× প্রচ্ছদ অনলাইনপ্রথম পাতাশেষের পাতাখেলাবিনোদনএক্সক্লুসিভভারতবিশ্বজমিনবাংলারজমিনদেশ বিদেশশিক্ষাঙ্গনরকমারিমত-মতান্তরবই থেকে নেয়া তথ্য প্রযুক্তি শরীর ও মন চলতে ফিরতে কলকাতা কথকতাসেরা চিঠিইতিহাস থেকেঅর্থনীতি
ঢাকা, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, শুক্রবার , ৬ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ, ১০ শওয়াল ১৪৪৫ হিঃ

শ্রীনগরের নিখোঁজ সোহাগের কঙ্কাল তিন বছর পর খুলনা থেকে উদ্ধার

বাংলারজমিন

শ্রীনগর (মুন্সীগঞ্জ) প্রতিনিধি
২৫ মার্চ ২০১৯, সোমবার

মোটরসাইকেল বিক্রির টাকার লোভে পরিকল্পিতভাবে শ্রীনগর উপজেলার কামারগাঁও থেকে খুলনা নিয়ে মো. সোহাগ (২০)কে খুন করে তার বন্ধুরা। দীর্ঘ সাড়ে তিন বছর পর লোমহর্ষক এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করে সোহাগের কঙ্কাল উদ্ধার করেছে পিবিআই (পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন)। শনিবার সন্ধ্যায় মুন্সীগঞ্জ পিবিআই-এর অস্থায়ী কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে এসব তথ্য জানানো হয়।

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সোহাগ বন্ধুদের ডাকে সারা দিয়ে ২০১৫ সালের ৯ই সেপ্টেম্বর বাসা থেকে তার ব্যবহৃত মোটরসাইকেল (ঢাকা  মেট্রো ল ২১-২২৬২) নিয়ে বের হয়ে নিখোজ হয়। নিখোঁজের প্রায় তিন সপ্তাহ পর ২৮শে সেপ্টেম্বর সোহাগের বাবা শ্রীনগর থানায় সাধারণ ডায়েরি করেণ। শ্রীনগর থানার ডায়েরি নম্বর ১২৫৪। পরে তিনি থানায় মামলা করেন। স্থানীয় এক ইউপি সদস্যের প্রভাবে মামলাটি থমকে গেলে ২ মাস পর তিনি মুন্সীগঞ্জ আদালতে মামলা করেন।
শ্রীনগর থানা পুলিশ ২০১৬ সালের এপ্রিল মাসে মামলার আসামি অপুকে গ্রেপ্তার করে। পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে অপু খুলনা নিয়ে সোহাগকে হত্যার কথা স্বীকার করে। পুলিশ ওই সময় তাকে নিয়ে একাধিকবার খুলনায় অভিযান চালালেও সোহাগের মরদেহ উদ্ধারে ব্যর্থ হয়। মামলার এক বছর আট মাস পর শ্রীনগর থানা পুলিশ তদন্ত করে অপু, পারভেজ ও সিয়ামের বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করে। কিন্তু সোহাগের কোনো সন্ধান না পাওয়ায় তদন্তের জন্য মামলাটি পিবিআই মুন্সীগঞ্জকে হস্তান্তর করা হয়। ২০১৮ সালের ৩০শে জুন মামলার তদন্ত শুরু করেন পিবিআই-এর এসআই মো. হজরত আলী।

তিনি নয় মাসের মধ্যে তদন্ত করে হত্যাকাণ্ডে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত আসামি মো. সিয়াম (২৭)কে ঢাকা জেলার দোহার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে সোহাগকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে।  সংবাদ সম্মেলনে পিবিআই অতিরিক্ত পুলিশ সুপার খন্দকার ফজলে রাব্বি জানান, সোহাগের সঙ্গে আগে থেকেই সিয়ামের বন্ধুত্ব ছিল। এছাড়া অপর আসামি পারভেজের বোনের শ্বশুর বাড়ি সোহাগের বাড়ি কামারগাঁওয়ের পার্শ্ববর্তী বালাশুর গ্রামে। সিয়াম ও সোহাগের সঙ্গে পারভেজের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সোহাগের নিজস্ব মোটরসাইকেল দিয়ে তারা ঘুরে বেড়াতো।

সোহাগ তার মোটরসাইকেলটি বিক্রি করবে জানালে পারভেজ জানায় তার মামা মোটরসাইকেলটি কিনতে আগ্রহী। সোহাগ ও সিয়াম মাওয়া ঘাটের ওপারে মোটরসাইকেল নিয়ে গেলে পারভেজের মামার দেখানো এক লোক ১ লাখ ৪০ হাজার টাকা দিয়ে মোটরসাইকেলটি কিনে নেয়। এরপর পারভেজ সিয়াম ও সোহাগকে নিয়ে খুলনা বেড়াতে যায়। খুলনা পৌঁছে একটি আবাসিক হোটেলে রাতযাপন করে। পরদিন তারা পারভেজের গ্রামের বাড়ি ডুমুরিয়া থানার টোলনা গ্রামে যায়। সেখানে তাদের সঙ্গে যোগ দেয় নয়ন, মুরাদ ও আবিদ।

২০১৫ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বর রাতে মোটরসাইকেল বিক্রির টাকা ছিনিয়ে নিয়ে শ্বাসরোধ করে ও ছুরি দিয়ে বুকে ও পেটে আঘাত করে তাকে হত্যা করে। হত্যার পর লাশ পার্শ্ববর্তী ডোবায় কচুরিপানা দিয়ে ঢেকে রাখে।
হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত নয়ন খুলনা এলাকার শীর্ষ তালিকাভুক্ত সন্ত্রাসী। সে বাকিতেও খুন করে বলে জানান এই কর্মকর্তা। তার বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে।

সোহাগের বাবা শহিদুল ইসলাম ফকির শার্টের একটি অংশ দেখে তার ছেলে সোহাগকে চিহ্নিত করে। সোহাগের মরদেহের অবশিষ্টাংশ খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য রয়েছে।
অবশ্যই দিতে হবে *
অবশ্যই দিতে হবে *
অন্যান্য খবর