আন্তর্জাতিক ক্রিকেট সংস্থার (আইসিসি) বিশেষ সম্মাননা ‘ক্যাপ’ পেয়েছেন বাংলাদেশ নারী দলের ক্রিকেটার রুমানা আহমেদ। ক্যাপের সামনে লেখা ‘আইসিসি টি-২০ টিম অব দি ইয়ার।’ আইসিসির বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি দলে জায়গা পেয়েছেন অনেক আগেই। গতকাল পাওয়া এই ক্যাপ মূলত রুমানার জন্য স্বীকৃতিস্বরূপ। এমন সম্মান পেয়ে ভীষণ খুশি জাতীয় দলের এই নারী ক্রিকেটার। তবে সেই সঙ্গে এই প্রাপ্তি ধরে রাখা নিয়েও চিন্তিত এই দেশের তারকা নারী ক্রিকেটার। তিনি বলেন, ‘খুবই ভালো লাগছে এমন স্বীকৃতি পেয়ে। বলবো আমার জীবনের জন্য একটি সেরা দিন। তবে আমি মনে করি এই সম্মান পাওয়ার চেয়ে এখন ধরে রাখাই কঠিন।
কারণ আমাদের যতটা ম্যাচ হওয়ার কথা বা খেলার কথা অন্য দেশের তুলনাতে তা পারছি না। গেল দুটি বছর দারুণ কেটেছে, অনেক ম্যাচ ছিল অনেক সুযোগ ছিল নিজেদের প্রমাণ করার। কিন্তু এই বছর তেমন কোনো ম্যাচ নেই। আমার ধারণা যদি আমাদের খেলার সুযোগ বাড়ে শুধু আমিই নই, আরো অনেকেই নিজেকে প্রমাণ করে এমন অর্জন করতে পারবে। আমাদের নারী দলের সেই সক্ষমতা আছে। শুধু প্রয়োজন সুযোগ।’
২০১৮, বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটে দারুণ একটি স্মরণীয় হয়ে আছে। সে বছর জুনে ভারতকে হারিয়ে এশিয়া কাপ জিতেছিল বাংলাদেশ। এমন অর্জনে রুমানার অবদান ছিল অসাধারণ। শিরোপা এনে দেয়ার সেই টুর্নামেন্টে তিনি ৬ ম্যাচে নিয়েছেন ১০ উইকেট। ফাইনালে হন ম্যাচসেরাও। শুধু তাই নয় মেয়েদের ওয়ানডেতে বাংলাদেশের একমাত্র হ্যাটট্রিকের গৌরবটা তারই। গত বছর ২৪ টি-টোয়েন্টিতে ৩০ উইকেট আর ২২৯ রান করে বাংলাদেশের সেরা অলরাউন্ডার ছিলেন তিনি। এমন দারুণ পারফরম্যান্সের কারণেই এ অলরাউন্ডারকে তাই আইসিসির বর্ষসেরা টি-টোয়েন্টি দলে রাখতে কোনো দ্বিধা করেনি। রুমানা মনে করেন বাংলাদেশের নারী ক্রিকেটারদের জন্য তার এই প্রাপ্তি হবে অনুপ্রেরণাও। তিনি বলেন, ‘দেখেন আমাদের বাংলাদেশে নারী দলে অনেক প্রতিভাবান ক্রিকেটার আছে। যারা সুযোগ পেলে নিজেদের মেলে ধরতে পারে দারুণ ভাবে। অবশ্যই আমার এই প্রাপ্তি অন্যদের জন্য অন্যরকম অনুপ্রেরণা হবে। আমার জন্যও এটি সামনে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি হিসেবে কাজ করবে।’
তবে গেল বছরের তুলনায় ২০১৯ সালটা বাংলাদেশ নারী দলের জন্য একটু হতাশার। বিশেষ করে এবার তেমন কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ তাদের জন্য নেই। এ নিয়ে রুমানা বলেন, ‘২০১৯ সালের বেশ কিছু সময় চলে গেছে কিন্তু এই বছরে আন্তর্জাতিক ম্যাচ আমরা তেমন খেলিনি। আশা করবো, এই বছরে যেন বেশ কয়েকটা আন্তর্জাতিক ম্যাচ ও সিরিজ খেলতে পারি। জাতীয় দলকে নিয়ে আমার বেশ কিছু স্বপ্ন আছে। সে স্বপ্নগুলো পূরণ করার জন্য আমাদের নিয়মিত আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলতে হবে।’ রুমানা বিশ্বাস করেন যদি তাদের ম্যাচের সংখ্যা ও সুযোগ সুবিধা বাড়ে তাহলে দেশকে তারা আরো সাফল্য উপহার দিতে পারবেন। যেমনটা দিয়েছেন এশিয়ার শ্রেষ্ঠত্বের ট্রফি এনে। বলার অপেক্ষা রাখে না তাদের হাত ধরেই এসেছে দেশের জন্য কোনো টুর্নামেন্টের প্রথম শিরোপা।