প্রেসিডেন্ট মো. আবদুল হামিদ দেশের চলমান উন্নয়ন কর্মসূচি জনবান্ধব ও টেকসই করায় সহায়তা করতে প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নে উন্নয়ন পরিকল্পনা ‘ভিশন-২০২১ এবং ভিশন-২০৪১’ গ্রহণ করেছেন। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নে উন্নয়ন কাজ জনবান্ধব ও টেকসই করতে প্রকৌশলী ও প্রযুক্তিবিদদের ভূমিকা রাখতে হবে। তিনি গতকাল বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট)-এর ১১ সমাবর্তনে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন।
তিনি বলেন, যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ ইতিমধ্যেই উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা লাভ করেছে। দেশের সাহসী জনগণের ঐকান্তিক প্রচেষ্টা এবং সরকারের সময়োপযোগী পদক্ষেপের কারণেই এটি সম্ভব হয়েছে। তিনি বুয়েটকে দেশের প্রকৌশল ও কারিগরি শিক্ষার সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ উল্লেখ করে আশা প্রকাশ করেন যে, এই বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্র্যাজুয়েটরা সময়ের দাবি পূরণে প্রকৌশল শিক্ষা ও গবেষণা এগিয়ে নিতে আরো অবদান রাখবে।
প্রেসিডেন্ট দেশ থেকে মেধা পাচার বন্ধের ওপর গুরুত্ব আরোপ করে বলেন, প্রতিবছর বিপুল সংখ্যক প্রকৌশলী, প্রযুক্তিবিদ, স্থপতি এবং পরিকল্পনাবিদ উচ্চশিক্ষার জন্য ইউরোপ, আমেরিকাসহ উন্নত দেশগুলোতে যাচ্ছেন এবং তাদের মধ্যে অনেকেই আর দেশে ফিরে আসছেন না। এ কারণে, দেশ ও জনগণ তাদের সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। তিনি দেশ ও জনগণের কল্যাণে আরো বেশি করে অবদান রাখতে তাদের সকলের প্রতি আহ্বান জানান।
সদ্য গ্র্যাজুয়েটদের অভিনন্দন জানিয়ে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশে রূপান্তর করতে তাদের মেধা ও সৃষ্টিশীলতা কাজে লাগাতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালানোর আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট। বলেন, তোমরা চাকরির সুবাদে বিশ্বের যে প্রান্তেই থাক না কেন নিজ মাতৃভূমিকে কখনো ভুলবে না।
তিনি বলেন, সর্বদাই বড় হওয়ার স্বপ্ন দেখবে এবং দেশ, জাতি, সমাজ, পরিবার এবং নিজের কল্যাণের জন্য কাজ করে যাবে। কোনো অন্যায়ের সঙ্গে আপস না করতে সদ্য বুয়েট গ্র্যাজুয়েটদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সবকিছুই করবে নিজের মেধা, সততা এবং আত্মত্যাগের মধ্য দিয়ে। নদীভাঙন, নদী শাসন, পানি সরবরাহ ও স্যুয়ারেজ ব্যবস্থাপনা ও জলাবদ্ধতাসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগের মতো জলবায়ু পরিবর্তনজনিত সমস্যা মোকাবিলায় সরকারের দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ‘বাংলাদেশ ডেল্টা প্ল্যান-২১০০’ বাস্তবায়নে অবদান রাখতে প্রকৌশলীদের প্রতি আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট।
সমাবর্তনে ২০১১ সালের ১লা জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালের ৩১শে ডিসেম্বর পর্যন্ত শিক্ষাবর্ষের বিভিন্ন বিভাগ থেকে ৫ হাজার ২৮৪ জন শিক্ষার্থী গ্র্যাজুয়েট, পোস্ট গ্র্যাজুয়েট এবং পিএইচডি ডিগ্রি সনদ গ্রহণ করেন। ১৮ জন শিক্ষার্থী সর্বোচ্চ নম্বর প্রাপ্তির জন্য স্বর্ণপদক লাভ করেন। অনুষ্ঠানে সাবেক অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত সমাবর্তন বক্তব্য রাখেন। শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি, বুয়েটের ভিসি অধ্যাপক ড. সাইফুল ইসলাম, ফ্যাকাল্টির ডিন অধ্যাপক মো. রফিক উল্লাহ, অধ্যাপক ড. শেখ সেকেন্দার আলী, অধ্যাপক ড. মো. মাহাবুবুল আলম, অধ্যাপক ড. মো. সাইফুর রহমান এবং অধ্যাপক ড. ফরিদা নিলুফার মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।