সকল মানুষের বাংলাদেশ হবে। এটাই ছিল বঙ্গবন্ধু এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন। এই স্বপ্ন বাস্তবায়নের জন্যই আমরা কাজ করছি। বাংলাদেশ হবে সকল মানুষের সমতার ভিত্তিতে। রাষ্ট্রের মালিক জনগণ দেখতে পাই না। আদিবাসীরা ঐতিহ্যগতভাবে এ দেশে বাস করে। রাষ্ট্রের উচিত তাদের ভূমির কাগজ করে দেয়া।
মৌলভীবাজারের জুলেখানগর এলাকায় চা-বাগান কর্তৃপক্ষ এবং আদিবাসীদের বিরোধপূর্ণ ভূমি লাখাইছড়া পরিদর্শন করে এসে মৌলভীবাজার প্রেস ক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে গতকাল দুপুরে মতবিনিময়ে এই কথা বলেন, আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সংসদীয় ককাসের আহ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি। আরো ছিলেন টেকনোক্রাট সদস্য এবং সমন্বয়ক প্রফেসর ড. মেসবাহ কামাল, অ্যাডভোকেট গ্লোড়িয়া ঝর্ণা সরকার, এমপি টেকনোক্রাট সদস্য জান্নাত-এ-ফেরদৌসী, আরডিসি প্রতিনিধি কাজল দেবনাথ, আসাদুল্লাহ সরকার, হিউম্যান রাইটস প্রোগ্রামের মং সিং নিউ, ইউএনডিপি প্রতিনিধি (জাতীয় মানবাধিকার কমিশন) পারী চিংথাম প্রমুখ।
মতবিমিয়ের শুরুতেই প্রফেসর মেসবাহ কামাল জানান পরিদর্শনকালে এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানতে পেরেছেন, গত ২০১৪ সাল থেকে বাগান কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন সময় আদিবাসী কন্দ সম্প্রদায়ের লোকজন যাদের কেউ বাগানে চা শ্রমিক হিসেবে কাজ করে, কেউ অন্যান্য কাজ করে, ফল ফসল ফলিয়ে জীবিকা নির্বাহ করে, তাদের উচ্ছেদ করতে গিয়ে কয়েক দফা অভিযান চালিয়ে ব্যাপক ফসল, ফলের গাছ লেবু এবং কলা বাগান বিনষ্ট করে। যার অর্থমূল্য কয়েক কোটি টাকা হবে। তিনি আরো জানান, পরিদর্শন করে গতকাল তারা জেলা প্রশাসন এবং পুলিশ সুপারের সঙ্গে এই বিষয়ে দেখা করে কথা বলেছেন। মেসবাহ কামাল জানান, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক এবং অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক জানিয়েছেন, বাগান কর্তৃপক্ষ যে ভূমি তাদের বলে দাবি করে উচ্ছেদ অভিযান চালাচ্ছে, সেই ভূমি লিজ নেয়ার জন্য আবেদন করেছে বাগান কর্তৃপক্ষ কিন্তু তা এখনো দেয়া হয়নি। মেসবাহ কামাল তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, এই তথ্যগুলো পেয়েছেন সরজমিন পরিদর্শন করে।
আদিবাসী ও সংখ্যালঘু বিষয়ক সংসদীয় ককাস-এর আহ্বায়ক ফজলে হোসেন বাদশা এমপি আরো বলেন রাষ্ট্রের উচিত আদিবাসীদের ভূমির কাগজ করে দেয়া। আমলাতান্ত্রিক জঠিলতায় যেন কোনো সংকট সৃষ্টি না হয়। সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে। তাছাড়া আদিবাসীরা ঐতিহ্যগতভাবে বসবাস করে। সংখ্যালঘু হওয়ার কারণে তাদের বিচার চাওয়া যেন মাসের পর মাস আটকে না থাকে। তিনি আরো বলেন বাগান কর্তৃপক্ষ লিজ নেয়া জমিতে প্লান্টেশন করছে কিনা তা দেখতে হবে। এই সব বিষয়ে ভূমি ও আইন মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান।