বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন বুর্জ খলিফায় ফুটিয়ে তোলা হলো নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জাসিনদা আরডেনকে। এতে দেখানো হয়েছে, তিনি ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলায় নিহত মুসলিমদের পরিবারের সদস্যদের জড়িয়ে ধরে শান্তনা দিচ্ছেন। হামলার পর মুসলিমদের প্রতি তিনি যে সমর্থন, সম্মান দেখিয়েছেন তার প্রতি শ্রদ্ধা প্রকাশ করতে শুক্রবার (২২ শে মার্চ) সংযুক্ত আরব আমিরাতের দুবাইয়ে অবস্থিত বিশ্বের সর্বোচ্চ ভবন বুর্জ খলিফায় তাকে এভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়। সিডনি মর্নিং হেরাল্ডকে উদ্ধৃত করে এ খবর দিয়েছে অনলাইন দ্য স্ট্রেইটস টাইমস।
প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায় ৮২৯ মিটার উচু বুর্জ খলিফার চারদিকে ঘুটঘুটে অন্ধকার। তার মধ্যে মাথা তুলে দাঁড়িয়ে আছে এই টাওয়ার। এর ওপরেই ফুটিয়ে তোলা হয়েছে জাসিনদা আরডেনকে। তিনি মাথায় স্কার্ফ পরা।
মসজিদে হামলায় নিহতদের এক নারী স্বজনকে জড়িয়ে ধরে আছেন তিনি। তার মাথার একটু উপরে আরবিতে লেখা ‘সালাম’ যার অর্থ শান্তি। বুর্জ খলিফার এমন ছবি টুইট করেছেন সংযুুক্ত আরব আমিরাতের প্রধানমন্ত্রী, ভাইস প্রেসিডেন্ট ও দুবাইয়ের শাসক শেখ মোহাম্মদ।
তিনি শুক্রবার টুইটে লিখেছেন, মসজিদে হামলায় শহীদদের সম্মানে নিউজিল্যান্ড নীরব আজ (শুক্রবার)। সন্ত্রাসী হামলার পর বিশ্বজুড়ে মুসলিমদের মধ্যে এক হতাশার সৃষ্টি হয়েছে। তারপর নিউজিল্যান্ড ও এ দেশের প্রধানমন্ত্রী জাসিনদা আরডেন যে আন্তরিক সহানুভূতি ও সমর্থন দিয়েছেন তাতে ১৫০ কোটি মুসলিমের শ্রদ্ধা পেয়েছেন তিনি।
গত সপ্তাহের শুক্রবার ক্রাইস্টচার্চে দুটি মসজিদে জুমার নামাজের সময় সন্ত্রাসী ব্রেনটন টেরেন্ট হামলা চালায়। নির্বিচারে গুলি করে হত্যা করে কমপক্ষে ৫০ জন নামাজরত মুসল্লিকে। এ ঘটনায় নিউজিল্যান্ড সহ পুরো মুসলিম বিশ্ব ও সচেতন মানবতার মধ্যে গভীর এক শোকের ছায়া নেমে আসে। বিশ্ব নেতারা, বিভিন্ন সম্প্রদায় এ হামলার গভীর নিন্দা জানান। হামলার সঙ্গে সঙ্গে নিউজিল্যান্ড ও প্রধানমন্ত্রী আরডেন যে সাহসী পদক্ষেপ নিয়েছেন সে জন্য সারা বিশ্ব তার প্রশংসায় পঞ্চমুখ। নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে শুক্রবার আল নূর মসজিদে বিশেষ দোয়ার আয়োজন করা হয়। এদিন মসজিদে স্থান সংকুলান না হওয়ায় জামাত অনুষ্ঠিত হয় আল নূর মসজিদের সামনের হেগলি পার্কে। তাতে যোগ দেন প্রায় ২০০০০ মানুষ।
এতে উপস্থিত হয়েছিলেন জাসিনদা আরডেন সহ বিভিন্ন ধর্ম, বর্ণের মানুষ। নারীরা মুসলিম রীতি অনুসরণ করে মাথায় স্কার্ফ পরে অবস্থান করে ইমামের বয়ান শোনেন গভীর মনোযোগ দিয়ে। মুসলিম সম্প্রদায়ের মনে যে ক্ষতের সৃষ্টি হয়েছে এর মধ্য দিয়ে তার প্রতি সহানুভূতির প্রকাশ ঘটান। দুই মিনিট নীরবতা পালনের পর সংক্ষিপ্ত বক্তব্য রাখেন জাসিনদা আরডেন। তিনি এ সময় পবিত্র হাদিস থেকে উদ্ধৃতি দেন। বলেন, আপনাদের সঙ্গে শোক প্রকাশ করছে নিউজিল্যান্ড। আমরা সবাই মিলে এক।