× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, বৃহস্পতিবার , ১২ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১৬ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

আদালতের রেকর্ড কিপারের সুদ ব্যবসায় সর্বস্বান্ত ব্যবসায়ীরা

বাংলারজমিন

সিরাজগঞ্জ প্রতিনিধি
২৫ মার্চ ২০১৯, সোমবার

সিরাজগঞ্জের অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল) আদালতের রেকর্ড কিপার আমিনুল ইসলামের বিরুদ্ধে রমরমা সুদের ব্যবসার অভিযোগ উঠেছে। তার কারণে সিরাজগঞ্জ শহরের অন্তত ২০ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী এখন ভবঘুরে। টাকা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় বর্তমানে প্রত্যেকের মাথার উপরে ঝুলছে একাধিক মামলা। গতকাল সকালে শহরের ‘মিডিয়া হোমে’ ভুক্তভোগী ব্যবসায়ীরা সংবাদ সম্মেলন করে এ অভিযোগ করেন।

লিখিত বক্তব্যে শহরের ‘চারুতা’ কাপড় ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম রাজু অভিযোগ করে বলেন, আমিনুল ইসলাম আদালতের রেকর্ড কিপারের পাশাপাশি তার নামে মেসার্স গুলে জান্নাত ট্রেডার্স নামে একটি ট্রেড লাইন্সেস আছে। ওই ট্রেড লাইন্সেসের প্যাড ব্যবহার করে তিনি সুদের ব্যবসা করে থাকেন। আমি নিজেও ব্যবসা করার জন্য আমিনুল ইসলামের কাছ থেকে ৩শ’ টাকার নন-জুডিশিয়াল সাদা স্ট্যাম্পে সই দিয়ে ও সাদা চেক প্রদান করে শতকরা ১৫ টাকা হারে সুদে তিন লাখ ৪৫ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। এ পর্যন্ত ৮ লাখ টাকা সুদ দিয়েছি এবং আসল টাকার মধ্যে ফেরত দিয়েছি দুই লাখ ৮০ হাজার টাকা।
অথচ বাকি টাকার জন্য সে আমার বিরুদ্ধে ১৭ লাখ টাকার একটি মামলা করেছেন।
তিনি আরো বলেন, আমিনুল ইসলামের সহযোগী সাব জজ (চৌহালী) আদালতের জারিকারক এবং বর্তমানে প্রেষণে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ (২য়) আদালতের নিম্নমান সহকারী হিসেবে কর্মরত শামিমা আরজু রুনুকে দিয়েও সে ১৮ লাখ টাকা দাবির একটি মিথ্যা মামলা করেছেন। যে কারণে আমি এখন সর্বস্বান্ত। পাশাপাশি মাথার উপরে ঝুলছে ২টি মামলা।

সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত শহরের এসএস রোডের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী রাসেল আহম্মেদ অভিযোগ করে বলেন, ৩শ’ টাকার নন-জুডিশিয়াল সাদা স্ট্যাম্পে সই দিয়ে ও সাদা চেক প্রদান করে ব্যবসা করার জন্য আমিনুল ইসলামের কাছ থেকে সুদে ২০ হাজার টাকা নিয়েছিলাম। সুদাসলে সব টাকা পরিশোধ করেছি। আর মাত্র ৫শ’ টাকা পাবে। তারপরও ওই সাদা স্ট্যাম্প ও সাদা চেক ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে সে দেড় লাখ টাকা জালিয়াতির মামলা করেছে। লিখিত বক্তব্যে আরো বলা হয়, সরকারি চাকরির পাশাপাশি রমরমা সুদের ব্যবসা করে আমিনুল ইসলাম ইতিমধ্যেই বেশ কয়েকটি বসতবাড়ি ও কোটি কোটি টাকার ধন-সম্পদের মালিক হয়েছেন। তার মালিকানায় ঢাকার ডেমরাতে একটি, সিরাজগঞ্জ শহরের দিয়ারধানগড়া ও কাজিপুর মোড়ে ২টি, বগুড়া সেনানিবাস এলাকায় একটি ও তার নিজ গ্রাম কাজিপুরের সূবর্ণগাতিতে একটি মোট ৫টি বসতবাড়ি রয়েছে। এ ছাড়াও প্রায় কোটি টাকা মূল্যের ২৫/৩০ একর জাগয়া রয়েছে তার। পাশাপাশি সুদের ব্যবসার টাকা আদায়ের নামে সে এ পর্যন্ত প্রায় ২০ জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে অন্তত ১৫টি মামলা করেছেন। তার ক্ষমতার দাপটের কারণে এসব ব্যবসায়ী এখন সর্বস্বান্ত।

এসব বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে অন্তত ৮ জন ব্যবসায়ী যুগ্ম সচিব, আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়, যুগ্ম সচিব (প্রশাসন) জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়, জেলা প্রশাসক-সিরাজগঞ্জ, জেলা ও দায়রা জজ-সিরাজগঞ্জ এবং দুর্নীতি দমন কমিশনসহ প্রশাসনের বিভিন্ন দপ্তরে পত্র প্রেরণ করেছেন বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।  সুদের ব্যবসার অভিযোগ অস্বীকার করে আদালতের রেকর্ড কিপার ও সিরাজগঞ্জ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেসি সরকারি কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি আমিনুল ইসলাম জানান, সরকারি চাকরির পাশাপাশি আমার গার্মেন্টস ব্যবসা রয়েছে। সিরাজগঞ্জের বিভিন্ন ব্যবসায়ীর কাছে মূলত গার্মেন্টস পণ্য সরবরাহ করে থাকি। অনেকের সঙ্গে পার্টনারে ব্যবসা রয়েছে। লেনদেনগুলো মূলত ব্যবসা সংশ্লিষ্ট। সরকারি চাকরি করার কারণে ঝামেলা এড়াতে কোনো শো-রুম করা হয়নি। গ্রামে ও শহরে মিলে আমার ২টি বাড়ি রয়েছে। অন্যগুলো আত্মীয়-স্বজনের। কাউকে হয়রানি করার জন্য মামলা করিনি। পাওনা টাকা উত্তোলনের জন্য মামলা করেছি।

আমিনুলের সহযোগী সাব জজ (চৌহালী) আদালতের জারিকারক এবং বর্তমানে প্রেষণে যুগ্ম জেলা ও দায়রা জজ (২য়) আদালতের নিম্নমান সহকারী হিসেবে কর্মরত শামিমা আরজু রুনু জানান, আমি আমিনুল ভাইয়ের সঙ্গে পার্টনারে ব্যবসা করি। জমি ক্রয়ের জন্য নিজে ৬ লাখ ও আমিনুল ভাই ১২ লাখ মিলে ব্যবসায়ী আরিফুল ইসলাম রাজুকে ১৮ লাখ টাকা দিয়েছি। এ সংক্রান্ত বিষয়ে ৩শ’ টাকার স্ট্যাম্পে অঙ্গীকারনামা আমাদের কাছে সংগৃহীত রয়েছে। যা দিয়ে মামলা করেছি।  
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর