× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আশফাকের হ্যাটট্রিক, সিলেটে প্রবীণদের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ আওয়ামী লীগ

দেশ বিদেশ

ওয়েছ খছরু, সিলেট থেকে
২০ মার্চ ২০১৯, বুধবার

 সিলেট আওয়ামী লীগের বর্ষীয়ান নেতা মোস্তাকুর রহমান মফুর।  বালাগঞ্জকে ঘিরেই তার ধ্যান-জ্ঞান। আরেক প্রবীণ নেতা ইকবাল আহমদ চৌধুরী। বয়সের ভারে অনেকটা ন্যুজ্ব তিনি। এরপরও গোলাপগঞ্জ নিয়ে স্বপ্ন দেখেন। সিলেট সদরের আশফাক আহমদ। সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের অন্যতম কাণ্ডারি। সিলেটে এবারের উপজেলা নির্বাচনে বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতারাও জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছেন। নৌকার কাণ্ডারী হয়ে তারা নির্বাচনে জয়লাভ করেন।
হারিয়েছেন অনেক শক্তিশালী প্রার্থীকে। সিলেটের ১২টি উপজেলা নির্বাচনের মধ্যে ৭ টিতে জয়লাভ করেছে আওয়ামী লীগ। আর এই ৭ জনের মধ্যে ৫ জনই হচ্ছেন প্রবীণ ও বর্ষীয়ান নেতা। সিলেটে তারা এক নামে পরিচিত। কেউ কেউ ছিলেন স্পিকার হুমায়ূন রশীদ চৌধুরী ও আবদুস সামাদ আজাদের অনুসারী। তাদের মূল্যায়নে এবার ভুল করেনি আওয়ামী লীগ। সিলেটের নেতারা জানিয়েছেন- বিশেষ করে প্রবীণ নেতারা যাতে ভোটের মাঠে লজ্জা না পান এ কারণে ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়ামী লীগ ও অঙ্গ সংগঠনের নেতারা কাজ করেছেন। বিজয়ীরা হলেন- সিলেট সদর উপজেলার বর্তমান চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগের প্রার্থী আশফাক আহমদ, বিশ্বনাথ উপজেলায় নুনু মিয়া, বালাগঞ্জ উপজেলায় মোস্তাকুর রহমান মফুর, জকিগঞ্জ উপজেলায় লোকমান আহমদ চৌধুরী, গোলাপগঞ্জ উপজেলায় ইকবাল আহমদ চৌধুরী, কানাইঘাট উপজেলায় আবদুল মোমিন চৌধুরী, দক্ষিণ সুরমায় আবু জাহিদ বেসরকারীভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। সিলেট সদরে এবার আশফাক আহমদের হ্যাটট্রিক জয়। জেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আশফাক আহমদ এবার বিদ্রোহের কবলে পড়েছিলেন। কিন্তু তার সঙ্গে মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন বিএনপি নেতা মাজহারুল ইসলাম ডালিম। বিজয়ী আশফাক আহমদ পেয়েছেন ৪৫,৫৭৫ ভোট। আর প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী মাজহারুল ইসলাম ডালিম পান ২৬,১১৩ ভোট। আশফাকের সঙ্গে বিদ্রোহী ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগ নেতা নুরে আলম সিরাজী। এ কারণে এবার টেনশনে ছিলেন আশফাক আহমদ। তবে- তার ভোট প্রচারণায় শেষ মুহূর্তে এসে অংশ নেন সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত। আর মুহিতের প্রচারণার পর থেকে বদলে যায় ভোটের দৃশ্যপট। আশফাক আহমদ এবার তৃতীয়বারের মতো জয়লাভ করে হ্যাটট্রিক করেন। বালাগঞ্জের মোস্তাকুর রহমান মফুর। বর্ষীয়ান আওয়ামী লীগ নেতা। স্বাধীনতার পূর্ব থেকে তিনি আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। ডাক পেয়েছিলেন সিলেটের রাজনীতিতেও। কিন্তু বালাগঞ্জ ছেড়ে আসেননি সাবেক এই উপজেলা চেয়ারম্যান। এবারের নির্বাচনেও তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন বর্তমান চেয়ারম্যান ও বিএনপি নেতা আব্দাল মিয়া। কিন্তু এবার মফুরের পক্ষে বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করেছে। যার ফলশ্রুতিতে বিপুল ভোটে জয়লাভ করেন মোস্তাকুর রহমান মফুর। বিজয়ী মফুর পেয়েছেন ২৫,৩৮৪ ভোট। বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আব্দাল