জিনজিরা ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল ভবন উদ্বোধনের পর ১৩ বছরে চালু আছে শুধু বহির্বিভাগ। হাসপাতালের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের অধিকাংশ পদ শূন্য। ২০০৬ সালে জিনজিরা ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের ভবনটি উদ্বোধন করেন সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী ড. খন্দকার মোশাররফ হোসেন, তবে মেডিকেলের কোনো কার্যক্রমই শুরু হয়নি। ২০০৯ সালে বহির্বিভাগ চালু হলেও ৬-৭ মাস পরে আবার বন্ধ হয়ে যায়। আবার ২০০৯ সালে চালু হলে তাও ৭-৮ মাস পরে বন্ধ হয়ে যায়। হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার হাবিবুর রহমান জানান, ২০১৮ সালের ৫ই মে জিনজিরা ২০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালটির বহির্বিভাগ চালু হয়েছে। তবে এখানে ৬ জন ডাক্তারের পদ থাকলেও এখন ৪ জন কর্মরত আছেন। তিনি আরো জানান অর্থনৈতিক কোটা ও প্রশাসনিক অনুমোদন না থাকায় এই হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গভাবে চালু করা সম্ভব হচ্ছে না।
কর্মরত ডাক্তাররা হলেন আবাসিক মেডিকেল অফিসার মো. হাবিবুর রহমান, ডা. নিগার সুলতানা, খাদিজা রহমান ও খাইরুল আলম। অপরদিকে কর্মচারীদের যেসব পদ শূন্য আছে তাহলো ফার্মাসিস্ট, হেড এসিস্ট্যান্ট কাম ক্যাশিয়ার, টাইপিস্ট কাম ডাটা এন্টি অপারেটর, আয়া, ওয়ার্ড বয়। নেই কোনো ওষুধের বরাদ্দ, কিছু যন্ত্রপাতি থাকলেও লোকবলের অভাবে সেগুলো ব্যবহার হচ্ছে না। ইনটেক অবস্থায় এই যন্ত্রপাতিগুলো রয়েছে। গত ৯ই সেপ্টেম্বর ২০১৮ সাবেক স্বাস্থ্যমন্ত্রী মো. নাসিম ও বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ বিপু হাসপাতালটি পরিদর্শন করেন এবং পূর্ণাঙ্গ চালু করার আশ্বাস দেন। ডা. হাবিবুর রহমান আরো জানান কর্মকর্তা ও কর্মচারী যারা আছেন তারাও চুক্তিভিত্তিক। এখানে স্থায়ীভাবে কাউকে নিয়োগ দেয়া হয়নি। হাসপাতাল ভবনের বাথ রুমসহ একাধিক রুম দীর্ঘদিন অব্যবহৃত থাকায় বর্তমানে অনুপযোগী। এই হাসপাতালের ডাক্তার, নার্সদের থাকার জন্য একটি ভবন আছে যাতে রয়েছে ৪টি ফ্ল্যাট, ২টি ডাক্তারদের জন্য, ২টি নার্সদের জন্য। কিন্তু ভবনের ফ্ল্যাটগুলো ব্যবহারের সম্পূর্ণ অনুপযোগী। তিনি এই সকল সমস্যার দ্রুত সমাধানের জন্য যথাযথ কর্তৃপপক্ষের আশু দৃষ্টি কামনা করেন। রোগী নাসিমা (৫০) জানান, অনেক দিন আগে এখানে হাসপাতালটি স্থাপিত হয়। কিন্তু দুঃখের বিষয় আমরা এখানে তেমন কোনো চিকিৎসা পাই না। আমরা অসুস্থ হলে মিটফোর্ড হাসপাতাল অথবা অন্য কোনো হাসপাতাল বা ক্লিনিকে চিকিৎসা নিতে হয়। এই হাসপাতালটি চালু থাকলে আমাদের জন্য চিকিৎসা নিতে সুবিধা হতো। রোগী আ. করিম (৪৫) জানান এই হাসপাতালে এলে শুধু ডা. দেখানো যায়, ওষুধ বা অন্য কোনো সুযোগ-সুবিধা এখানে নেই। এলাকাবাসীর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার প্রতি দাবি দ্রুত জিনজিরা ২০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটি পূর্ণাঙ্গ চালু করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়ে কেরানীগঞ্জবাসীকে স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে উপকৃত করবেন।