কর্মক্ষেত্রে কর্মীর পুষ্টির অভাব দূরীকরণে সরকার এবং করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর যৌথ সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি হতে পারে কার্যকর পদক্ষেপ। গতকাল রাজধানীর হোটেল লেকশোরে ‘কর্মক্ষেত্রে কর্মীর পর্যাপ্ত পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা: পুষ্টি ভাত-এর অর্থনৈতিক ও সামাজিক উপকারিতা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা একথা বলেন। বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ও সোস্যাল রেসপন্সিবিলিটি (এসআর) এশিয়া বাংলাদেশ যৌথভাবে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছে। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সরকার আবুল কালাম আজাদ বলেন, সরকার খোলাবাজারে সুলভ মূল্যে (ওএমএস)-এর মাধ্যমে পুষ্টি চাল বিক্রির চিন্তা-ভাবনা করছে। ওএমএস-এর মাধ্যমে বর্তমানে বাজারে ২৮ থেকে ২৯ টাকায় চাল বিক্রি করা হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার ভর্তুকি দিয়ে ১০ টাকায় ৫০ লাখ পরিবারকে ৩০ কেজি করে চাল দিয়ে যাচ্ছে। যা বাজারে ৩০ টাকার উপরে। ২ কোটি পরিবার এর আওতায় এসেছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। বৈঠকে এস আর এশিয়ার ডিরেক্টর ড. মাহফুজুল হক স্বাগত বক্তব্যে বলেন, পুষ্টি ভাত কার্যক্রমের (স্কেলিং আপরাইসফরটিফিকেশন) প্রাথমিক লক্ষ্য হলো দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বিশেষ করে নারী ও শিশুদের অপুষ্টি হ্রাস করণে তাদের মধ্যে ভিটামিন ও খনিজসমৃদ্ধ চাল বিতরণ করা।
এক্ষেত্রে বিভিন্ন সামাজিক দায়বদ্ধতা কর্মসূচি হাতে নিয়ে কোম্পানিগুলো বিশেষ করে বস্ত্র শিল্পের মালিকরা কর্মক্ষেত্রে পুষ্টি চাল সরবরাহ করে সরকারের এ লক্ষ্যে পৌঁছাতে সাহায্য করতে পারে। ডব্লিউএফপি-এর প্রোগ্রাম প্রধান রেজাউল করিম বিশেষ প্রতিবেদন পরিবেশন করে বলেন, গার্মেন্টস মালিকদের উৎসাহিত করে ২০১৭ সালে দশ হাজার দুইশ’ শ্রমিকের মধ্যে পুষ্টি চাল সরবরাহ করা হয়। তিনি আরো বলেন, খাদ্য তালিকায় বৈচিত্র্য না থাকা এবং পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার কম গ্রহণ করা বাংলাদেশের একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
পুষ্টি চালের উৎপাদন ও বিতরণ বেসরকারি খাতের আরো বেশি প্রতিষ্ঠানকে সংযুক্ত করতে ডব্লিউএফপি (বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি) বেশি কিছু পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন বিডব্লিউসিসিআই’র সহ-সভাপতি সাবিনা আলম, বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি আনোয়ার-উল আলম চৌধুরী (পারভেজ)। অনুষ্ঠানে মূল বিষয়ের উপর প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচির পলিসি অফিসার তুবা খান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ইনভিশন গ্লোবাল কনসাল্টিং লিমিটেডের পরিচালক রুবায়েত সারওয়ার। এ ছাড়াও শ্রমিকদের কর্মক্ষমতা বাড়ানোর জন্য ২০টি ব্র্যান্ড এবং ৩০টি কারখানার কর্মকর্তারা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। নেদারল্যান্ডস সরকারের আর্থিক সহায়তায় এবং ডিএসএম-এর সাপোর্টে বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি ও বাংলাদেশ সরকার ২০১৩ সাল থেকে এই উদ্যোগ বাস্তবায়ন করছে বলে আয়োজকরা জানিয়েছেন।