এপ্রিল থেকে মাঠের কর্মসূচিতে যাচ্ছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এপ্রিল জুড়ে বিভাগীয় শহর এবং জেলাপর্যায়ে কর্মিসভা ও সমাবেশের মাধ্যমে মাঠের কর্মসূচি শুরু করছে প্রধান বিরোধী জোট। গতকাল বিকালে রাজধানীর পুরানা পল্টনে ঐক্যফ্রন্টের অস্থায়ী কার্যালয়ে ফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠক শেষে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের নেতা মাহমুদুর রহমান মান্না। একই সঙ্গে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে তিন দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেন তিনি। মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, আগামী ২৬শে মার্চ মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে ঐক্যফ্রন্টের নেতারা সকাল ৯টায় সাভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। নতুন নির্বাচনের দাবি, নিরাপদ সড়কের দাবি, সিটি করপোরেশন ও উপজেলা নির্বাচন, ডাকসু নির্বাচনে ভোট ডাকাতি, গ্যাসের মূল্য বৃদ্ধির পাঁয়তারা এবং অর্থনৈতিক বৈষম্যের প্রতিবাদে আগামী ৩০শে মার্চ বেলা ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে মানববন্ধন।
৩১শে মার্চ বিকাল ৩টায় রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে স্বাধীনতা দিবসের আলোচনাসভা অনুষ্ঠিত হবে। একই সঙ্গে তিনি ঘোষণা করেন, এপ্রিল মাসজুড়ে বিভাগীয় শহর এবং জেলাপর্যায়ে কর্মিসভা ও সমাবেশ করবে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট।
তিনি বলেন, আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের গণশুনানির রিপোর্ট পুস্তক আকারে বাংলা এবং ইংরেজিতে প্রকাশ করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, জাতীয় ও উপজেলা নির্বাচনে ভোট ডাকাতি হয়েছে।
যে নির্বাচনে অনেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছে। পাহাড়ী এলাকাসহ অনেক এলাকায় নির্বাচন কেন্দ্রিক অনেক প্রাণহানি ঘটেছে। কোনো কোনো কেন্দ্রে কুকুর শুয়ে থাকতে দেখা গেছে। আবার কোনো কেন্দ্রে আনসার বাহিনীকে শুয়ে থাকতে দেখা গেছে। কোনো ভোটার যায়নি। নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন হয়েছে। সরকার ইতিমধ্যে স্বীকার করে নিয়েছে নিরাপদ সড়কের নিশ্চয়তা তারা দিতে পারেনি। ব্যাংক ঋণের মাধ্যমে কোটি কোটি টাকা যারা চুরি করেছে। যে ঋণ (চুরি) কোনোদিন পরিশোধ হবে না। তাদের এক শতাংশের বিনিময়ে সমস্ত ঋণ পরিশোধের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ জানাই। কারণ সরকার কোটি কোটি টাকা যারা চুরি করে নিয়েছে তাদের ঋণ মওকুফ করে দেয়। কিন্তু কৃষকের সামান্য ঋণ মওকুফ করে না। তাদের জেলে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, মাসের পর মাস, বছরের পর বছর নাগরিকরা অপহৃত হচ্ছে। আমাদের গোয়েন্দা বাহিনী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কি কারণে এসব অপহরণের শিকার মানুষদের উদ্ধার করতে পারছে না সেটা আমরা বুঝতে পারছি না। এটা নিয়ে জনগণের মধ্যে উৎকণ্ঠা বাড়ছে।
আবদুর রব বলেন, দেশের জনগণ আজ হতবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। দেশে এখন এক দলীয় শাসন নয়, এক ব্যক্তির শাসন চলছে। জাতি তাকিয়ে আছে স্বৈরাচারী, ডিক্টেটরি, ফ্যাসিবাদী শাসনকে পরাজিত করতে ঐক্যফ্রন্ট ভূমিকা রাখুক।
এর আগে বিকাল সাড়ে ৪টায় জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রবের সভাপতিত্বে জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে অন্যদের মধ্যে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. আবদুল মঈন খান, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মোহসীন মন্টু, নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, নাগরিক ঐক্যের সমন্বয়ক শহীদুল্লাহ কায়সার, কেন্দ্রীয় নেতা মো. মমিন উল্লাহ, ডা. জাহিদ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান তালুকদার বীর প্রতীক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।