মিয়া পেয়েছেন ৮,০৮৮ ভোট। এদিকে- বিজয়ের পর মফুর তার উপজেলাবাসীর কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেছেন- বালাগঞ্জকে উন্নত জনপদে পরিণত করতে তিনি কাজ করবেন। সিলেটের আরেক প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা ইকবাল আহমদ চৌধুরী। তিনি এবার গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে জয়লাভ করেছেন। তিনিও সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান। বিগত ২০১৪ সালের নির্বাচনে তিনি জামায়াতের প্রার্থীর কাছে পরাজিত হয়েছিলেন। তবে- এবার ইকবাল আহমদ চৌধুরীর পক্ষে গোলাপগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগ একাট্টা ছিলো। এ কারণে বিএনপি নেতা মাওলানা রশিদ আহমদকে পরাজিত করে এ উপজেলায় জয়ী হয়েছেন ইকবাল আহমদ চৌধুরী। বয়সের ভারে ন্যুব্জ হয়ে পড়া এই নেতা উপজেলার উন্নয়নে কাজ করবেন বলে প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। নির্বাচনে বিজয়ী ইকবাল আহমদ চৌধুরী পেয়েছেন ৪৯,৯১৩ ভোট। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী মাওলানা রশিদ আহমদ পান ১৫০৯২ ভোট। জকিগঞ্জের প্রবীণ নেতা লোকমান আহমদ চৌধুরীর এবার নৌকার টিকিট পাওয়ায় তার জয় অনেকটা নিশ্চিত হয়ে যায়। এর কারণ তার সঙ্গে এবার শক্ত কোনো প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলো না। বিএনপি’র বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান ইকবাল আহমদ ভোটে দাঁড়াননি। এরপরও তাকে জাতীয় পার্টির প্রার্থী মর্তুজা আহমদ চৌধুরীর সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে হয়েছে। লোকমান আহমদ চৌধুরী ভোটে সহজেই পরাজিত করেন মর্তুজা আহমদ চৌধুরীকে। এ উপজেলায় বিজয়ী লোকমান আহমদ চৌধুরী পেয়েছেন ৪৮,২৩৯ ভোট। জাতীয় পার্টির মর্তুজা আহমদ চৌধুরী পেয়েছেন ১১,৩৫২ ভোট। কানাইঘাটে বিজয়ী আবদুল মুমিন চৌধুরীও প্রবীণ নেতা। তিনি কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় নেতা হিসেবে পরিচিত। এবারের নির্বাচনে তার প্রতিদ্বন্দ্বী ছিলেন আওয়ামী লীগের জেলার নেতা মোস্তাক আহমদ পলাশ। নির্বাচনে বিজয়ী আবদুল  মোমিন চৌধুরী পেয়েছেন ২৯,৭০৯ ভোট। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী মোস্তাক আহমদ পলাশ পান ২০,৯০৪ ভোট। দক্ষিণ সুরমা উপজেলা এবার চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছিলেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবু জাহিদ। তার সঙ্গে বিদ্রোহী হয়েছিলেন ময়নুল ইসলাম। তুমুল প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনে অবশেষে জয় ঘরে তুলেছেন আবু জাহিদই। নির্বাচনে বিজয়ী আওয়ামী লীগের আবু জাহিদ পান ১৮,৩২৩। আর তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী ময়নুল ইসলাম ১৪,১২৭ ভোট পেয়েছেন। বিশ্বনাথে এবার উপজেলা নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামী লীগের তরুণ নেতা এসএম নুনু মিয়া। ভোটের মাঠে তার অবস্থানও ততোটা শক্তিশালী ছিলো না। তবে- সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত তার পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণায় অংশ নেয়ায় আওয়ামী লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়। নির্বাচনে বিজয়ী নুনু মিয়া পান ৩১,৫১২ ভোট। আর প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি’র বিদ্রোহী সুহেল আহমদ চৌধুরী ১৮,৫৯৬ ভোট পান।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর