× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, বুধবার , ১১ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৫ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

২৪শে মার্চ থেকে কেডিএ’র নিবন্ধন শুরু

বাংলারজমিন

স্টাফ রিপোর্টার, খুলনা থেকে
২২ মার্চ ২০১৯, শুক্রবার

খুলনা মহানগরী সংলগ্ন উপ-শহর এলাকায় শতাধিক প্রতিষ্ঠান রিয়েল এস্টেট ব্যবসার সঙ্গে জড়িত থাকলেও নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান মাত্র দুটি। স্বল্প সময়ের মধ্যে সকল প্রতিষ্ঠান নিবন্ধনের আওতায় না এলে খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ বা কেডিএ আইন প্রয়োগ করতে বাধ্য হবে এমনটি সাফ জানিয়ে দিলেন কেডিএ চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএসএম মাহমুদ হাসান, এনডিসি, পিএসসি, পিইঞ্জ। রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীদের নিবন্ধনের জন্য আগামী ২৪শে মাচ থেকে কেডিএ’র ফ্রন্ট ডেস্কে সার্বক্ষণিক (অফিস সময়) লোক থাকবে। সেখান থেকে ফরম সংগ্রহ সাপেক্ষে রিয়েল এস্টেট ব্যবসায়ীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার জন্যও তিনি আহ্বান জানান। একইসঙ্গে যেসব প্রতিষ্ঠান রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ অনুযায়ী নিবন্ধনের আওতায় আসবে না তাদের ব্যাপারে কেডিএ কোনো দায়-দায়িত্ব নিতে পারবে না বলেও তিনি জানিয়ে দেন।
এ সময় উদ্যোক্তাদের পক্ষ থেকেও নিবন্ধনের বিষয়টি সহজ করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়। এ প্রসঙ্গে কেডিএ চেয়ারম্যান বলেন, সকল প্রকার হয়রানিমুক্ত ভাবেই নিবন্ধন প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হবে। সে ক্ষেত্রে কারও বিরুদ্ধে কোনো অনিয়মের অভিযোগ উঠলে সরাসরি তার শরণাপন্ন হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
কেডিএ’র সূত্র মতে, আজ থেকে প্রায় ৫-৬ বছর আগে কেডিএ থেকে নিবন্ধন গ্রহণ করে দুটি প্রতিষ্ঠান।
এর একটি শেখ আবেদ আলীর মালিকানাধীন বৈশাখী ডেভেলপারস লিমিটেড এবং অপরটি মো. সাইফুল ইসলাম দোয়েলের মালিকানাধীন ডেলটা ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড। অথচ খুলনায় রয়েছে শতাধিক রিয়েল এস্টেট ব্যবসা প্রতিষ্ঠান। যেগুলোর মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, বিশ্বাস প্রোপার্টিজ লি., শিকদার প্রোপার্টিজ লি., সুন্দরবন আবাসিক প্রকল্প এন্ড বিল্ডার্স লি., গুলজান সিটি, আব্দুল্লাহ আবাসিক এলাকা, টুটুল নগর আবাসিক এলাকা, আলিফ এন্ড মিডিয়া সেন্টার, ইমা ইন্টারন্যাশনাল, সিয়াম হাউজিং প্রকল্প, স্বপ্নগড়ি আবাসিক প্রকল্প, মোহাম্মাদিয়া হাউজিং, জামান আবাসিক প্রকল্প, সিয়াম এন্টারপ্রাইজ, মোল্লা আবাসিক প্রকল্প, রূপনগর আবাসিক প্রকল্প, প্রগতি আবাসন, সবুজ বাংলা আবাসিক প্রকল্প, নিকুঞ্জ আবাসিক এলাকা, একতা আবাসন প্রকল্প, গ্রীন টাউন, রসুল আবাসিক প্রকল্প,  কৈয়া আবাসিক প্রকল্প, নিউ বসুন্ধরা রিয়েল এস্টেট লি., স্বপ্নীল আবাসন, মুন স্টার রিয়েল এস্টেট, সততা আবাসন, বসতি প্রোপার্টিজ, মোস্তফা আবাসিক প্রকল্প, আঙিনা পল্লী, আঙিনা রিয়েল এস্টেট কোং, উজান নিবাস, মেসার্স সিয়াম প্রোপার্টিজ, তানিশা আবাসিক প্রকল্প প্রভৃতি।
এর মধ্যে কেডিএ’র পক্ষ থেকে চলতি বছরের প্রথম দিকে ৬৮টি রিয়েল এস্টেট প্রতিষ্ঠানকে পত্র দিয়ে নিবন্ধন গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়। কিন্তু তাতেও সাড়া মেলেনি। এজন্যই কেডিএ সকলকে ডেকে মতবিনিময়ের মাধ্যমে নিবন্ধন গ্রহণের এ আয়োজন করে। আধুনিক খুলনা গড়তেই এ উদ্যোগ বলে জানান কেডিএ কর্তৃপক্ষ। উন্নয়নের স্বার্থে এ সময় সকলেই ঐকমত্য পোষণ করেন। তবে কেডিএ’রও যেসব আবাসিক এলাকা রয়েছে সেগুলোকেও নিয়মের মধ্যে আনা, ময়ূর নদীকে ঘিরে আধুনিক খুলনা গড়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করা, কেসিসি ও জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় রেখে উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা, নিবন্ধন পদ্ধতি সহজ করা, মাস্টার প্ল্যান ও ডিটেল এরিয়া প্ল্যান করার আগে নগরবাসীর সঙ্গে মতবিনিময় করে তাদের মতামত নেয়া, কেডিএ’র আবাসিক এলাকাগুলোর সঙ্গে অন্যান্য নাগরিকদের দূরত্ব কমিয়ে আনতে ব্যবস্থা নেয়া, মামলা চলমান থাকাবস্থায় জমির কেনাবেচা বন্ধ রাখতে কেডিএকে ভূমিকা নেয়া, সরকারি খাল বন্ধ করে রাস্তা তৈরি না করাসহ উন্নয়ন সম্পর্কিত নানা বিষয়ে সভায় অংশগ্রহণকারীদের পক্ষ থেকে পরামর্শ দেয়া হয়।
কেসিসির সাবেক ভারপ্রাপ্ত মেয়র ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আনিসুর রহমান বিশ্বাষ বলেন, কেডিএ যে ‘২০ ফুটের আইন’ নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছে অর্থাৎ কোন সড়ক ২০ ফুট না হলে সেখানে নতুন ভবন অনুমোদন দেয়া হবে না এটি থেকে সরে আসা উচিত। কেননা যেসব এলাকায় আজ থেকে ২০-২৫ বছর আগে বা তারও আগে থেকে ১২ ফুট রাস্তা থাকলেই প্ল্যান দেয়া হতো সেসব স্থানের ক্ষেত্রে নতুন এ আইন বাস্তবায়ন অসম্ভব। বরং নতুন এলাকার জন্য ওই আইন বাস্তবায়ন করা সম্ভব হলেও পুরাতন এলাকার জন্য এটি বাস্তবায়ন করতে হলে নগরীর অনেক এলাকার বহু স্থাপনাই ভেঙে ফেলতে হবে। সেজন্য ক্ষেত্র বিশেষে এ আইন শিথিল করা উচিত বলেও তিনি মন্তব্য করেন।
খুলনা প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ফারুক আহমেদ বলেন, সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় খুলনাকে একটি আধুনিক ও মডেল নগরী গড়া সম্ভব। এ ক্ষেত্রে নগরবাসীর সঙ্গে কখনো ছোট আকারে আবার কখনো বৃহৎ আকারে এমন মতবিনিময় করে কেডিএ উন্নয়নের ধারা অব্যাহত রাখতে পারে।
কেডিএ’র প্রধান প্রকৌশলী কাজী মো. সাবিরুল আলম বলেন, ময়ূর নদী কেন্দ্রিক সাম্প্রতিক যে পরিকল্পনাটি গ্রহণ করা হয়েছে সেটি কেডিএ’র কোনো পরিকল্পনা নয়। এটি হচ্ছে নেদারল্যান্ডসভিত্তিক একটি প্রকল্পের সহযোগিতা মাত্র। ওই প্রকল্পের আলোকে ময়ূর নদীর আলুতলা বাঁধ থেকে শুরু করে রায়ের মহল পর্যন্ত দু’ধারে রাস্তা নির্মাণ ও তার পাশে বর্জ্য পানি শোধন করে নদীতে ফেলার উপযোগী ড্রেন নির্মাণ এবং তার পরের একশ’ ফুট নিয়ে বনায়নের পরিকল্পনা রয়েছে।
খুলনা উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (কেডিএ) চেয়ারম্যান ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এএসএম মাহমুদ হাসান এনডিসি, পিএসসি, পিইঞ্জ বলেন, কেডিএ এলাকায় প্লট/ফ্ল্যাট ব্যবসা করতে হলে অব্যশই তাকে রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০ মেনে কাজ করতে হবে। কিছু অসাধু ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান নিচু জমি ভরাট করে অবৈধ সাইনবোর্ড লাগিয়ে প্লট এবং ভবন নির্মাণ করে ফ্ল্যাট ক্রয়-বিক্রয় করছেন। এতে একদিকে আইন লঙ্ঘিত হচ্ছে অন্যদিকে শহরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পিত উন্নয়ন বিঘ্নিত হওয়াসহ এসব প্লট/ফ্ল্যাট কিনে জনসাধারণ প্রতারণতার শিকার হচ্ছেন। সকল কাগজপত্র নিয়ে ফরম পূরণ করে কেডিএতে জমা দিন। সবকিছু ঠিক থাকলে ২ সপ্তাহের মধ্যে আপনার কাজ হয়ে যাবে।
‘রিয়েল এস্টেট উন্নয়ন ও ব্যবস্থাপনা আইন ২০১০’ এ বলা হয়েছে, কেডিএ’র অনুমতি ব্যতীত নিচু জমি ভরাট বা উঁচু করলে অথবা কোনো প্রাকৃতিক জলাধারের পানি প্রবাহ বাধাগ্রস্ত করলে ২ বছর কারাদণ্ড বা ১০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে। ভূমি উন্নয়নের মাধ্যমে প্লট সৃষ্টি কিংবা ভবন নির্মাণ করে ফ্ল্যাট তৈরি ও ক্রয়-বিক্রয় করলে সর্বোচ্চ তিন বছর কারাদণ্ড বা ২০ লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হওয়ার বিধান রয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর