প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা বাতিল হচ্ছে এমন আলোচনার মধ্যে নতুন তথ্য দিলেন প্রাথমিক ও গণশিক্ষা সচিব আকরাম-আল-হোসেন। চলতি বছরই পরীক্ষা বাতিল হচ্ছে এটা এখনই বলা যাবে না। কারণ এটি নিয়ে সরকারের বিভিন্ন দপ্তর কাজ করছে। গতকাল সচিবালয়ে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা ২০১৮ এর বৃত্তির ফল প্রকাশ অনুষ্ঠানে তিনি এসব তথ্য দেন। অনুষ্ঠানে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন উপস্থিত ছিলেন।
গণশিক্ষা সচিব বলেন, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কীভাবে মূল্যায়ন করা হবে, তা চূড়ান্ত হলেই এই তিন শ্রেণির পরীক্ষা তুলে দেয়ার ঘোষণা দেবে সরকার। প্রধানমন্ত্রী তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা রাখব না, এমন নির্দেশনা মৌখিকভাবে বলেছেন। তবে মাঠপর্যায়ে এখনও কোনো নির্দেশনা দেয়া হয়নি।
সচিব জানান, পরীক্ষা তুলে দেয়ার পর প্রথম থেকে তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থীদের কোন পদ্ধতিতে মূল্যায়ন করা হবে তা ঠিক করতে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ডকে (এনসিটিবি) সুপারিশপত্র তৈরি করতে বলা হয়েছে। এনসিটিবির সুপারিশপত্রের আলোকে শিক্ষক, কর্মকর্তা, শিক্ষাবিদ ও অভিভাবকদের একটি কর্মশালা করে অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতি ঠিক করা হবে। অ্যাসেসমেন্ট পদ্ধতি নির্ধারণ করা গেলে কবে থেকে পরীক্ষা হবে না সে বিষয়ে মাঠ পর্যায়ে যারা আছেন তাদের নির্দেশনা দেয়া হবে। তৃতীয় শ্রেণির পরীক্ষা তুলে দেয়ার ঘোষণা কবে নাগাদ দেয়া হতে পারে সে বিষয়ে কোনো ধারণা না দিয়ে সচিব আকরাম বলেন, আমরা কাজ করছি, এনসিটিবিও কাজ শুরু করেছে। অ্যাসেসমেন্ট টুলস ফাইনাল করার পরে বলব, সময় মতো জানানো হবে। শিক্ষার্থীদের এক শ্রেণি থেকে আরেক শ্রেণিতে উন্নীত করা হবে কি হবে না তা মূল্যায়ন পদ্ধতির আলোকে নির্ধারণ করা হবে বলেও জানান গণশিক্ষা সচিব। তিনি বলেন, তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত পরীক্ষা তুলে দিলেও চতুর্থ শ্রেণির চূড়ান্ত পরীক্ষা এবং প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা চলবে।
এদিকে ২০১৮ সালে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষায় ফলাফলের ভিত্তিতে এ বছর মোট ৮২ হাজর ৫০০জন শিক্ষার্থীকে বৃত্তি দেয়া হবে। এর মধ্যে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পাবে ৩৩ হাজার আর সাধারণ কোটায় বৃত্তি পাবে ৪৯ হাজর ৫০০ জন শিক্ষার্থী। বৃত্তির তথ্য প্রকাশ করে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী মো. জাকির হোসেন বলেন, ট্যালেন্টপুলে বৃত্তিপ্রাপ্তদের মাসে ৩০০ টাকা এবং সাধারণ বৃত্তিপ্রাপ্তদের মাসে ২২৫ টাকা করে দেয়া হবে। ৬ষ্ঠ থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত তিন বছর বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের বৃত্তির টাকা দেয়া হবে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, এবার মোট ৭ হাজার ৯৮৮টি ইউনিয়ন ও পৌরসভার প্রতিটিতে ৬ জন করে (৩ জন ছাত্র ও ৩ জন ছাত্রী) মোট ৪৭ হাজার ৯২৮টি সাধারণ বৃত্তি দেয়া হবে। আর অবশিষ্ট ১৫৭২টি বৃত্তি থেকে প্রতি উপজেলায় আরো ৩টি করে (১জন ছাত্র, ১জন ছাত্রী ও উপজেলার মেধার ভিত্তিতে ১জন) মোট ৫১০টি উপজেলায় ১৫৩০টি সাধারণ বৃত্তি দেয়া হবে। প্রতিমন্ত্রী বলেন, এখন সকল শিক্ষার্থী বৃত্তির প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে। আগে কিছু মেধাবী শিক্ষার্থীর বৃত্তি পরীক্ষায় অংশ নেয়ার সুযোগ পেত। ফলে অনেকেই বঞ্চিত হতো। এখন সুযোগ বেড়েছে। তিনি জানান, ঝরে পড়া বন্ধ করা, শ্রেণিকক্ষে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি বাড়ানো ও মেধা বিকাশের লক্ষ্যে প্রাথমিক সমাপনী পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে বৃত্তি দেয়া হয়। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, বৃত্তিপ্রাপ্ত শিক্ষার্থীদের তালিকা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট িি.িফঢ়ব.মড়া.নফ এই ঠিকানায় পাওয়া যাবে।