করিমগঞ্জে যৌতুকের দাবিতে প্রজ্ঞা মোস্তফা (২৬) নামে এক অনার্স পড়–য়া স্ত্রীকে ছোরা দিয়ে গলাকেটে হত্যা করেছে পাষ- স্বামী। এ সময় ছোরার আঘাতে প্রজ্ঞার তিন মাস বয়সী শিশু সন্তানের হাতের একটি আঙ্গুল কেটে যায়। বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নের উত্তর চান্দপুর গ্রামে নৃশংস এই ঘটনাটি ঘটে। ঘটনার পর পর অভিযান চালিয়ে ঘাতক দেলোয়ার হোসেন মাহতাব (৩৬)কে আটক করেছে পুলিশ। নিহত প্রজ্ঞা মোস্তফা জেলার ইটনা উপজেলার মৃগা ইউনিয়নের লাইমপাশা গ্রামের বাসিন্দা ও হবিগঞ্জ জেলার আজমিরীগঞ্জ সরকারি এবিসি পাইলট মডেল উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আহসান মোস্তফার মেয়ে। তিনি কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজে সমাজকর্ম বিষয়ে অনার্স চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন। অন্যদিকে ঘাতক দেলোয়ার হোসেন মাহতাব করিমগঞ্জ উপজেলার কাদিরজঙ্গল ইউনিয়নের উত্তর চান্দপুর গ্রামের মৃত মো. ইমাম উদ্দিনের ছেলে। পুলিশ ও পারিবারিক সূত্র জানায়, বছর দেড়েক আগে কুয়েতপ্রবাসী দেলোয়ার হোসেন মাহতাবের সঙ্গে কিশোরগঞ্জ সরকারি মহিলা কলেজের অনার্সের ছাত্রী প্রজ্ঞা মোস্তফার পারিবারিকভাবে বিয়ে হয়।
বিয়ের পর থেকে যৌতুকের দাবিতে নানাভাবে স্ত্রী প্রজ্ঞাকে নির্যাতন চালিয়ে আসছিল স্বামী মাহতাব। এর মধ্যে মাস তিনেক আগে প্রজ্ঞা একটি মেয়ে সন্তানের জন্ম দেন। সন্তান জন্মদানের পর থেকে প্রজ্ঞার ওপর স্বামীর অত্যাচার-নির্যাতনের মাত্রা বাড়তে থাকে। এ পরিস্থিতিতে কিছুদিন আগে প্রজ্ঞাকে তার বাবার বাড়ি থেকে দুই লাখ টাকা এনে দেয়ার জন্য চাপ দেয় মাহতাব। এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কলহ চলে আসছিল। বৃহস্পতিবার সকালে এ নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়। এক পর্যায়ে মাহতাব ক্ষিপ্ত হয়ে প্রজ্ঞাকে ঘরের মধ্যে ফেলে ছোরা দিয়ে জবাই করে। এতে ঘটনাস্থলেই প্রজ্ঞা মারা গেলে তার লাশ ফেলে রেখে মাহতাব পালিয়ে যায়। পরে এলাকাবাসীর খবরের ভিত্তিতে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে নিহত প্রজ্ঞা মোস্তফার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য কিশোরগঞ্জ জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। এ ছাড়া পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘাতক দেলোয়ার হোসেন মাহতাবকে আটক করে পুলিশ। করিমগঞ্জ থানার ওসি মো. মুজিবুর রহমান জানান, ঘটনার পর পরই পুলিশ ঘাতক স্বামীকে আটক করেছে। এ সময় হত্যাকা-ে ব্যবহৃত ছোরাটি উদ্ধার করা হয়েছে। এ ছাড়া নিহতের বাবা মো. আহসান মোস্তফা বাদী হয়ে থানায় মামলা করেছেন। এ ব্যাপারে পরবর্তী আইনানুগ পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে।