× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, শনিবার , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৮ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

অধরা চট্টগ্রামের চাঞ্চল্যকর তিন শিশুহত্যার খুনিরা

দেশ বিদেশ

ইব্রাহিম খলিল, চট্টগ্রাম থেকে
২৪ মার্চ ২০১৯, রবিবার

 চট্টগ্রাম মহানগরে গত এক বছরের ব্যবধানে পৃথকভাবে সংঘটিত চাঞ্চল্যকর ৩ শিশুহত্যার কিনারা করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট তদন্ত কর্মকর্তারা। নিষ্পাপ এ শিশুগুলো কেন খুন হয়েছে, খুনিই বা কে, তা উদঘাটন করতে পারেনি তদন্ত কর্মকর্তারা।

সিআইডি চট্টগ্রাম অঞ্চলের বিশেষ পুলিশ সুপার ড. নাজমুল করিম এই বিষয়ে বলেন, নগরীর বাকলিয়ায় স্কুলছাত্রী ইলহাম হত্যাকাণ্ডের পর ঘটনাস্থল থেকে বিভিন্ন আলামত সংগ্রহ করেছিল সিআইডির ফরেনসিক টিম। এসময় রক্তের একটি স্যাম্পল পাওয়া যায় এ ঘটনায় গ্রেপ্তার হওয়া শিক্ষানবিস আইনজীবী রিজুয়ান কবীর রাজুর বাসার দরজায়। কিন্তু ফরেনসিক পরীক্ষায় রক্তের ওই স্যামপলটি রক্ত হিসেবে নির্ণয় হয়নি। হয়তো রক্তের ওই দাগটি ফরেনসিক টিম সঠিকভাবে সংগ্রহ করতে পারেনি। এটি শুকিয়ে যাওয়ায় পরীক্ষায় রক্ত হিসেবে ধরা পড়েনি।

আর ধরা পড়লে ডিএনএ টেস্ট করে সন্দেহভাজন খুনির ডিএনএর সঙ্গে মিলিয়ে দেখা যেত।
ফলে মামলার তদন্ত এ জায়গায় ওই রক্তের দাগে আটকে আছে বলে জানান তিনি। সিআইডির এই কর্মকর্তা বলেন, শিক্ষানবিশ আইনজীবী রিজুয়ান কবীরকে ইলহাম হত্যাকাণ্ডের প্রধান সন্দেহভাজন মনে করা হলেও খুনের দায় তিনি স্বীকার করেননি। পেশায় আইনজীবী হওয়ায় আইনের ফাঁকফোকর তিনি জানেন। এ কারণে নানা কৌশলে হত্যার দায় এড়ানোর চেষ্টা করছেন। এদিকে মামলার তদন্ত নিয়ে চরম অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন ভুক্তভোগী পরিবারগুলো। এরমধ্যে ইলহামের বাবা নাসির উদ্দিন বলেন, আমার মেয়ের নির্মম হত্যার ৮ মাস পেরিয়ে গেলেও খুনি কে, তা আজও জানাতে পারেনি সিআইডি। আমি মেয়ের খুনির ফাঁসি চাই। অপর দুই শিশুর অভিভাবকদের অভিমত, হারানো সন্তান তো আর ফিরে পাবো না। কিন্তু খুনিদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

ঘটনার বিবরণ: চলতি বছরের ২৩শে জানুয়ারির ঘটনা। নগরীর আকবর শাহ থানার কাট্টলী বেড়িবাঁধ এলাকা। গাড়ি থেকে নির্জন এলাকায় ফেলে দেয়া হয় ১১ বছরের অজ্ঞাত এক শিশুকে। ওড়না দিয়ে হাত-পা এবং মুখ বাঁধা অবস্থায় পুলিশ ওই শিশুটিকে উদ্ধার করে। তার শরীরের বিভিন্ন স্থানে জখমের চিহ্ন পায় পুলিশ। তাকে ভর্তি করা হয় চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে। পাঁচদিন পর চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় শিশুটি।

