× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধিতে আপত্তি পোশাক খাতের ৩ সংগঠনের

শেষের পাতা

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
২১ মার্চ ২০১৯, বৃহস্পতিবার

এই মুহূর্তে শিল্পে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধিতে আপত্তি জানিয়েছে পোশাক খাতের ব্যবসায়ীরা। বলেছেন, কোনোভাবেই এখন শিল্পে গ্যাসের মূল্যবৃদ্ধি করা যৌক্তিক হবে না। অন্তত দুই বছর গ্যাসের দাম বৃদ্ধি করা যাবে না। দাম বাড়ালে উৎপাদন খরচ বাড়বে। ফলে পোশাক খাতে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

গতকাল রাজধানীর বিজিএমইএ ভবনে শিল্পে জ্বালানির মূল্য বৃদ্ধির নেতিবাচক প্রভাব শীর্ষক যৌথ সংবাদ সম্মেলনে বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান এসব কথা বলেন। সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে তৈরি পোশাক খাত সংশ্লিষ্ট তিনটি সংগঠন- বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিজিএমইএ), বাংলাদেশ নিটওয়্যার প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতি (বিকেএমইএ) এবং বাংলাদেশ টেক্সটাইল মিল এসোসিয়েশন (বিটিএমএ)। এতে বিটিএমএ সভাপতি মোহাম্মদ আলী খোকন এবং বিকেএমইএ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনসুর আহমেদ বক্তব্য রাখেন।

বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গত বছরের জুনে ব্যাংকের সুদহার ছয়-নয় বাস্তবায়নের কথা থাকলেও এর সুবিধা এখনো পাওয়া যায়নি।
ব্যাংক ঋণের উচ্চ সুদের কারণে আমরা কোণঠাসা। এর মধ্যে ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে ন্যূনতম মজুরি ৫১ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। ফলে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে ২৫ থেকে ৩৯ শতাংশ। বেতনের চাপ সামাল দিতে পারছি না, এর মধ্যে গ্যাস-বিদ্যুতের মূল্য বাড়ালে তার চাপ সামাল দেবো কীভাবে?
তিনি বলেন, গণশুনানিতে শিল্পে গ্যাসের মূল্য বর্তমানে প্রতি ঘনফুট ৭.৭৬ টাকা থেকে বৃদ্ধি করে ১৮.৪ টাকা করার প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রস্তাবনা অনুয়ায়ী গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি পাবে ১৩২ শতাংশ। এতে শিল্পে উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি পাবে প্রায় ৫ শতাংশ। আমরা মনে করি, এই প্রস্তাবনা শিল্পের প্রবৃদ্ধি ও বিকাশের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এই মূল্য বৃদ্ধি করা হলে বস্ত্র ও পোশাক খাতে ভয়াবহ বিপর্যয় ডেকে আনতে পারে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, এখন আন্তর্জাতিক বাজারে তেলের দাম কমছে। বিশ্বের কোথাও জ্বালানির দাম আমাদের মতো বাড়ানো হয় না। কিন্তু হঠাৎ করে ১৩২ শতাংশ দাম বাড়ানোর প্রস্তাবের কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবিত এ দাম বাড়লে এ খাতে উৎপাদন খরচ বাড়বে ৫ শতাংশ, যা এ খাতের উদ্যোক্তাদের পক্ষে মোকাবিলা করা সম্ভব নয়। এটি বাস্তবায়ন হলে বস্ত্র শিল্পের উদ্যোক্তারা গভীর সংকটে পড়বেন।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, শিল্পের চাহিদা অনুযায়ী গ্যাসের চাপ পাচ্ছি না। আবার অনেক ক্ষেত্রে গ্যাস পেলেও পর্যাপ্ত নয়; আবার যতটুকু গ্যাস ব্যবহার করছি তার চেয়ে বেশি বিল পরিশোধ করছি। অর্থাৎ গ্যাস ব্যবহার না করে তিতাস গ্যাস কোম্পানিকে বাতাসের মূল্য দিচ্ছি!

সিদ্দিকুর রহমান বলেন, প্রতি বছর ৫ শতাংশ হারে এ খাতে মজুরি বাড়ছে। এর ওপর যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ২০১৪ থেকে ২০১৮ সালে আমাদের পোশাকের দরপতন হয়েছে ৭.৪ শতাংশ এবং ইউরোপে দরপতন হয়েছে ৩.৬৮ শতাংশ। তাই আমরা চাই অন্তত দুই বছর শিল্পে গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি যেন না হয়, সরকারের কাছে এ দাবি জানাচ্ছি।
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ২০১৮ সালে পোশাক খাতে ন্যূনতম মজুরি বাড়ানো হয়, তখন আমাদের দাবি ছিল কোনো উইটিলিটির দাম যেন না বাড়ানো হয়।

এক প্রশ্নের জবাবে সিদ্দিকুর রহমান বলেন, গ্যাসের দাম বৃদ্ধিতে আমাদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু তার আগে নিশ্চিত করতে হবে আমাদের নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস দেয়া হচ্ছে। নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ২০১২ সালে গ্যাস সংযোগের জন্য আমরা আবেদন করেছিলাম তার সংযোগ কেবল পেতে শুরু করেছি। শিল্প কারখানায় গ্যাস না পাওয়ার জন্য যে ক্ষতি হয়েছে সেটা মেকআপ করতে হবে।

সরকার যেটা বলেছে ব্যাংকে ৯ শতাংশ সর্বোচ্চ সুদ হার হবে। আমরা৬ শতাংশ হারে ব্যাংকে রাখতে পারবো। এটাই আজ পর্যন্ত ব্যাংক বাস্তবায়ন করতে পারলো না। আমাদের সঙ্গে এগুলো ঠিক না করে হঠাৎ গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হলে এ শিল্প ধ্বংস হয়ে যাবে।

সিদ্দিকুর রহমান বলেন, সরকারের কাছে অনুরোধ এমন কোনো পদক্ষেপ নিবেন না, যাতে করে শিল্পের বিকাশ রুদ্ধ হয়, শ্রমিক কর্মসংস্থান হারায়, অর্থনীতি গতিহীন হয়ে পড়ে।

বিটিএমএ প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ আলী খোকন বলেন, প্রতি ১০ বছরের জন্য একটি শিল্প পলিসি করা প্রয়োজন। কোন জিনিসের কেমন দাম বাড়ানো হবে সেটা এ পলিসিতে থাকবে। তাহলে প্রতিষ্ঠানগুলোও সে অনুয়ায়ী পরিকল্পনা করতে পারবে। তিনি বলেন, বরাদ্দ অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট গ্যাস কোম্পানিগুলে গ্যাস সরবরাহ করতে পারছে না। অন্যদিকে ইন্ডাস্ট্রিতে যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে তা ক্লিন নয়। এর প্রভাবে শিল্পের যন্ত্রপাতি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। অথচ এর ক্ষতিপূরণ দেয়া হচ্ছে না। আমরা সরকারকে অনুরোধ করছি গ্যাস সংকটের কারণে দীর্ঘদিন যেসব মিল আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার ক্ষতিপূরণ না করা পর্যন্ত গ্যাসের কোনো প্রকার মূল্য বৃদ্ধি অগ্রহণযোগ্য।

বিকেএমইএ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মনসুর আহমেদ বলেন, পোশাক শিল্পকে ধ্বংস করার জন্য গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধি করা হচ্ছে কি না সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। এমনিতেই খরচ বেড়ে যাওয়ায় চাপে রয়েছেন ব্যবসায়ীরা।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর