মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে কণা পরিমাণও ছাড় দেয়া হবে না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)’র সভাপতি কমরেড মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম। গতকাল ২৫শে মার্চ গণহত্যা দিবসে সিপিবি’র উদ্যোগে অনুষ্ঠিত ‘আলোর মিছিল’-পূর্ব সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তিনি একথা বলেন। সন্ধ্যা ৬টায় পুরানা পল্টনস্থ মুক্তিভবন থেকে শুরু হওয়া মিছিলটি সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের শিখা চিরন্তন-এ গিয়ে শেষ হয়।
মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে বাংলাদেশের মানুষের মুক্তি সংগ্রামকে ধ্বংস করতে পাকিস্তানি বর্বর সেনাবাহিনী অতর্কিত হামলা করে। ছাত্র-পুলিশ-বস্তিবাসীসহ অসংখ্য নিরীহ ঘুমন্ত মানুষকে হত্যা করে তারা। তারা মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসে ত্রিশ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে, দুই লাখ নারীকে নিপীড়ন করেছে, কিন্তু বিজয় ঠেকিয়ে রাখতে পারেনি। আজ ৩০ লাখ মানুষের রক্ত ও দুই লাখ নারীর ত্যাগের বিনিময়ে পাওয়া এই বাংলাদেশ, শাসক গোষ্ঠীর লুটপাট আর ভ্রান্তনীতির কারণে জন্মকালীন চেতনা থেকে অনেক দূরে। গণতন্ত্র-ধর্মনিরপেক্ষতা- জাতীয়তাবাদ-সমাজতন্ত্রের অঙ্গীকার থেকে দূরে সরে গেছে শাসকগোষ্ঠী।
তিনি বলেন, আজ গণতন্ত্র হরণ করা হয়েছে, সমাজতন্ত্র নির্বাসিত। অন্যদিকে রাষ্ট্রধর্ম সংবিধানে জেঁকে বসেছে। রাষ্ট্রীয় পর্যায় থেকে সাম্প্রদায়িক গোষ্ঠীর সঙ্গে যোগসাজশে শিক্ষাব্যবস্থা ও পাঠ্যসূচি সাম্প্রদায়িকীকরণ করা হচ্ছে। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার প্রশ্নে কণা পরিমাণ ছাড় দেয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি দেশের বাম-প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক শক্তিকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে, দুর্নীতি ও লুটপাটের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে ’৭১-এর চেতনায় মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার জন্য লড়াই করার আহ্বান জানান।
সিপিবি সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম বলেন, শ্রমিক-কৃষক ও মেহনতি মানুষের অধিকার বাস্তবায়িত না হলে মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হবে না। যারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা জলাঞ্জলি দিচ্ছে তাদের ’৭২-এর সংবিধানের মূল চেতনায় ফিরে আসারও আহ্বান জানান তিনি।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন সিপিবি প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুল্লাহ ক্বাফী রতন, সিপিবি’র উপদেষ্টা মনজুরুল আহসান খান, সহকারী সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ জহির চন্দন, কোষাধ্যক্ষ মাহবুব আলম, কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য শামছুজ্জামান সেলিম প্রমুখ।