এ ঘটনায় এসআই নুরুল আলম বাদী হয়ে আকবর শাহ থানায় হত্যা ও ধর্ষণের অভিযোগে মামলা করেন। তার ধারণা, শিশুটিকে ধর্ষণ করা হয়েছিল। এ ঘটনার প্রায় দুই মাস পার হয়ে গেলেও শিশুটির মা-বাবা কে, তার বাড়ি কোথায়, কারা তার খুনি, আজও বের করতে পারেনি পুলিশ। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আকবরশাহ থানার এসআই বদিউল আলম বলেন, শিশুটির পরিচয় এখনও পাওয়া যায়নি। খুনি শনাক্তের চেষ্টা চলছে। ২০১৮ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারি। ঘটনাস্থল বাকলিয়া থানার ইসহাকের পুল। বাসা থেকে খেলতে বেরিয়েছিল শিশু নুদরাত। অনেকক্ষণ পর্যন্ত বাসায় ফিরে না আসায় তাকে খোঁজাখুঁজি করে পরিবার। না পেয়ে বাকলিয়া থানায় জিডি করেন তার বড় বোন রোজি আক্তার। নিখোঁজের পাঁচ দিন পর ৮ই ফেব্রুয়ারি রাতে সার্সন রোড এলাকার পাহাড়ি জঙ্গল থেকে শিশুটির গলিত লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। এ ঘটনায় বাকলিয়া থানায় মামলা হয়। এক্ষেত্রেও বছর পার হলেও শিশু নুদরাতের হত্যা রহস্য উদঘাটন করতে পারেনি মামলার তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। তদন্ত কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক দেবাশীষ চৌধুরী জানালেন, নুদরাতের খুনিদের এখনও চিহ্নিত করা যায়নি। তবে মামলার তদন্ত চলছে। মামলার বাদী নুদরাতের বড় বোন বলেন, এক বছরেও আমার বোনের খুনি গ্রেপ্তার হয়নি। হত্যার রহস্যও বের করতে পারেনি সিআইডি।

এটা খুবই দুঃখজনক।২০১৮ সালের ২৭শে জুন। নগরের বাকলিয়া থানার ল্যান্ডমার্ক আবাসিক এলাকা। ঘটনাস্থল এমএস লায়লা ভবনের ছয়তলা। স্কুলছাত্রী শিশু ইলহামকে গলা কেটে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। ইলহামের বাবা নাসির উদ্দিন সৌদিপ্রবাসী। দুই মেয়ের মধ্যে ইলহাম ছিল বড়। ছোট বোনের নাম জারিন। মায়ের নাম নাসরিন আক্তার খুশবু। ঘটনার দিন সকাল ৮টায় জারিনকে স্কুলে পৌঁছে দিয়ে বাসায় ফিরে খুশবু দেখেন, বিছানায় ইলহামের গলাকাটা লাশ পড়ে আছে। তার চিৎকার শুনে পাশের ফ্ল্যাটে থাকা শিক্ষানবিস আইনজীবী রিজুয়ান কবির রাজু ইলহামকে উদ্ধার করে চমেক হাসপাতালে নিয়ে যান। খবর পেয়ে সৌদি আরব থেকে দেশে ফিরে আসেন ইলহামের বাবা নাসির উদ্দিন। এ ঘটনায় তিনি বাকলিয়া থানায় মামলা করেন। শিক্ষানবিস আইনজীবী রাজুকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। ঘটনার এক মাস পর ২৬শে জুলাই মামলা তদন্তের দায়িত্ব নেয় সিআইডি। মামলাটি তদন্ত করছেন সিআইডি চট্টগ্রামের পরিদর্শক স্বপন কান্তি বড়ুয়া। রাজুকে রিমান্ডে নিয়ে কয়েক দফা জিজ্ঞাসাবাদ করে সিআইডি। কিন্তু ইলহাম হত্যার বিষয়ে মুখ খুলছেন না রাজু। তিনি এখন জামিনে আছেন।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর