খাদিজা আর ফরহাদ একে অপরকে ভালোবাসে। পরে দুই পরিবারের ইচ্ছায় ৪ বছর আগে তাদের বিয়ে হয়। সুখের সংসারে খাদিজার কোলজুড়ে আসে ফুটফুটে এক পুত্র সন্তান। তার নাম রাইয়ান। বয়স দেড় বছর। কিন্তু খাদিজার কপালে সুখ স্থায়ী হয়নি। যদিও বিয়ের পর থেকেই একটু একটু করে বদলে যেতে থাকে ফরহাদ। প্রায়ই নানা বিষয়ে তাদের মধ্যে বিবাদ লেগেই থাকতো।
নিজের পছন্দে বিয়ে করায় স্বামীর সঙ্গে বিবাদের কথা প্রকাশ করতো না খাদিজা। কিন্তু একটা সময় স্বামীর নির্যাতনে ভালোবাসা বিষাদে পরিনত হয়। গত ১২ই মার্চ ফরহাদ স্ত্রী খাদিজাকে বেধড়ক পিটিয়ে গুরুতর আহত অবস্থায় বাড়িতে ফেলে রাখে। খবর পেয়ে তার মা নূর জাহান বেগম খাদিজাকে শ্বশুর বাড়ি থেকে মুমুর্ষূ অবস্থায় উদ্ধার করে প্রথমে নারায়ণগঞ্জ দেড়শ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে এবং পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রোববার সকালে খাদিজা আক্তার মারা যায়। নিহত খাদিজা নগরের পাইকপাড়া এলাকার মৃত অবদুর রশিদের মেয়ে। এ ঘটনায় নিহত খাদিজার বড় বোনের স্বামী আরিফ হোসেন সোমবার বাদি হয়ে ফতুল্লা মডেল থানায় স্বামী ফরহদাসহ ৪ জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত পুলিশ কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি। মামলার অন্য আসামিরা হলো ফরহাদের বাবা ইয়ার হোসেন, মা বিউটি বেগম ও বড় ভাই রাব্বি মিয়া। নিহতের মা নূরজাহান বেগম বলেন, গত ১২ই মার্চ মেয়েকে মারধরের খবর পেয়ে আমি তার শ্বশুরবাড়িতে তাকে দেখতে যাই। কিন্তু পরিবারের সদস্যরা আমাকে বাধা দেয়। জোর করে ঘরে প্রবেশ করে দেখি আমার মেয়েকে মেরে খাটের নিচে রেখে দেয়া হয়েছে। ফতুল্লা মডেল থানার ওসি শাহ মোহাম্মদ মঞ্জুর কাদের বলেন, এ ব্যাপারে নিহতের ভগ্নিপতি আরিফ হোসেন বাদি হয়ে ৪ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। এদিকে নারায়ণগঞ্জে অজ্ঞাত পরিচয় এক যুবকের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। গতকাল সোমবার ভোরে নগরীর আমলাপাড়া কেবি সাহা লেন রোড থেকে যুবকের লাশটি উদ্ধার করা হয়। যুবকের বুক ও পেটে ছুরিকাঘাতের চিহ্ন রয়েছে। খবরপেয়ে পুলিশ লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ দেড়শ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। ঘটনাস্থলের পাশের একটি ময়লার ভাগাড় থেকে রক্তমাখা একটি ছোরা উদ্ধার করা হয়েছে।