে বিপুল অর্থ নিতেন তারা। গতকালের স্বর্ণচালান পৌঁছে দেয়ার বিনিময়ে এক লাখ টাকার চুক্তি ছিল তাদের। দীর্ঘ ১৪ বছর যাবৎ সৌদি এয়ারলাইন্সে কর্মরত এই দুই নারী কতদিন যাবৎ স্বর্ণ চোরাকারবারিদের হয়ে কাজ করছেন এ বিষয়ে এখনো সঠিক তথ্য দেননি। এমনকি চক্রের মূল হোতা সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে রহস্যময় ভূমিকা পালন করছেন।
এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আলমগীর হোসেন শিমুল মানবজমিনকে বলেন, নিশ্চয়ই বড় কোনো চক্রের হয়ে কাজ করছিলেন এই দুই নারী। কিন্তু এ বিষয়ে তারা এখনো তেমন কোনো তথ্য দেননি। অনেক কিছুই গোপন করার চেষ্টা করছেন। এ বিষয়ে তাদের রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে গুরুত্বপূর্ণ অনেক তথ্য জানা যাবে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। সেইসঙ্গে এই দুই বিমানবালাকে থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হচ্ছে বলে জানান তিনি।
সূত্রে জানা গেছে, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে কাস্টম কর্তৃপক্ষ ও এয়ারপোর্ট আর্মড পুলিশ জানতে পারে দুই বিমানবালার স্বর্ণ চোরাচালানের বিষয়টি। স্বর্ণ রয়েছে সৌদি আরব থেকে আসা সৌদি ফ্লাইট এসভি-৮০২ এর দুই নারী কেবিন ক্রু সায়মা ও ফারজানার কাছে। ওই তথ্যের ভিত্তিতে প্রস্তুতি নেন তারা। রাত ২টার দিকে ওই ফ্লাইট হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দরে অবতরণের পর তাদের আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। প্রথমে পুরো বিষয়টি অস্বীকার করেন তারা।
নিজেদের রক্ষা করতে নানা কৌশল অবলম্বন করেন। জিজ্ঞাসাবাদের এক পর্যায়ে তারা স্বর্ণ থাকার বিষয়টি স্বীকার করে। এসময় বিমানবালা সায়মার প্যান্টির ভেতর থেকে ২৬ পিস এবং ফারজানা আফরোজের প্যান্টির ভেতর থেকে ১০ পিস মিলে মোট ৩৬ পিস স্বর্ণের বার জব্দ করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, এই দুই নারীর বাড়ি বাংলাদেশে। তাদের মধ্যে সায়মা আক্তারের বাড়ি রাজশাহী ও ফারজানা আফরোজের বাড়ি লক্ষ্মীপুর।