শতবর্ষ পুরনো নারায়ণগঞ্জ হাইস্কুল এন্ড কলেজের শিক্ষার্থীদের বর্ধিত বেতন প্রত্যাহারের দাবিতে অভিভাবকরা স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতির কাছে স্মারকলিপি দিয়েছে। গতকাল দুপুরে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষকের মাধ্যমে স্মারকলিপিটি প্রদান করা হয়। স্মারকলিপিতে ৯ শতাধিক অভিভাবক স্বাক্ষর করেছেন। স্মারকলিপির অনুলিপি দেয়া হয়েছে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসনের সাংসদ সেলিম ওসমান, নারায়ণগঞ্জের জেলা প্রশাসক, পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি), মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক জেলা শিক্ষা অফিসার, নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সভাপতি/সাধারণ সম্পাদক এবং সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের কাউন্সিলরকে দেয়া হয়েছে। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, স্কুলটিতে ২ হাজার ৭০০ জন শিক্ষার্থী পড়ালেখা করে। যাদের বেশির ভাগই মধ্যবিত্ত এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান। স্কুল ম্যানেজিং কমিটি গত বছর স্কুলের শিক্ষক ও কর্মচারীদের বেতন বৃদ্ধির কথা বলে শিক্ষার্থীদের বেতন ৪০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৫০ টাকা করে। কিন্তু কোন শিক্ষক বা কর্মচারীর বেতন বাড়ানো হয়নি। চলতি বছরও অভিভাবকদের সঙ্গে কোন রকম আলোচনা না করেই শিক্ষার্থীদের বেতন ৪৫০ টাকা থেকে একলাফে ১০০ টাকা বাড়িয়ে ৫৫০ টাকা করা হয়েছে।
সেই সঙ্গে জেনারেটর ফি বাবদ আরও ২০ টাকা আলাদাভাবে নেয়া হচ্ছে। সেই সঙ্গে দুটি শ্রেণি পরীক্ষার জন্য ২০০ এবং অর্ধ বার্ষিক ও বার্ষিক পরীক্ষার জন্য বেতনের সমপরিমাণ টাকা অর্থাৎ দু’টি পরীক্ষার জন্য ৫৫০ টাকা করে ১১০০ টাকা নেয়া হয়। স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, স্কুলটিতে সেশন চার্জ বাবদ ২ হাজার, প্রতিমাসের বেতন ৫৫০, জেনারেটর বাবদ ২০ টাকা, ডায়েরি বাবদ ১২০ টাকা, সিলেবাস বাবদ ৬০ টাকা, আইডি কার্ড বাবদ ১৫০ টাকা, টাই বাবদ ১২৫ টাকা, সোল্ডার ব্যাজ বাবদ ৬০ টাকা, প্রতিদিন অনুপস্থিতির জন্য ১০টাকা এবং মাসিক বেতনের সমপরিমাণ পরীক্ষার ফি প্রদান করতে হয়। এভাবে ১২ মাসের জন্য একজন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে স্কুল কর্তৃপক্ষ ১১ হাজার টাকা আদায় করে। এ হিসেবে ২ হাজার ৭০০ জন শিক্ষার্থীর কাছ থেকে ২ কোটি ৯৭ লাখ টাকা আয় করে। এছাড়া স্কুলের সামনে থাকা মার্কেট থেকে বছরে ৫ লাখ টাকা আয় হয়। বিশাল এ আয় থাকলেও স্কুল কর্তৃপক্ষ গত ২ বছরেও স্কুলের কোন উন্নয়নমূলক কাজ করেনি। বাড়েনি শিক্ষার মান। সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় অভিভাবকরা বর্ধিত ১০০ টাকা বেতন প্রত্যাহারের দাবি জানান। এ বিষয়ে জানতে স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক কমল কান্তি সাহার সঙ্গে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, বেতন বাড়ানো হয়েছে ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত মোতাবেক।
বর্তমানে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি দেশের বাইরে রয়েছেন। তিনি দেশে ফিরে এলে বিষয়টি ম্যানেজিং কমিটিকে অবহিত করা হবে। ম্যানেজিং কমিটিই এ বিষয়ে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করবেন।
উল্লেখ্য, ঐতিহ্যবাহি এ স্কুলে ১০জন এমপিও ভুক্ত শিক্ষকসহ মোট শিক্ষকের সংখ্যা ৮৮ জন। এছাড়া ৩২ জন কর্মচারী রয়েছেন।